নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারি কৃষি অফিসার আকলিমা আক্তারের (৪৫) বিরুদ্ধে সরকারি পেশার আড়ালে মাদক ব্যবসার প্রমান মিলেছে।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) ৫ হাজার পিছ ইয়াবার চালানসহ তাকে আটকের পর বিষয়টি প্রকাশ পায়। জব্দকৃত ইয়াবার মূল্য পনের লাখ টাকা বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ইয়াবার ব্যবসার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগ এই কৃষি কর্মকর্তার স্বামী মোতাহার হোসেন সেলিম ও তাদের ভাড়া করা একটি প্রাইভেট কারের চালক আজিজুল হককেও আটক করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে তার গাড়িটিও। শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রাম থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃত কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা আক্তার (৪৫) ও তার স্বামী মোতাহার হোসেন সেলিম দক্ষিণপাড়া গ্রামেই নিজেদের বাড়িতে বসবাস করেন এবং এখান থেকেই গোপনে দীর্ঘদিন ইয়াবার ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে আড়াইহাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিজুল হক তালুকদার সময় সংবাদকে বলেন, আটকের পর কৃষি কর্মকর্তা ও তার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলাসহ আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধিন রয়েছে।
অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) শেখ বিল্লাল হোসেন জানান, আড়াইহাজার উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারি কৃষি অফিসার আকলিমা আক্তার ও তার স্বামী ইয়াবার ব্যবসায় জড়িত এমন তথ্যের ভিত্তিতে তাদের উপর পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করা হয়। শুক্রবার রাজধানির যাত্রবাড়ি থেকে তিনি ও তার স্বামী পাঁচ হাজার পিছ ইয়াবা ক্রয় করে ভাড়া করা একটি প্রাইভটে কারে চড়ে আড়াইহাজারে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের বাড়ির অদূরে পুলিশের এইকট দল অবস্থান নেয়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রাইভেট কারের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে পুলিশ গাড়িটি থামায়। ভেতরে তল্লাশি করে পাঁচ হাজার পিছ ইয়াবা পাওয়া গেলে আটক করা হয় কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা আক্তার, তার স্বামী মোতাহার হোসেন সেলিম ও গাড়ি চালক আজিজুল হককে। পরে জ্বদকৃত ইয়াবা ও প্রাইভেট কারসহ আটককৃতদের আড়াইহাজার থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
জেলা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আটককৃত কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা আক্তার সরকারি পেশার আড়ালে দীর্ঘদিন যাবত তার স্বামীর সহযোগিতায় ইয়াবার ব্যবসা করে আসছেন। রাজধানির বিভিন্ন এলাকা থেকে ইয়াবার চালান ক্রয় করে নিজেদের বাড়িতে মজুদ করে খুচরা ও পাইকারি মূল্যে বিক্রি করতেন। ইয়াবার চালান ক্রয় করে আনার সময় একেক দিন একক গাড়ি ভাড়া করতেন তারা।
এছাড়া নিজেদের বাড়িটির চারপাশে সি সি ক্যামেরা দিয়ে ভেতর থেকে বাইরে কড়া নজরদারি করতেন। যাতে পুলিশ বা আইন শৃংখলা বাহিনী তাদের বাড়িতে এলেও আগে থেকে নিজেরা সতর্ক হয়ে যেতে পারেন। আইন শৃংখলা বাহিনীর নজর এড়াতে নানা কৌশল অবলম্বন করে এই দম্পতি ইয়াবার ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা এসব স্বীকারও করেছেন। মাদক নিয়ন্ত্রনে জেলা পুলিশের মাদকবিরোধি অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন।