বিরাট কোহলি গড়ে দিয়েছিলেন মঞ্চটা। ১০২০ দিনের আক্ষেপ ঘোচানো এক সেঞ্চুরি করে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ফুরিয়ে যাইনি এখনো। তাতে ভারত পেয়েছিল ২১২ রানের পুঁজি। এরপর ভুবনেশ্বর কুমারের দারুণ বোলিংয়ে আফগানদের ১০১ রানে হারিয়েছে দলটি। তাতে এশিয়া কাপের সুপার ফোর থেকে বিদায়টা একেবারে খালি হাতে হলো না তাদের।
এবারের এশিয়া কাপে টস গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমিকাই পালন করছে। শেষে ব্যাট করে যে এক হংকং ছাড়া হারেনি কোনো দল! তাই আগে ব্যাট করা মানেই নির্ঘাত হার, এমন একটা জুজু যে দলগুলোর মগজে ভালোভাবেই চলছে, তার প্রমাণ মেলে টস জয়ের পর সিদ্ধান্তগুলোর দিকে দেখলে। এক বাংলাদেশ ছাড়া বাকি সব দলই টস জিতে নিয়েছে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত, শেষ ভাগে মাঠে পড়া শিশিরের দারুণ ফায়দাই লোটা যায় তাতে।
সেই টসে আজ হারলেন ভারতের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। নামতে হলো ব্যাটিংয়ে। যদিও রাহুলই জানিয়েছিলেন, টস জিতলে তিনিও ব্যাটই করতে চাইতেন, নিজেদের যেন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলা যায় সে কারণে!
নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শর্মার অনুপস্থিতিতে কোহলিকে নিয়ে তাকে নামতে হয়েছিল ওপেনিংয়ে। ১২.৪ ওভারে ১১৯ রান তুলে কাজটা দুজনে নেহায়েত খারাপও করেননি। তবে ৬২ রান করে রাহুলের বিদায়ের এক বল পর যখন বিদায় নিলেন সূর্যকুমার যাদবও, তখন একটা ক্ষীণ শঙ্কা মাথাচাড়া না দিয়েই পারছিল না ভারত শিবিরে।
সে শঙ্কাটা ঝেটিয়ে বিদায় করেন কোহলি। ৩২ বলে ৫০ ছোঁয়া কোহলি পরের ৫০ ছুঁয়ে ফেলেন ২১ বলে। ১০২০ দিন পর স্বস্তির এক সেঞ্চুরির দেখা পান সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক। সেখানেই শেষ হয়নি তার কীর্তি, তিনি টিকে ছিলেন শেষতক ৬১ বলে ১২২ রান করে কোহলি উঠেছেন একেবারে ইনিংস শেষ করে। ভারত তাতে পেয়ে যায় ২১২ রানের বিশাল এক পুঁজি।
জবাব দিতে নেমেই ভুবনেশ্বর কুমারের তোপের মুখে পড়ে আফগানিস্তান। প্রথম ওভারেই হজরতউল্লাহ জাজাই আর রহমানউল্লাহ গুরবাজকে ফেরান তিনি, পরের ওভারে এসে শিকার বানালেন করিম জানাত ও নাজিবউল্লাহ জাদরানকে। ৯ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে আফগানদের হারটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল তিন ওভার শেষেই। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে আরশদীপ সিং ফেরান আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবীকে। নিজের কোটার শেষ ওভারে আক্রমণে এসে ভুবনেশ্বর তুলে নেন আজমাতউল্লাহ উমারজাইকে। ২১ রানে ৬ উইকেট খুইয়ে আফগানরা দুই অঙ্কে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কাতেই পড়ে যায়।
সেটা শেষমেশ হয়নি তিনে নামা ইব্রাহিম জাদরানের কল্যাণে। একপাশ আগলে রেখে তিনি তুলে নিয়েছেন ফিফটি, শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৬৪ রানে, তাকে সঙ্গ দিয়েছেন রশিদ খান আর মুজিব উর রহমান। তাতেই আফগানদের ইনিংস পা রাখে তিন অঙ্কে। শেষমেশ দলটি ৮ উইকেট খুইয়ে থামে ১১১ রানে। তাতে ১০১ রানের জয় তুলে নেয় ভারত, এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নেয় মাথা উঁচিয়েই।