রুদ্রবার্তা২৪.নেট: নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি ও নাসিক ১৩ ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বিরুদ্ধে এবার ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন দ্বিতীয় স্ত্রী দাবিদার সাঈদা আক্তার শিউলী। বুধবার (২৫ আগস্ট) নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে উপস্থিত হয়ে তিনি এই মামলা দায়ের করেন।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ভুয়া বিবাহ দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে বিভিন্ন সময় জোরপুর্বক কাউন্সিলর খোরশেদ ধর্ষণ করে। তিনি বিয়ের কাবিননামা দেখতে চাইলে দেই দি”িচ্ছ বলে কালক্ষেপন করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। বিভিন্ন সময়ে কয়েকবার ধর্ষণের পর কাউন্সিলর খোরশেদ জানায় তাকে সে বিয়ে করেনি। ২০২০ সালের ২ আগস্ট ও ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারী ফতুল্লার উত্তর চাষাড়ার বাড়িতে রাত ১১টার দিকে তাকে কয়েকবার ধর্ষণ করা হয় বলেও তিনি মামলায় উল্লেখ করেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি রকিব উদ্দিন আহমেদ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এরআগে গত ১৬ মে রাতে সাঈদা আক্তার শিউলী বাদী হয়ে কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও রেহানা আক্তার নামে এক নারীকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে পলাতক রয়েছেন কাউন্সিলর খোরশেদ। তদন্ত শেষে ৭ জুলাই নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দায়ের করেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম।
ধর্ষণ মামলা দায়ের বিষয়ে জানতে কাউন্সিলর খোরশেদের ব্যক্তিগত নাম্বারে ফোন দিলে ফোন রিসিভ করেন তার সচিব আলী সাবাব টিপু। তিনি জানান, কাউন্সিলর সোহেব এখানে থাকেন না। মোবাইল অফিসেই থাকে। তবে তিনি জানান, মামলা হয়েছে আমরা জেনেছি। পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত। তদন্তেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
মামলার বাদী সাঈদা আক্তার শিউলী ফতুল্লা থানার ৩২১ নম্বর উত্তর চাষাড়ার মৃত মো. জহিরুল হকের মেয়ে। তিনি গার্মেন্ট ব্যবসায়ী এবং নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ সিএনজি ওনার্স অ্যাসোসিয়ানের সভাপতি ও বিজেএমইর সদস্য।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় সাঈদা আক্তার শিউলীর অভিযোগ কাউন্সিলর খোরশেদের সঙ্গে তার পরিচয় ছোটবেলা থেকে। আগে তার একটি বিয়ে হয়েছিল। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়। সে ঘরে সন্তানও রয়েছে। পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে কাউন্সিলর খোরশেদ ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে প্রতিনিয়ত তার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। এক পর্যায়ে খোরশেদ তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ২০২০ সালের ২ আগস্ট কাঁচপুর এসএস ফিলিং স্টেশনে কাউন্সিলর খোরশেদ নিজেই কাজী নিয়ে গিয়ে ৫ লাখ টাকা দেন মোহরে তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তিনি এবং খোরশেদ বিভিন্ন স্থানে একসঙ্গে রাত্রিযাপন করেন।
পরবর্তী সময়ে বিষয়টি জানাজানি হলে খোরশেদ তার সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এ অবস্থায় সে ব্যবসায়িক কাজে দুবাই চলে গেলে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল খোরশেদ ফেসবুক লাইভে এসে তার বিরুদ্ধে আপত্তিকর, মানহানিকর তথ্য উপস্থাপন করেন এবং নানা বাজে মন্তব্য করে কুৎসা রটান। এর একদিন পর ২৫ এপ্রিল ফেরদৌস আক্তার রেহানা ওরফে রেহানা মুসকান নামে এক নারী খোরশেদ খন্দকারের বাসায় বসে লাইভে এসে তার সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করে। তাকে রাস্তার মেয়েদের সঙ্গে তুলনা করে আপত্তিকর কথাবার্তা বলে এবং তার চুল কেটে ফেলা হবে বলেও ফেসবুক লাইভে বলেন রেহানা। এই দুটো বিষয়ই দুবাই থাকাকালীন তিনি তার এক বান্ধবীর কাছ থেকে জানতে পেরে পরবর্তীসময়ে তাদের আইডি থেকে পুরোপুরি বিষয়টি দেখেছেন। পরে দেশে এসে তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। পরে তিনি দেশে এসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন।