বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন

ইংরেজি নববর্ষ প্রতিটি মানুষের জীবন হোক অনাবিল আনন্দের : আরজু

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১.২৮ এএম
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

ইংরেজি নব বর্ষের আগমনি বার্তায় মুছে যাক সকল গ্লানি; সবার জীবন হোক অনাবিল আনন্দের। এ কামনায় সবাইকে জানাই অগ্রিম ইংরেজি নববর্ষ ২০২৫-এর শুভেচ্ছা।

ইংরেজি নববর্ষের মধ্যরাতের মুহূর্তটা আমারে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে কোনোরূপ আন›-আবেগ সৃষ্টি না কারলেও খ্রিষ্টান জগৎ ওই মুহূর্তে হ্যাপি নিউ ইয়ার উচ্চারণের মধ্য দিয়ে এক হই-হুল্লোড়ে উল্লাস ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।

কালের ধারাবাহিকতায় ইংরেজি ক্যালেন্ডারের দিন তারিখ আমাদের কাজ-কর্মের তারিখ নির্ধারণে, হিসাব-নিকাষ সংরক্ষণে, আন্তর্জাতিক আদান-প্রদানে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

আমারে শে ইংরেজি নববর্ষ আমারে নতুন েিনর হিসাব শুরু করালেও একই সাথে বাংলা তারিখ উল্লেখ করার নির্দেশ রয়েছে। আমারেকে অবশ্যই সে নির্শেনা মেনে চলতে হবে। আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিকে ভুলে গেলে চলবে না। তথ্য সূত্রে জানা যায়, আমরা যাকে ইংরেজি ক্যালেন্ডার বলি আদতে এর নাম গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। ১৫৮২ খ্রিষ্টাব্দে রোমের পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি প্রাচীন জুলিয়ান ক্যালেন্ডারটির সংস্কার সাধন করেন।

এই গ্রেগরির নামে এই ক্যালেন্ডার গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার নামে পরিচিত হয়। এই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী তারিখ লেখার শেষে যে এ.ডি (অ.উ.) লেখা হয় তা লাতিন এ্যানো ডোমিনি (অহহড় উড়সরহর)-এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এই এ্যানো ডোমিনির অর্থ আমাদের প্রভূত বছরে (ওহ ঞযব ণবধৎ ড়ভ ঙঁৎ খড়ৎফ) অর্থাৎ খ্রিষ্টাব্দ।

ডাইওনিসিয়াম একমিগুয়াস নামক এক খ্রিষ্টান পাদ্রী জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের ৫৩২ অব্দে যিশু খ্রিষ্টের জন্ম বছর থেকে হিসাব করে এই খ্রিষ্টাব্দ লিখন রীতি চালু করেন।

মানুষ আদিকাল থেকেই কোনো না কোনোভাবে দিন-ক্ষণ, মাস-বছরের হিসাব রাখতে প্রয়াসী হয়েছে চাঁদ দেখে, নক্ষত্র দেখে, সূর্য দেখে, রাত-দিনের আগমন-নির্গমন অবলোকন করে, ঋতু পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা পর্যবেক্ষণ করে। সাধারণ কোনো বিশেষ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিন গণনা, মাস গণনা, বছর গণনার রীতি কালক্রমে চালু হয়েছে। তিথি, নক্ষত্র, বিশ্লেষণ করার রীতিও আবিষ্কার হয়েছে, উদ্ভাবিত হয়েছে রাশিচক্র।

চাঁদের হিসাব অনুযায়ী যে বছর গণনার রীতি চালু হয় তা চান্দ্র সন নামে পরিচিতি লাভ করে। এই চাঁদ সনে বছর হয় মোটামুটি ৩৫৪ দিনে আর সূর্যের হিসাবে যে বছর গণনার রীতি চালু হয় তা সৌর সন নামে পরিচিত হয়। সৌর সনের বছর হয় মোটামুুটি ৩৬৫ দিনে।

 

দিন অথাৎ বারের নামকরণ করা হয় গ্রহের উপর নির্ভর করে। শনিবার-শনিগ্রহ। রবিবার-রবি অর্থাৎ সূর্য। সোমবার-মহাদেব শিব।মঙ্গলবার-মঙ্গল গ্রহ। বুধবার-বুধ গ্রহ। বৃহস্পতিবার-বৃহস্পতি গ্রহ। শুক্রবার-শুক্র গ্রহ।

আর ইংরেজী ১২ মাস পণ্ডিত পণ্ডিফোরাই ৭৫৬ অব্দে ক্যালেন্ডার আবিষ্কার করেন। চাষাবাদের উপর ভিত্তি করে এ ক্যালেন্ডার প্রস্তুত করা হয় বলে এতে মাসের সংখ্যা ছিল ১০। ১০ মাসের ক্যালেন্ডারে দিনের সংখ্যা ছিল ৩০৪ এবং বছরের শুরু হতো মার্চ মাস থেকে। রোমান রাজা নুমাপাম পিলিয়াস ৭৫০ অব্দে ওই ক্যালেন্ডারে জানুয়ারিয়াস ‘জানুয়ারি’ এবং ফেব্রুয়ারিয়াস ‘ফেব্রুয়ারি’ নামে দুটি মাস সংযুক্ত করেন। কিছু কিছু মাসের দিনের সংখ্যাও পরিবর্তন করেন। ফলে মাসের সংখ্যা দাঁড়ায় ১২। এবং ইংরেজি মাসের নামকরণ করা হয় দেব দেবতাদের নামানুসারে। জানুয়ারি- রোমান দেবতা জানুসের নামানুসারে। ফেব্রুয়ারি-ফেব্রুয়ারি নামক রোমান উৎসবের নামানুসারে। মার্চ-রোমান যুদ্ধের দেবতা মার্সের নামানুসারে। এপ্রিল-ল্যাটিন শব্দ এপ্রিলিস থেকে নেওয়া হয়েছে। মে-গ্রীক দেবী মায়াসের নামানুসারে। জুন-রোমান দেবী জুনোর নামানুসারে। জুলাই-রাষ্ট্রনায়ক জুলিয়াস সিজার এর নামানুসারে।
আগস্ট রোমের প্রথম সম্রাট অগাস্টাস এর নামানুসারে। সেপ্টেম্বর- ল্যাটিন ংবঢ়ঃবস বা সাত থেকে নেওয়া হয়েছে। অক্টোবর- ল্যাটিন ড়পঃড় বা আট থেকে নেওয়া হয়েছে। নভেম্বর- ল্যাটিন হড়াবস বা নয় থেকে নেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বর-ল্যাটিন ফবপবস বা দশ থেকে নেওয়া হয়েছে।

 

কালের বিবর্তনে ইতিহাসের পাতা থেকে আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছে আরেকটি বছর। এ বছরে হারিয়েছি আমরা আমাদের অনেক স্বজন। দেশ বিশ্ব থেকে চীর বিদায় নিয়েছেন অনেক খ্যাতিমান ব্যক্তি। দেখেছি যুদ্ধে বিধস্ত অনেক দেশ। শিশু থেকে বয়োবৃদ্ধ নার নারীর আর্তচিৎকার। ক্ষমতার অনেক পালাবদল। অনেক ঘটনায় রচিত হওয়া ইতিহাসের জন্ম। এ সব কিছু পিছনে ফেলে সময়ের গতি পথনিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে ইংরেজি নতুন বর্ষ ২০২৫ সালের প্রথম দিন। আনন্দ-বেদনা, সাফল্য-ব্যর্থতা, আশা-নিরাশা, প্রাপ্তি-প্রবঞ্চনার হিসেব-নিকাশ সবকিছু পেছনে ফেলে আসুন আমরা সবাই মিলে নতুন বছরকে স্বাগত জানাই আগামী দিনের নতুন স্বপ্নে সোনালি ভোরের।

বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথায় বলি, ‘বন্ধু হও, শত্রু হও, যেখানে যে কেহ রও,/ ক্ষমা করো আজিকার মতো,/পুরাতন বর্ষের সা/েপুরাতন অপরাধ যত।

কবি সুফিয়া কামাল লিখেছেন, ‘ অনন্ত সূর্যাস্ত-অন্তে আজিকার সূর্যাস্তের কালে/সুন্দর দক্ষিণ হস্তে পশ্চিমের দিকপ্রান্ত-ভালো/দক্ষিণা দানিয়া গেল, বিচিত্র রঙের তুলি তার/বুঝি আজি দিনশেষে নিঃশেষে সে করিয়া উজাড়/দিনের আনন্দ গেল শেষ করি মহাসমারোহে।

পুরোনো বছরের ভুলগুলো শুধরে সমস্ত ইতিহাস থেকে ভালো ভালো শিক্ষা গ্রহণ এবং অতীতের সফলতা-ব্যর্তাকে পুনর্মূল্যায়নের মাধ্যমে সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের লক্ষ্যে আমারে সামনের দিকে তৃপ্ত পক্ষেপে এগিয়ে যেতে হবে।

বাংলাদেশের মানুষ অর্থাৎ বাঙালি অন্যদের তুলনায় এই ভেবে অনায়াসে গর্ব করতে পারে যে, তাদের একটি নিজস্ব বর্ণমালা এবং একটি বর্ষপঞ্জি রয়েছে, যা বিশ্বের অনেক বিখ্যাত জাতিরও নেই। নিজস্ব বর্ষপঞ্জি থাকার কারণে বাঙালি বছরে দুথবার বর্ষবরণ করে, তার একটি পয়লা বৈশাখ। আরেকটা হলো ১লা জানুয়ারি। বাঙালি একবার বলে শুভ নববর্ষ। আরেকবার বলে হ্যাপি নিউ ইয়ার।

নব এ বর্ষে আমাদের প্রত্যাশা সব ধরণের স্থবিরতা কাটিয়ে নতুন বছর সবার জীবনে বয়ে আনবে অনাবিল আনন্দ। এ দেশে ফিরে আসবে শান্তি, সমৃদ্ধি, স্বস্তি, গতিময়তা। নতুন আশার আলো প্লাবিত করবে দিক-দিগন্ত।

মহাকালের অতলে হারিয়ে গেলো আরো একটি বছর। সময়ের চক্রে আর কখনোই ফিরবে না ২০২৪ সাল। তবে কখনো মনের অজান্তেই ভেসে উঠবে ফেলে আসা স্মৃতি। পরিশেষে সবাইকে জানাই ইংরেজি নতুন বছরের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। শুভ হোক ইংরেজি নববর্ষ। সবার জীবন হোক কল্যাণময়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort