আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘অনেকে বলছেন, ডিসেম্বারের ১০ তারিখে খালেদা জিয়াকে দিয়ে বক্তৃতা দেওয়াবেন। কিন্তু আদালতে যে দরখাস্ত দিয়ে তাঁকে মুক্তি করে ছিল আইনজীবীরা। সেই আবেদনে পরিস্কার ভাবে লেখা ছিল, তাঁর শারীরিক অবস্থা এতই খারাপ যে, তিনি চলাফেরা করতে পারেন না। তাকে অবশ্যই মুক্তি দিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। খালেদা জিয়া যদি ১০ তারিখে সমাবেশে যায়, তাহলে সেই দিনের দরখাস্ত মিথ্যা প্রমানিত হবে।’
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) রাত ৯টায় নারায়ণগঞ্জের আদালতপাড়ায় ‘সেলিম ওসমান বার ভবন’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এ কথা বলেন তিনি।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘২০০৭ ও ২০০৮ সালে যখন তত্বাবধায়ক সরকার ছিল, তখন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুইটার অধিক দূর্ণীতির মামলা করা হয়। তদন্ত করা হয়, এফআইআর করা হয়, চার্জশীট করা হয়। প্রতিটি সময়ই খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতে শরণাপন্ন হন। তাঁরা শুধু নিম্ন আদালতে না, যেতে যেতে আপিল বিভাগে গিয়েছেন। সেখান থেকে বলে দিয়েছে, বিচারিক আদালত হয়ে মামলা শেষ করতে হবে। সেই মামলায় বিচারিক আদালতে বিচার হয়েছে, সাজাও হয়েছে। একটি মামলায় পুনরায় আপিল করেছেন, সেইটাও আবার হাইকোর্ট সাজা বাড়িয়েছে। আরেকটিতে বিচারিক আদালতে সাজা দিয়েছে। তারপরে তিনি জেলে গেছেন। জেলে থাকাকালীন অবস্থায় তাঁর পরিবার থেকে দরখাস্ত করা হয়েছে, সেখানে বলা হয়-‘তাঁর অত্যান্ত শরীর খারাপ। তাঁকে জেল থেকে ছাড়িয়ে চিকিৎসা করাতে হবে।’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর মহানুভবতায়, ৪০৮ ধারায় দণ্ডাদের্শ স্থগিত করেছে। ২ শর্তে তাকে মুক্তি দিয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, আমি শুনি এখনও বলে বিএনপির নেতাকর্মী তাঁকে মুক্তি দিতে হবে। কালকে খবরের কাগজে দেখিছি, উনাকে মুক্তি দিতে হবে। উনিতো মুক্ত হয়েই আছে। উনি উনার বাসায় আছে, প্রায় সময়ই চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে যান। তাহলে উনাকে মুক্তি দেওয়ার কি আছে। অনেকে বলছেন, ডিসেম্বারের ১০ তারিখে খালেদা জিয়াকে দিয়ে বক্তৃতা দেওয়ানো হবে। আমি বলবো, খালেদা জিয়া যদি ১০ তারিখে সমাবেশে যায়, তাহলে সেই দিনের দরখাস্ত মিথ্যা প্রমানিত হবে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আরও বলেন, আজকে যারা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি, তারা সোচ্চার। সেদিন বঙ্গবন্ধকে যে রকম ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছিল, হত্যার উদ্দেশ্য ছিল, বাংলাদেশকে হত্যা করা। আজকেও তাঁরা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের কারণে যে উন্নয়ন হয়েছে, সেই উন্নয়ন থামিয়ে দিতে চাইছে। সেই ষড়যন্ত্রের মধ্যে অনেক কিছুই থাকতে পারে।
নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড. রবিউল আমীন রনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ, পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিকেএমইএ‘র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো, শহীদ বাদল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা প্রমুখ।