সোনারগাঁ প্রতিনিধিঃ সোনারগাঁয়ে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা বাস স্ট্যান্ডের চিহ্নিত চাঁদাবাজ আতাউর রহমানকে (৪৭) যৌথবাহিনী গ্রেফতার করেছে। গতকাল রোববার ভোর রাতে উপজেলার হাবিবপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর সন্ত্রাসী আতাউর মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় অবস্থিত বিভিন্ন মার্কেটে প্রায় ৩০টি দোকানে তালা লাগিয়ে বন্ধ করে দেয়। পরে প্রত্যেক দোকানির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের দোকান খুলে দেয়। এছাড়াও ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্ব পাশে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা জামে মসজিদের সামনে ও এর আশেপাশে সড়ক ও জনপথের বিশাল জায়গা দখল করে ফলমূল, কাঁচামালসহ বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান বসিয়ে দোকান প্রতি ৫০০ থেকে শুরু করে ১০০০ ও ২/৩ হাজার টাকা করে প্রতিদিন দুই লাখ টাকার অধিক উপরে চাঁদা আদায় করে আসছে।তাছাড়া নাফ, বোরাক, ট্রাক স্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন পরিবহনে ব্যাপক চাঁদাবাজিও করে আসছে। আবার আতাউর ও পৌর বিএনপির মোতালেব কমিশনারসহ বিএনপির একাধিক নেতা মেঘনা গ্রুপের মেঘনা ইকোনমিক জোন ও বিভিন্ন কারখানায় গিয়ে দখলে নেয় এবং মালিকদেরকে ওয়েষ্টেজসহ বিভিন্ন মালামাল তাদেরকে দিতে নির্দেশ করেন। দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা থাকার সুযোগে একের পর এক অপরাধ করছে বিএনপি নেতা আতাউর ও তার লোকজন। অন্যদিকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় আহত ও নিহতদের ঘটনায় মামলা দায়েরের আগে ও পরে সোনারগাঁয়ের অনেক ব্যবসায়ী এবং আওয়ামীলীগ নেতাদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ বানিজ্য করেন।
অন্যদিকে হাজী গাজী আব্দুস সামাদ চৌরাস্তা জামে মসজিদের সভাপতি পদ দখল করে এবং নিজ ভাতিজা যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেফতারকৃত বিএনপি নেতা আতাউরের প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চৌরাস্তায় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের বাইরে আশেপাশে বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দোকান ভাড়া দিয়ে মসজিদের নামে বিভিন্ন পরিমাণে টাকা তুলে মসজিদে না দিয়ে নিজেই তা আত্মসাৎ করছেন। এনিয়েও স্থানীয় বিভিন্ন মহলে ও এলাকাবাসীর মনে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে প্রভাবশালী ভাতিজা আতাউরের জন্য কেউ মুখ ফুটে কিছুই বলতে পারছে না।
এদিকে চাঁদাবাজ আতাউরকে আটকের পর সোনারগাঁ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে কি কারণে তাকে আটক করা হয়েছে, সে বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।আটকের এই ঘটনার পর এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে বিভিন্ন আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ বারী জানান, বিএনপি নেতা আতাউর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়নি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যৌথবাহিনী থানায় নিয়ে এসেছে। এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত বিএনপি নেতা আতাউর রহমানকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।