সাদা-কালো বিশাল দেহ। হাঁটা চলার-ফেরার ভাবখানা একদম রাজকীয়। শখ করেই ষাঁড়টির মালিক তার নাম রেখেছেন ‘রাজাবাবু’। চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার আলোচনায় রয়েছে ৩৫ মণ ওজনের রাজাবাবু। বিশাল দেহের এই ষাঁড়টি জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের সাবেক জনপ্রতিনিধির খামারে রয়েছে। এই খামারের মালিক জুলফিকার আলী রাজাবাবু নামের ষাঁড়টি যত্নে দেখভাল করছেন। হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের সাদা-কালো রঙের ষাঁড়টির দাম হাঁকা হচ্ছে ১৭ লাখ।
দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে গরু খামার করে আসছেন সাবেক ইউপি সদস্য জুলফিকার আলী। আসন্ন কোরবানি ঈদে পশুরহাট মাতানোর জন্য ৩৫ মণ ওজনের ষাঁড়টিকে বিশেষভাবে দেখভাল করছেন। প্রতিদিন তার খাবার খরচ হাজার খানেক টাকা। শান্ত-স্বভাবের গরুটি দেখতে ছুটে আসছেন মানুষজন। অনেকে ষাঁড়ের ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন।
শাহবাজপুর ইউনিয়নের হাজারবিঘি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘আমাদের গ্রামে বিশাল ষাঁড় আছে, মানুষ দেখতে ভিড় করে। ছবি তোলে। বাজারে দোকানে দোকানে কথা হয় জুলফিকার খামারির বিশাল ষাঁড় নিয়ে। এসব উপভোগ করেন এলাকার লোকজন।’
বিশাল আকৃতির রাজাবাবুর খবর পেয়ে জুলফিকার আলীর বাড়িতে একনজর দেখার জন্য উপজেলারর মনকষা ইউনিয়ন থেকে এসেছেন ফারুক হোসেন। তিনি জানান, পশু নিয়ে নতুন খবর পেলে ঘুরে দেখার অভ্যাস তার। যার কারণে তিনি প্রায় ৩০ কিলোমিটার দুর থেকে হাজারাবিঘি গ্রামে রাজাবাবুকে দেখতে এসেছেন। ২০২৪ সালে ঈদুল আজহায় এ রকম ষাঁড় লালনপালন করার প্রত্যাশা তার।
গত বছর কোরবানি মৌসুমে ৩২ মণ ওজনের চাঁপাই সম্রাট নামে ষাঁড়ের মধ্য দিয়ে আলোচনায় আসেন খামারি জুলফিকার আলী। গত বছর ষাঁড়টি আশানুরূপ দামে বিক্রি করতে না পারলেও এবার কাঙ্ক্ষিত লাভের আশায় বুক বেঁধেছেন। রাজাবাবুকে তিনি এক বছর ধরে খামারে রেখে দেখভাল করছেন।
জুলফিকার আলী বলেন, আসন্ন কোরবানি ঈদের জন্য রাজাবাবুকে প্রস্তুত করা হয়েছে। শান্ত স্বভাবের ষাঁড়টি ধান-চাল-গম-ভুষিসহ অন্যান্য খাদ্য খাওয়ানো হয়। তীব্র খরতাপে দিনে বিশাল দেহের রাজাবাবুকে একাধিকবার গোসল করানো হয়। স্থানীয় পশুরহাটের পাশাপাশি দেশের বড়-বড় হাটে ষাঁড়টি নিয়ে যাওয়া হবে বিক্রি করার জন্য।
বিশাল আকারের ষাঁড় লালন-পালন করার পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা ছুটে আসছেন শুধু রাজাবাবুকে দেখতে এসব জুলফিকারকে আনন্দ দেয়। তিনি বলেন, ‘আমার খামারে থাকা রাজাবাবুর কথা জেলা-উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সকল কর্মকর্তা জানেন। মাঝেমধ্যে সরকারি কর্মকর্তারা রাজাবাবুকে দেখতেও আসেন। তারা আমাকে সহযোগিতা করে থাকেন।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জুলফিকার আলী তার নেশা থেকে এসব ষাঁড় লালন-পালন করেন। গত বছর চাঁপাই সম্রাট ভালো দাম না পেলেও এবার ভালো দাম পাবেন বলে আশা করেন তিনি।