সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রী সাধারণ। বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছে নারীরা। মহাসড়কের গরুত্বপূর্ণ অংশে ফাঁকা না রেখে প্রায় ৫ ফুট উঁচু তিনটি ডিভাইডার দেওয়ায় এপরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড় খুবই জনবহুল একটি এলাকা। পূর্বাঞ্চলের ১৮ টি জেলার নাভী হিসেবে পরিচিত এটি। এখানে রয়েছে বিভিন্ন যাত্রীবাহী বাসের শতাধিক টিকিট কাউন্টার। ফলে এখান থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলার হাজার হাজার যাত্রী চলাচল করছে। এসব যাত্রীদের বাসে উঠা-নামায় পোয়াতে হচ্ছে দুর্ভোগ।
পথ না পেয়ে বাস চালকরা সড়কের মাঝ খানে ডিভাইডারের ভেতরে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন। এতে যাত্রীরা পড়েন জীবনের ঝুঁকিতে। কষ্ট করে পার হতে হয় উঁচু ডিভাইডার। ডিভাইডার টপকাতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন নারী যাত্রীরা।
পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা জানায়, মহাসড়কের কাঁচপুর সেতুর পশ্চিম পাশ থেকে মাদানীনগর মাদ্রসার সমনে পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যার মাঝখানে শিমরাইল মোড়। সেখানে রয়েছে দূরপাল্লাবাসের শতাধিক টিকিট কাউন্টার। ফলে অসংখ্য যাত্রীবাহী বাস এখানে থামানো হয়।
এতে যাত্রী ও গাড়ির কারণে সৃষ্টি হয় যানজট। ফলে যানজট নিরশনের লক্ষে গত বছরের মাঝামাঝি নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ মহাসড়টির ওই গুরুত্বপূর্ণ অংশে উঁচু তিনটি ডিভাইডার দিয়ে চারটি লেন করেন। তার মধ্যে দূরপাল্লার যানবাহনের জন্য দুটি ও অঞ্চলিক পরিবহনের জন্য দুটি। কিন্তু সড়কের ওই অংশে ডিভাইডার দিলেও কোথাও কোন ফাঁকা রাখা হয়নি।
এতে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচলের লেন থেকে আঞ্চলিক লেনে যাওয়ার কোন পথ নেই। আগে শিমরাইল মোড়ের সওজ কার্যালয় ও প্রিয়ম টাওয়ারের সামনে ডিভাইডারের কিছু অংশ বড় ফাঁকা ছিল। গত মাস দুয়েক আগে ওই ফাঁকা অংশটুকু বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে দূরপাল্লার যাত্রীরা বাস থেকে নেমে ডিভাইডার টপকিয়ে সড়ক পারাপার হচ্ছে।
এদিকে যাত্রীদের এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কিছু লোকজন কয়েক সপ্তাহ ধরে ডিভাইডারে মই লাগিয়ে যাত্রী পারাপারের ব্যবসা শুরু করেন।
মুন্না নামে একজন যাত্রী বলেন, কাঁচপুর ব্রিজের এখানে নামলে ১ কিলোমিটর হাটতে হবে। হেটে শিমরাইল মোড়ে আসলেও মালামাল নিয়ে এপার থেকে ওপারে যাওয়া যায়না।
শাহ আলম বলেন, আমি বারবার না করার পরও আমাকে বাস থেকে সড়কের মাঝখানে নামিয়ে দিয়েছে। এখন কি করব। টপকিয়ে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।
হানিফ পরিবহনের বাস চালক মোসলিম উদ্দিন বলেন, এখানে কোন ফাঁকা নেই, তা আমার জানা ছিলনা। এখন থেকে আর এখানে যাত্রী নামাব না।
হাইওয়ে থানার সড়ক ও জনপথের ইনচার্জ আনসার কমান্ডার মতিউর রহমান বলেন, শিমরাইল মোড়ে অনেক উঁচু ডিভাইডার। পার হওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। তাই বাসের চালকদের নিষেধ করা হচ্ছে এখানে যাত্রী না নামাতে। যাত্রীদের বলা হচ্ছে এখানে না নামতে। কিন্তু কেউ কথা শুনছেনা।
জানতে চাইলে হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল ক্যাম্পের ইনচার্জ টিআই একেএম শরফুদ্দিন বলেন, যাত্রীরা যেন ডিভাইডার টপকিয়ে সড়কের মাঝখান দিয়ে পারাপার হতে না পারে সেজন্য পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমাদের কয়েকজন অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যকে সড়কে মোতায়েন করেছি। মই দিয়ে কেউ যেন লোকজনকে ডিভাইডার পার করতে না পারে আমরা সেদিকে নজর রাখছি।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, আমাদের কাজ সড়ক নির্মাণ করা। গাড়ি কোথায় থামবে তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। কোথা গাড়ি থামবে এ সংক্রান্ত বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে। যাত্রী বা গাড়ি চলাচল দেখার দায়িত্ব হাইওয়ে পুলিশের। তবু জনস্বার্থে আমরা ডিভাইডারের উপরে লোহার গ্রিল দিয়ে বেড়া দিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।