সিদ্ধিরগঞ্জের টাইগার ফারুকের সেই দুই সহযোগীকে ফের গাঁজা ও বিদেশী মদসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১’র সিপিসি- ২ একটি আভিযানিক দল। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- রাজবাড়ি জেলার রাজবাড়ি সদর থানার দক্ষিণ ভবানীপুর গ্রামের মো. একরাম মিয়ার ছেলে মো. রুবেল (৩০) ও চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর থানার লুদুয়া গ্রামের মোঃ আমিনুল ইসলামের ছেলে অয়ন (১৯)। এরা সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পাগলাবাড়ী এলাকায় ভাড়া থাকে।
এরআগেও চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল রাতে অয়নকে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় থেকে ৯৬ বোতল ফেনসিডিল ও ১৮কেজি গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩। এসময় তাদের আরো কয়েক সহযোগীদেরও গ্রেপ্তার করে র্যাব।
অপরদিকে, চলতি বছরের ১০ জুলাই রুবেলকে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি টিসি রোড নুরু মেম্বারের পুল সংলগ্ন হাসানের চায়ের দোকানের সামনে থেকে ৯২০ গ্রাম গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করে র্যাব-১০। এসময় তাদের আরো কয়েক সহযোগীদেরও গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিপিসি-২ এর একটি দল কুমিল্লা জেলার কোতয়ালি থানার আমতলী বিশ্বরোড এলাকায় গত রবিবার (২১ নভেম্বর) সকালে মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ৬ কেজি গাঁজা ও ৩ বোতল বিদেশী মদসহ রবেল ও অয়নকে গ্রেপ্তার করে। অভিযানে মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি মোটর সাইকেলটিও জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃ মাদক ব্যবসায়ীরা একটি চক্রের মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা, গাঁজা ও বিদেশী মদসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় ও সরবরাহ করে আসছে।
এদিকে টাইগার ফারুকের দুই সহযোগী গাঁজা ও বিদেশী মদসহ গ্রেপ্তারের সংবাদে এলাকায় বেশ সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসীর মতে টাইগার ফারুক ও তার ভাই জসিমের এ বাহিনী দীর্ঘদিন নিরব থাকলেও সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রভাবশালীদের শেল্টারে আবারও প্রকাশ্যে বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের চিহ্নিত মাদক বাহিনীর সেল্টারদাতা, চাদাঁবাজী ও ডাকাতি মামলার আসামী টাইগার ফারুক ওরফে চিকনা ফারুক ও চিহ্নিত মাদক সম্রাট, পেশাধার ছিনতাইকারী ও একাধিক মামলার আসামি জসিম বাহিনীর সদস্যরা আবারোও মাদক ব্যবসায় ব্যাপরোয়া হয়ে উঠে।
শুরু করেছে ফেন্সি, ইয়াবা ও গাঁজা সহ অন্যান্য মাদক ব্যাবসা। নামে বেনামে তাদের সিন্ডিকেটে আরো অনেকেই রয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারীতে তদন্ত করলেই বেড়িয়ে আসবে থলের বিড়াল।
টাইগার ফারুক ও জসিম সাবেক আদমজী জুট মিলের শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি আবু সাইদের ছেলে। তারা ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সংগঠন যুবলীগের ব্যানারকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে এবং গুটি কয়েক পেতীদের সঙ্গে সখ্যতা করে মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রনের জন্য একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট গড়ে তুলে।
এই সিন্ডিকেট সিদ্ধিরগঞ্জসহ এর আশপাশের এলাকায় পাইকারী ও খুচরা মাদক ব্যবসা, ছিনতাই ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিপুল পরিমান অর্থ সম্পদের মালিক বনে গেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে এমন কার্যক্রম চলে আসলেও বাইরে থেকে বুঝার উপায় ছিল না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই চক্রের সদস্যরা পৃথক পৃথক সময়ে একাধিকবার বিপুল পরিমান মাদক দ্রব্যসহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর মাদক ব্যবসার বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়।