সিদ্ধিরগঞ্জে সাইফুদ্দিন নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন ভাড়া বাড়িতে রিজার্ভ পানির ট্যাঙ্কির পানি পান করে শিশুসহ প্রায় পনের জন পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজন রাজধানীর মহাখালী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। কেউ কেউ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে গত মঙ্গলবার রাতে শাওন (১০) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্র নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ক্রমেই বাড়ছে পানি বাহিত রোগীর সংখ্যা। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন আশেপাশের লোকজন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাসিক ১নং ওয়ার্ডস্থ সিদ্ধিরগঞ্জ পুল সংলগ্ন মিজমিজি পূর্বপাড়া এলাকায় ডিএনডি ক্যানেলপাড় এর পাশে সাইফুদ্দিনের ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে। ঐ বাড়ির অধিকাংশ ভাড়াটিয়াই পোশাক কারখানার শ্রমিক। এদের মধ্যে রাহিম (২০), রহিম (২২), আসমা (৩০), সামিয়া আক্তার (৯), রাসেল ও আনিকা’র (১৫) অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ভাড়াটিয়া এবং স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর যাবৎ ঐ বাড়ির পানির ট্যাংকি পরিষ্কার করা হয়নি। বাড়ির ম্যানেজার জহিরকে বারবার ভাড়াটিয়ারা জানালেও কোন কর্ণপাত করেনি সে। যার ফলে ট্যাংকির পানি দূষিত হয়ে পড়ে এবং সেই পানি পান করে শিশুসহ বাড়ির ভাড়াটিয়ারা পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। এতে মাদ্রাসা ছাত্র শাওন নিহত হয়েছে।
নিহত মাদ্রাসা ছাত্র শাওন এর মামি খাদিজা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করে শাওন অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তার ডায়রিয়া-বমি শুরু হয়। পরে স্থানীয় মেডিস্ক্যান হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে ঢাকা মহাখালী হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। মহাখালী যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় শাওনের। তাকে দাফনের জন্য গ্রামের বাড়ি ভোলা যাওয়ার পথে শাওনের জমজ বোন সামিরাও অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এদিকে এ ঘটনা এলাকাবাসির মধ্যে জানাজানি হলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে। বুধবার সকাল ১১টায় স্থানীয়রা ঐ বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গেলে বাড়ির মালিক সাইফুদ্দিন তার বাড়ির কেয়ার টেকারের দায়িত্বে থাকা শাহআলমের সহযোগীতায় পালিয়ে যায়।
পরে পুলিশ বাড়ির ম্যানেজারকে দ্রুত পানির ট্যাংকি পরিষ্কারের নির্দেশনা দিয়ে আসলে সুযোগ বুঝে ম্যানেজার জহির তার পুরো পরিবার নিয়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাড়ির কেয়ার টেকার শাহ আলম বাড়িটির তদারকি করে থাকে। পূর্বে কয়েকবার ঐ বাড়িতে মেয়েলি ঘটনায় শাহআলম ধামাচাপা দিয়েছে। ঐ বাড়িতে ম্যানেজার জহির নামে থাকলেও মূলত শাহআলমই সকল তদারকি করে থাকে।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়ির মালিককে পাওয়া যায়নি। ট্যাংকিতে পানি নোংড়া অবস্থায় দেখা গেছে। ভাড়াটিয়াদের ট্যাংকির পানি পান না করার জন্য বলা হয়েছে। সেই সাথে দ্রুত পানির ট্যাংকি পরিষ্কার করার জন্য ম্যানেজার বলা হয়েছে।