কয়েক দিন আগে ভারতের জনপ্রিয় টেলিভিশন অভিনেত্রী বৈশালী ঠাক্কর আত্মহত্যা করেছেন। প্রথমে এ ঘটনায় অভিযোগের তীর ছিল, বৈশালীর হবু বর অভিনন্দন সিংহর দিকে। পরে জানা যায়, বৈশালীর আত্মহত্যার জন্য দায়ী তার প্রাক্তন প্রেমিক রাহুল। পরিবারের দাবি— অভিনন্দনের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হওয়ায় বৈশালীর ‘আপত্তিকর’ ছবি, ভিডিও রাহুল পাঠিয়েছিল হবু বর অভিনন্দনকে।
ইন্দোরের তেজাজি নগর থানা এলাকার সাইবাগ কলোনিতে থাকতেন বৈশালী। তার পড়শি ছিলেন রাহুল। ইন্দোরের এ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বৈশালী। ঘটনাস্থল থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। এ সুইসাইড নোটে রাহুল ও তার স্ত্রী দিশার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন বৈশালী। এ অভিনেত্রী আত্মহত্যা করার পর স্ত্রীকে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান রাহুল। এদিকে, রাহুল-দিশাকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছেন মধ্য প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্রা। ইন্ডিয়া ডটকম এ খবর প্রকাশ করেছে।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের নরোত্তম মিশ্রা বলেন—‘অভিযুক্ত দম্পতিকে (রাহুল-দিশা) ধরিয়ে দিতে পারলে প্রত্যেকের জন্য ৫ হাজার রুপি করে পুরস্কার প্রদান করা হবে। তা ছাড়া অভিযুক্ত এ দম্পতির বিরুদ্ধে একটি লুকআউট সার্কুলার জারি করা হয়েছে, যাতে তারা দেশ থেকে পালাতে না পারে।’
পুলিশ সূত্রের খবর, সুইসাইড নোটে বৈশালী লিখেছেন—‘রাহুল আমাকে শারীরিক-মানসিকভাবে শেষ করে দিয়েছে। ও বলেছিল, আমাকে কিছুতেই বিয়ে করতে দেবে না; আর ঠিক তা-ই করলো।’
রাহুলের স্ত্রী দিশাকে নিয়ে বৈশালী লিখেছেন, ‘রাহুলের স্ত্রী দিশা সব জানে। কিন্তু সবার সামনে আমার নামে বাজে কথা বলে ও। পরিবারকে বাঁচাতে চায়, আর কিছুই না। রাহুল সেটারই সুবিধা নিয়েছে। ও জানত, আমি কিছুই করতে পারব না, তাই আমার জীবনটা তছনছ করে দিলো। আমি কিছু করতে পারলাম না। কিন্তু আইন আর ভগবান হয়তো ওদের শাস্তি দেবে।’
পেশায় ব্যবসায়ী রাহুলের সঙ্গে আগে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন বৈশালী। অভিনেত্রীর পরিবারও তা জানত। কিন্তু যখনই অন্য পুরুষের সঙ্গে বৈশালীর বিয়ে ঠিক হয়, তখন ঝামেলা শুরু করে রাহুল। সমস্যার সূত্রপাত সেখান থেকেই। একের পর এক বিয়ে ভাঙার পেছনে রাহুলকেই দায়ী করে গিয়েছেন এই অভিনেত্রী। বৈশালীর মৃত্যুর পর থেকে পলাতক রাহুলের খোঁজে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে এসিপি মতিউর রহমান বলেন—‘অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ের কথা ছিল বৈশালীর। তা নিয়ে রাহুল তাকে বিরক্ত করতেন। বৈশালীকে হেনস্তা করতেন প্রতিবেশী রাহুল। তার জন্য এই চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেন বৈশালী। বর্তমানে নিজের বাড়িতে নেই রাহুল। রাহুলকে খোঁজার চেষ্টা চলছে।’
গত ১৬ অক্টোবর সকালে ভারতের মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের বাড়ি থেকে বৈশালীর মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ। তার বয়স হয়েছিল ৩০ বছর।