নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে নারায়ণগঞ্জে পালিত হচ্ছে বই উৎসব। অথচ, এখনও নারায়ণগঞ্জে প্রাথমিকের বরাদ্দ পাওয়া বইয়ের ৫৪ দশমিক ৭২ শতাংশ ছাপা বাকি রয়েছে। মাধ্যমিকে বাকি রয়েছে ১৭ দশমিক ৬১ শতাংশ।
উৎসব থেকে নতুন বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই তুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি।
নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে রোববার (১ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জে বই বিতরণের এমন চিত্র।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা ছাড়া অন্য কোন উপজেলার বই আসেনি প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির। একই ভাবে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বই আসেনি সোনারগাঁ, রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার উপজেলায়। তৃতীয়, চতুর্থী ও পঞ্চম শ্রেণির বই এসেছে। তবে, চাহিদার অর্ধেকেরও কম।
মাধ্যমিকের চিত্র কিছুটা ভিন্ন।
সেখানে ৮২ শতাংশ বই এতো মধ্যে এসে গেছে। বাকি রয়েছে ১৭ দশমিক ৬১ শতাংশ।
২০১০ সাল থেকে বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বই বিতরণ করে উৎসব পালন করে আসছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন শেখ হাসিনার সরকার। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর বই উৎসব হয়নি। করোনা নিয়ন্ত্রণে আসায় ২০২৩ সালে নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মতো নারায়ণগঞ্জেও উৎসব করে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যে পাঠ্যবই তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বই উৎসব পালিত হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে।
জেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলায় ১৫ লাখ ৭১ হাজার ৪৫২ টি বইয়ের চাহিদা রয়েছে। পেয়েছে ৭ লাখ ২৬ হাজার ৬১৮টি। এখনও ৫৪ দশমিক ৭২ শতাংশ বই পায়নি প্রাথমিকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো।
প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে বইয়ের চাহিদা রয়েছে ৫০ হাজার ১৫৮টি, পেয়েছে ২২ হাজার ২০০টি। প্রথম শ্রেণিতে চাহিদা ১ লাখ ৯৫ হাজার ৬০০টি, এসেছে ১ লাখ ৫০০টি। দ্বিতীয় শ্রেণির ১ লাখ ৯৩ হাজার ২৬০টি বইয়ের মধ্যে ৯৫ হাজার ৪০০ বই এখনও বাকি। ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৪৪২টি বইয়ের মধ্যে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পেয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৫২৮টি বই। ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪৮৬টি বইয়ের মধ্যে ১ লাখ ৬১ হাজার ৯৪৭টি বই পেয়েছে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। আর ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৫০৬টি বইয়ের মধ্যে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৮৩টি বই এসেছে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ৪১ লাখ ৪০ হাজার ৭২৫টি বইয়ের চাহিদা রয়েছে মাধ্যমিক, দাখিল, এবতেদায়ী, মাধ্যমিক ইংরেজী ভার্সন, এসএসসি ভোকেশনাল, দাখিল ভোকেশনালে। এর মধ্যে এসে গেছে ৩৪ লাখ ১১ হাজার ২৪৮টি বই। বাকি রয়েছে ৭ লাখ ২৯ হাজার ৪৭৭টি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বেশির ভাগ বই এসে গেছে। বই গুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে বিতরণও হয়ে গেছে। বাকি যে বই গুলো রয়েছে, তা খুব দ্রুতই প্রতিষ্ঠান গুলোতে পৌঁছে দেওয়া হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আলেয়া ফেরদৌসী বলেন, ৪টি উপজেলায় প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বই আসেনি। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই ৩টি করে এসেছে। যে বই এসেছে, সে গুলো দিয়েই আমরা বই উৎসব পালন করেছি। যেখানে বই আসেনি, সেখানে পরবর্তীতে দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছি।