ডাগ আউট থেকে তালি দিতে দিতে এসে রাচিন রবীন্দ্রকে জড়িয়ে ধরলেন কেন উইলিয়ামসন! ফিট থাকলে তারই তো রাচিনের জায়গায় নাম্বার থ্রিতে ব্যাটিং করার কথা। উইলিয়ামসন ছিলেন না, কিন্তু রাচিন একটুও বুঝতে দেননি তার না থাকা।
ইংলিশ বোলারদের মামুলি বানিয়ে বিশ্বকাপের অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে কিউইদের জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন তরুণ অলরাউন্ডার রাচিন। সঙ্গে ভারতে নিয়মিত আইপিএল খেলা অভিজ্ঞ ডেভন কনওয়ের ক্যারিয়ার সেরা সেঞ্চুরি। দুজনের ব্যাটে আসে বিশ্বকাপের অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরি। তাতে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড কুপোকাত।
রাচিন-কনওয়ের ব্যাটিং প্রদর্শনীতে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে ৯ উইকেটে জয়ের দেখা পেলো নিউ জিল্যান্ড। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড-নিউ জিল্যান্ড। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৯ উইকেটে ২৮২ রান করে ইংল্যান্ড। তাড়া করতে নেমে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ৮২ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় নিউ জিল্যান্ড।
ওপেনিংয়ে নামা কনওয়ে অপরাজিত ছিলেন ১৫২ রানে। ২৩তম ওয়ানডে খেলতে নামা কনওয়ের এটি পঞ্চম সেঞ্চুরি। এর আগে সর্বোচ্চ ছিল ১৩৮। ৮৩ বলে সেঞ্চুরি করা কনওয়ে মাত্র ১২১ বলে দুর্দান্ত ইনিংসটি খেলেন। তার দেড়শ ছড়ানো ইনিংসটি সাজানো ছিল ১৯টি চার ও ৩টি ছয়ের মারে।
কনওয়েকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া রাচিন অপরাজিত ছিলেন ৯৬ বলে ১২৩ রানে। সেঞ্চুরির দেখা পান মাত্র ৮২ বলে। তার ইনিংসে চারের মার ছিল ১১টি আর ছয়ের মার ৫টি! দুজনের জুটি থেকে আসে ২১১ বলে ২৭৩ রানে। অথচ রান তাড়া করতে নেমে শূন্য রানে ফেরেন ওপেনার উইল ইয়ং। এরপর শুরু হয় কনওয়ে-রাচিনের কাব্য গাঁথা। ইংলিশদের হয়ে ১টি উইকেট নেন স্যাম কারান।
এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে ছক্কায় ইনিংস শুরু করে বড় রানের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ইংলিশ ব্যাটার জনি বেয়ারস্টো। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কিউই বোলাররা লাগাম টেনে ধরে। ৪০ রানে ডেবিড মালানকে ফিরিয়ে উইকেটের সূচনা করেন ম্যাট হ্যানরি। ১৪ রান আসে মালানের ব্যাট থেকে।
তিনে নেমে এক পাশ আগলে রেখেছিলেন জো রুট। সর্বোচ্চ ৭৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে। ৫৭ বলে ফিফটির দেখা পান রুট। অন্য পাশে নিয়মিত বিরতিতে পড়ছিল উইকেট। শেষ জুটিতে আদিল রশিদ-মার্ক উড ২৬ বলে ৩০ রান যোগ না করলে এই রানও হতো না ইংলিশদের। রশিদ ১৫ ও উড ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন। মাঝে অধিনায়ক জস বাটলার ৪৩ রান করেন। হ্যারি ব্রুকের ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান। আর কেউ বিশের ঘর পেরোতে পারেননি।
কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন হ্যানরি। ২ উইকেট করে নেন মিচেল স্যান্টনার ও গ্ল্যান ফিলিপস। ১ উইকেটের পাশাপাশি সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ম্যাচ সেরা হন রাচিন।
ঊনিশের বিশ্বকাপ ফাইনালে সুপার ওভারেও টাই হওয়ার পর বাউন্ডারি সংখ্যায় পিছিয়ে থেকে হেরে যায় নিউ জিল্যান্ড। সেই শেষ থেকে এবার বিশ্বকাপে কিউইদের শুরুটা হয়েছে স্বপ্নের মতো। ইংল্যান্ডে শেষটা সুন্দর হয়নি, ভারতে সুন্দর হবেতো? উদ্বোধনী ম্যাচে দারুণ কাজটাই করেছে নিউ জিল্যান্ড এবার অপেক্ষা ফাইনালের!