দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা বলেছেন, সোনারগাঁয়ের সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও অপকর্মকারীরা আজকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কায়সার হাসনাতের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। যে কোনো মূল্যে তারা আমার বিজয় আটকে দিতে চায়। কিন্তু সোনারগাঁয়ের ভোটার এবং সাধারণ মানুষ আমার পক্ষে। ভোটের দিন ৯০ ভাগ ভোট লাঙ্গল প্রতীকে পড়বে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
বুধবার (৩ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগকালে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার পর সোনারগায়ের মানুষ ব্যাপক আনন্দ উল্লাস করেছিলো, তাদের নিয়ে দেশের মধ্যে জেলা পর্যায়ে সর্ববৃহৎ আনন্দ মিছিল আমরা করেছিলাম। কারণ, তারা নির্বাচনে অংশ নিবে এবং ভোট দিবে। কেননা, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনটি দখলবাজির নির্বাচন হয়েছিলো। তখন থেকে নির্বাচনে ভোট দেয়া যাবে কিনা এমন প্রশ্নে আস্থা হারিয়ে ফেলেছিলো এলাকার মানুষ। আমি তখন উৎসাহিত করেছিলাম সোনারগাঁয়ের মানুষদের। তারপর নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়মতান্ত্রিক ভাবে চলছে। কিন্তু, এখন সোনারগাঁয়ে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে, সোনারগাঁবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। ফলে, আমি যখন মানুষের কাছে যাই, তখন তারা আমাকে প্রশ্ন করে যে, আমরা ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে পারবো কিনা? নির্বাচনের দিন সরকারি দলের পোলিং এজেন্ট ধমক দিয়ে ভোট নিয়ে নিবে কিনা? রাস্তায় কেউ বাধা দিবে কিনা?
তিনি বলেন, নৌকার সমর্থকরা অপপ্রচার চালিয়ে বলছে, নৌকার প্রার্থী যদি ১ ভোটও পায়, তারপরও নৌকার প্রার্থীই পাশ করবে। এছাড়া, প্রতিনিয়তই হুমকি-ধামকি তো চলছেই। তাদের যে সকল নেতাকর্মীরা অপকর্মের সাথে জড়িত, সন্ত্রাসী হিসেবে সোনারগাঁয়ে পরিচিত, তারা আমার বিভিন্ন নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী যারা আমাকে সমর্থন করে তাদের বাসায় রাতের আধারে যাচ্ছে। এতে করে নির্বাচনের পরিবেশটা নষ্ট হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে পুরো উপজেলায় সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করা হচ্ছে, ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে এবং এই ভীতি কাটানোর জন্য আমাকে রাতদিন পরিশ্রম করতে হচ্ছে।
জয়ের প্রশ্নে তিনি বলেন, নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে আমি শতভাগ আশাবাদি। আমি মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই, গত দশ বছর আগে আমি যে দায়িত্বটা নিয়েছিলাম, সেই দায়িত্বের আলোকে সোনারগাঁয়ের মানুষের পাশে ছিলাম। করোনা মহামারিসহ বিভিন্ন সময়ে অসহায় মানুষের পাশে ছিলাম। আলহামদুল্লিাহ, মানুষ যে আমাকে এতো ভালোবাসে, সোনারগাঁয়ের মুরুব্বী, মা-বোনেরা, বিশেষ করে নতুন ভোটাররা উৎসাহিত হয়ে আমার পাশে এসেছে এজন্য আমি অত্যন্ত আনন্দিত।
সংসদ সদস্য বলেন, আপনারা জানেন, মাদক ব্যবসার সম্রাট ছিলো বদি। কিন্তু আপনারা এও জানেন, ছোট বদি নামে কিন্তু সোনারগাঁয়ে একজন মানুষ আছেন। তার নেতৃত্বে সব মাদক ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। শুনেছি তারা নাকি বাজেটও ঠিক করেছে যে, আমি কিভাবে নির্বাচনে জয়লাভ করবো তারা তা দেখবে? যে কোনো মূল্যের বিনিময়ে তারা নাকি আমার জয় আটকাবে। কেননা, গত দশ বছরে আমি কোনো মাদক ব্যবাসীয়কে প্রশ্রয় দেই নাই। মূলত, সোনারগাঁয়ের মানুষ বর্তমানে ভীত সন্ত্রস্ত, তাদের মাঝে ভীত একটা ভাব চলে এসেছে, তবে এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই, নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই, তারা কিন্তু সন্ত্রাসীদের দমন করার ও ভয়ভীতি দমন করার চেষ্টা করছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ করবো, যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তিনি স্পষ্ট করে যে হুমকি দিয়েছে, তার ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্রে লাঙ্গলের কোনো পোলিং এজেন্ট তিনি রাখতে দিবেন না, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন যেন ব্যবস্থা নেয়। তাদের (নৌকার প্রার্থীর) ভোট নেই বলেই, তারা সমগ্র উপজেলায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। তাদের অপকর্মের জন্যই তাদের ভোটের থলি শূণ্য। ভোটার এবং সাধারণ মানুষ আমার পক্ষে, সেই জন্যে তাদের একটাই কাজ, আমার নেতাকর্মী ও আমার মেম্বারদেরকে ধরে ধরে নিয়ে যাওয়া, বাসার ভিতরে গিয়ে হুমকি দেয়া, আত্মীয়স্বজনকে হুমকি দেয়া। এমনকি আমার এক কর্মীর মাকে হুমকি দিয়েছে যে, আপনার ছেলেকে অফ করেন। লাঙ্গলের পক্ষে কাজ করা থেকে বিরত রাখেন।