বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। এত অসুস্থ যে আমি বর্ণনা করতে পারব না। তার চিকিৎসকরা সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তার আশু প্রয়োজন বিদেশে উন্নত সেন্টারে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা। ৪০১ ধারায় পরিষ্কার বলা আছে, শুধু সরকারই পারে তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে। এখানে আইন কোনো বাধা নয়। বাধা হচ্ছে সরকার যারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়। যারা জনগণকে প্রতারণা, ভুল বুঝিয়ে জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে।
মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আইনজীবীদের এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে এই সমাবেশ হয়। এতে শনিবারের মধ্যে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে না পাঠালে ‘সর্বাত্মক আন্দোলনে’ যাওয়ার ঘোষণা দেন বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেন, এই সরকারকে তিন দিন সময় দিলাম। এর মধ্যে যদি বিদেশে পাঠানো না হয় রোববার আইনজীবীরা বাংলাদেশব্যাপী অনশন ধর্মঘট করবেন। এরপরও যদি সরকার সোজা না হয় জানি না কী হবে। এমন সময় আসবে আন্দোলনে আন্দোলনে রাজপথে আগুন জ্বলবে, দাউ দাউ করে আগুন জ্বলবে। সেই দিনটা বেশি দূরে নয়। ঢাকা বারসহ দেশের বারগুলো থেকে সহস্রাধিক আইনজীবী এ সমাবেশে অংশ নেন। এ সময় খালেদা জিয়ার প্রতিকৃতি সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে তরুণ আইনজীবীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী ও অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, অ্যাডভোকেট মীর নাসির উদ্দিন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল মামুন, অ্যাডভোকেট আবদুল গাফফার মিয়া, অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ। এছাড়া সমাবেশে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলও উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আইনজীবীদের সমাবেশের মধ্য দিয়ে আমাদের মধ্যে একটা আশার সঞ্চার হলো। আজকে সারা দেশ থেকে আইনজীবীরা এসে আমাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে উজ্জীবিত করেছেন। বাংলাদেশের সব জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, গণতন্ত্রকামী শক্তিগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আমরা দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠাতে সক্ষম হব। এ ভয়াবহ দানবীয় সরকারের পতন ঘটাতে সক্ষম হব।
তিনি বলেন, দেশনেত্রীর চিকিৎসকরা বলেছেন, আমাদের যা কিছু সম্ভব করেছি। আমাদের কাছে সেই প্রযুক্তি নেই যা নিয়ে পরবর্তীতে আরও উন্নতভাবে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করাতে পারি। সরকার শুধু প্রতিহিংসায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বন্দি করে রেখেছে। তাকে তিলে তিলে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছে।
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, সরকারকে বলব, যদি খালেদা জিয়ার মৃত্যু দেখতে না চান, মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের নেত্রীকে মুক্তি দেওয়ার কোনো আইনগত বাধা নেই। আমি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী হিসাবে বলছি, যদি কোনো বাধা হয় তাহলে একমাত্র সরকারই বাধা।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান আইনমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা আপনার সঙ্গে দেখা করে বলেছিলাম আপনি শুধু আইনমন্ত্রী নন, একজন আইনজীবীর সন্তান। আপনার পিতা অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আইনজীবী ছিলেন। একথাটি আজকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলতে চাই, আপনার অমর পিতার মুখকে স্মরণ করে, তাকে ছোট না করে আপনি খুঁজে বের করুন আইনের পথ কোনটি। আইনের পথ খুঁজে বের করতে হবে। মানুষের জীবনের চেয়ে আইন বড় নয়।
ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী ও অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, অ্যাডভোকেট মীর নাসির উদ্দিন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল মামুন, অ্যাডভোকেট আবদুল গাফফার মিয়া, অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ। এছাড়া সমাবেশে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলও উপস্থিত ছিলেন।