মোড়টি দিয়ে যে পরিমান যানবাহন চলে, সেই তোলনায় ততটা প্রশস্ত হয়নি।
অপ্রশস্ত মোড়ে যানজটের পাশাপাশি দুর্ঘটনা বেড়েছে। সাথে বেড়েছে প্রাণহানীর সংখ্যা।
শিল্প অধ্যুষিত নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের ডাকবাংলো মোড়টি ক্রমশই ভয়ঙ্কর মৃত্যুকুপে রূপ নিচ্ছে। অথচ, মোড়টি প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ৭ মাস। কিন্তু কবে নাগাদ বাস্তবায়ন হবে; সেই প্রশ্নের উত্তর নেই কারো কাছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমতিও পায়নি সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
বছরের পর বছর সামাজিক সংগঠন ‘আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী’ থেকে উঠে আসছিল মোড়টি প্রশস্ত করণের দাবি। এরই মধ্যে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে একটি সড়ক দূর্ঘটনায় সেখানে বাবা-মেয়ে মর্মান্তিক ভাবে মারা যায়। এ ঘটনার পর ডাকবাংলো ও পুলিশ ফাঁড়ির দেয়াল ভেঙ্গে সড়ক প্রশস্ত করার দাবি আরও জোড়ালো হয়। গত ১০ জুন ডাকবাংলো ও পুলিশ ফাঁড়ির দেওয়াল ভেঙ্গে রাস্তার জন্য জমি ছেড়ে দেয় নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ। এরপর দীর্ঘ ৭ মাস চলে গেছে। কিন্তু এখনও রাস্তাটি প্রশস্ত করা হয়নি।
উল্টো ডাকবাংলা মোড়ে ট্রাকচাপায় নিহত হয়েছেন রাফিন হোসেন নামে এক কাপড় ব্যবসায়ী।
নিউ চাষাঢ়া আদর্শ পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ আল নোমান বলেন, প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে মোড়টিতে। গত ৩ বছরে অন্তত ৭ জনের মৃত্যুর তথ্য আমি জানি। এখানে রাস্তা প্রশস্ত করার পাশাপাশি গাড়ির গতিরোধক ব্যবহার করলে হয়তো দুঘর্টনা কমে আসতো।
চাষাঢ়ায় কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) ইমরান হোসেন লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, সড়কটি দিয়ে এক সাথে দু‘টি গাড়ি চলাচল করতে পারে। কোন কারণে একটি গাড়ি নষ্ট হলে পুরো চাষাঢ়ার মোড়ে যানজট সৃষ্টি হয়ে যায়। প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনাও।
সরু এই মোড়ের পাশেই নারায়ণগঞ্জের বিদ্যাপিঠ সরকারি তোলারাম কলেজ ও সরকারি মহিলা কলেজ অবস্থিত। সাথেই রয়েছে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। স্কুল ও কলেজ দু‘টির শিক্ষার্থীরা বেশ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মোড়টি দিয়ে।
সরকারি তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী শাওন আহম্মেদ বলেন, রাস্তার জন্য জমি ছাড়লে হবে না। সাথে ব্যবহারের উপযোগী করতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) এম.এম. মাহমুদুর রহমান লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা মিটিংসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ দাবি, জেলা প্রশাসকের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মোড় প্রশস্ত করার জন্য ডাক-বাংলোর দেওয়াল ভেঙ্গে দিয়েছি। কিন্তু সড়ক ও জনপথ বিভাগ রাস্তাটি প্রশস্ত করণের উদ্যোগ এখনও নিচ্ছে না।
জেলা সওজ’র উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, সড়কটি আমাদের অধিনে নয়, ঢাকা রোড ডিভিশনের আওতাধীনে রয়েছে।
ঢাকা রোড ডিভিশনের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. এমদাদুল হক লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কটি ৬ লেন করার পরিকল্পনা চলমান রয়েছে। তার আগে ডাক বাংলোর মোড় প্রশস্ত করার আবেদন করেছি। এখন এটা আটকে আছে নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে গিয়ে।
নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, মোড়ের বিষয়টি নিয়ে আপাতত আলাদা করে তেমন কিছুই করার পরিকল্পনা নেই। তবে, চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কটি ৬ লেন করার প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। এরপর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় হয়ে একনেকে যাবে। এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ। তিনি অফিসে গিয়ে যোগাযোগের অনুরোধ করেছেন।
সামাজিক সংগঠন আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সভাপতি হাজী নুর উদ্দিন লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, জেলা পরিষদ জমি ছেড়েছে কিন্তু এখনও ব্যবহার উপযোগী হয়ে উঠেনি। যার ফলে যানজটের পাশাপাশি দুর্ঘটনাও ঘটছে। মানুষ মারা যাচ্ছে। তাই আমরা খুব দ্রুতই সড়কটি প্রশস্ত করণের দাবিতে আন্দোলনে নামবো।