নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সুন্দর আলীর নৌকার ভরাডুবি ঠেকাতে উপজেলার সকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নিয়ে গোপন বৈঠক করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু গণমাধ্যমে এমন অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে এমপি কৃষ্ণপুরার বাসভবনে দুই ঘন্টাব্যাপী এই গোপন বৈঠক চলে। এসময় একে একে সকল চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ প্রার্থী সুন্দর আলীর মাঠ পর্যায়ের আশঙ্কাজনক অবস্থা তুলে ধরেন। গত পাঁচ বছরে সুন্দর আলী জনপ্রিয়তা হ্রাসের বিভিন্ন কারণ তুলে ধরেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চেয়ারম্যান এ প্রতিবেদককে জানান, গোপন বৈঠকে কয়েকজন চেয়ারম্যান পৌরসভা ঘুরে পাবলিক সেন্টিমেন্ট জানিয়ে বলেন, ভোটাররা নৌকায় ভোট দিতে রাজী থাকলেও সুন্দর আলীকে ভোট দিতে চাচ্ছেনা।
রাস্তায় টোলের নামে চাঁদাবাজি, গরীব অসহায় লোকদের হোল্ডিং টেক্স, জন্মানিবন্ধনে অতিরিক্ত ফিসহ পৌরসভায় হয়রানি, দোকানদারদের ট্রেড লাইসেন্স অতিরিক্ত টাকা সহ বাজে আচরণ, পৌরসভা অটো রিক্সায় নাম্বার প্লেটের নাম করে অতিরিক্ত টাকা আদায়, বিচারের নামে মধ্যস্থভোগীদের মাধ্যমে টাকা আদায়, বিল্ডিং ভাঙার হুমকি দিয়ে টাকা আদায়সহ বিভিন্ন হয়রানিমূলক কর্মকান্ডে ভোটাররা বেশ বিক্ষুব্দ।
এদের মধ্যে একজন চেয়ারম্যান বলে ফেলেছেন, ভোটাররা ভোট দিতে পারলে সুন্দর আলীর অবস্থা তিন অথবা চার নম্বরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বৈঠকে সব চেয়ারম্যানদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু। তিনি তাদের বলেন, সুন্দর আলী ফেক্ট না। নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে। যেখানে যা প্রয়োজন তাই করতে হবে। নৌকা ছাড়া ভোট কেন্দ্রে কোন এজেন্ট দেখতে চাই না।
বৈঠকে সাতগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান অদুদ মাহমুদ, দুপ্তারা ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম, ব্রাহ্মন্দী ইউপি চেয়ারম্যান লাক মিয়া, ফতেপুরের আবু তালেব মোল্লা, উচিৎপুরার ইসমাইল হোসেন, খাগকান্দার আরিফুল ইসলাম, মাহমুদপুরের আমান উল্যাহ ভুইয়া ও কালাপাহাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ফাইজুল হক ডালিম, হাইজাদীর আলী হোসেন ভুইয়া ও বিশনন্দী ইউপি সিরাজুল ইসলাম ভুইয়া উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে এ গোপন বৈঠক নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাকি তিন মেয়র প্রার্থী। তার ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রার্থীকে ভোট দিতে বল প্রয়োগের আশঙ্কা করেছেন।
পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নারিকেল গাছ প্রতীকের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী মেহের আলী মোল্লা বলেন, সুন্দর আলীর ভরাডুবি আশঙ্কা নয় এটি এখন বাস্তব। পৌরবাসী ভোট দিলে সুন্দর আলী পজিশন হবে চার নম্বরে। গত পাঁচ বছরে পৌরবাসী বিভিন্ন কাজে পৌরসভায় এসে যে পরিমান হয়রানির শিকার হয়েছে তার উপযুক্ত জবাব দিতে ভোটাররা মুখিয়ে রয়েছে।
একই কথা বলেন মোবাইল প্রতীকের মামুন অর রশীদ ও জগ প্রতীকের হাবিবুর রহমান। তারা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের জোড়ালো ভূমিকার দাবী করেন।