নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর মালিকানাধীন রূপসী এলাকায় অবস্থিত গাজী টায়ার্স কারখানার ধ্বংসস্তূপ থেকে পাওয়া যাচ্ছে মানুষের পোড়া হাড়গোড়, কলিজা, মাথার খুলিসহ বিভিন্ন আলামত। ঘটনার ৮দিন পর রোববার (১ সেপ্টেম্বর) নিখোঁজের স্বজনেরা কারখানা তল্লাশি করে এসব আলামত উদ্ধার করেছেন। পরে তা ফরেনসিকের জন্য সংশ্লিষ্ট স্থানে পাঠিয়েছে পুলিশ। এদিকে পুরো প্রতিষ্ঠান তল্লাশি চালানোর দাবি উঠেছে নিখোঁজদের পরিবারের পক্ষ থেকে। রোববার নিখোঁজদের তালিকা প্রস্তুত ও ঘটনার সূত্রপাত উদঘাটনে আয়োজিত গণশুনানিকালে এসব মালামাল উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।
এদিকে ১২৯ জন নিখোঁজের তালিকা লিপিবদ্ধ করেছেন তদন্ত কমিটি।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান মাহমুদ রাসেল জানান, গত ২৫ আগস্ট গাজী টায়ার্স কারখানায় আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। টানা ৩২ ঘণ্টার আগুনে সেখানে কিছু ইঞ্জিন আর ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা ছাড়া কিছুই ছিল না। আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়া ভবন ও লোহার অবকাঠামোও যে কোনো সময় ধসে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় বুয়েট বিশেষজ্ঞের মতামতে গত ৩০ আগস্ট থেকে উদ্ধার অভিযান বন্ধ রাখা হয়। আগুনের সময়ে ভেতরে বেশ কিছু মানুষ আটকে পড়ার অভিযোগ তুলেন নিখোঁজদের স্বজনেরা। তাই রবিবার পহেলা সেপ্টেম্বর কারখানা অভ্যন্তরে নিখোঁজদের সঠিক তালিকা তৈরি করতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি গণশুনানী আয়োজন করে।
এদিন মোট ১২৯ জন নিখোঁজের তথ্য দিয়ে নাম লিপিবদ্ধ করেন তাদের স্বজনেরা। অপরদিকে শুনানি চলাকালে কয়েকজন অতিরিক্ত ঝুঁকি নিয়ে কারখানার ভেতরে ঢুকে যায়। সেখান থেকে তারা মানুষের পোড়া অঙ্গপ্রত্যঙ্গ উদ্ধার করেন। সেগুলো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু মানুষের পোড়া অংশবিশেষ পাওয়া গেছে তাই নিখোঁজের ব্যাপারটি গুজব নয়। আমরা যে কোন পক্রিয়ায় আবারও উদ্ধার অভিযান শুরু করবো। আমরা চাই যেনো একটু আলামত নিয়ে হলেও পরিবার তাদের জানাজা দিতে পারেন অথবা সৎকার করতে পারেন।
প্রসঙ্গত: ২৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে গাজী টায়ার্সের কারখানায় আগুন লাগে। পরে পায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট ৩২ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নেভায়।