রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

সিদ্ধিরগঞ্জে আবারও শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২, ১০.২৯ পিএম
  • ২৫৮ বার পড়া হয়েছে

সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইলে সফুরা খাতুন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে এক মাসের মাথায় আবারও প্রধান শিকের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামিয়েছে সেই অসাধু চক্রটি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক রফিকুল ইসলামের পদত্যাগ দাবী করে বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে কাস বর্জন করে শিার্থীদের একটি অংশ নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-চাষাড়া সড়ক অবরোধ করে বিােভ শুরু করে। এতে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং সড়ক ছেড়ে স্কুল মাঠে অবস্থান নেয়ার অনুরোধ করেন। পরে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সফর আলী ভুইয়া ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান মানিক শিার্থীদের বুঝিয়ে কাসে ফিরিয়ে নেন।
এদিকে এবার শিার্থীদের আন্দোলনকে তদারকি করার জন্য মাঠে প্রকাশ্যেই নেমেছেন গোদনাইল পদ্মা ও মেঘনা তেল ডিপোর কতিপয় শ্রমিক নেতা। আর নেপথ্যে ‘আ’ অরের এক প্রভাবশালী তেল ব্যবসায়ী ইন্দন যোগাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বেশ করেকজন সচেতন অভিভাবক।
কারণ পদত্যাগী খন্ডকালীন দুই শিকের মধ্যে সোহেল নামে একজন তার আত্মীয়। এছাড়া ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ফারুকও নেপথ্যে শিার্থীদের ইন্দন যোগাচ্ছেন। তার সাথে রয়েছে মাইগগা জাহাঙ্গীর, স্কুলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক দীপেন্দ্র চন্দ্র সরকার ও পদত্যাগকারী খণ্ডকালীন দুই শিক। যাদের পদত্যাগ পত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি গ্রহণ করেছে।
শিার্থীদের অভিযোগ, আমরা শ্রেণী কে পড়া দিতে না পারলে প্রধান শিক আমাদের ছবি তার মোবাইলে তুলে নিয়ে যেতেন। কখনো পড়া না পাড়লে তিনি আমাদের হাত দিয়ে শরীরে থাপ্পর দিতেন।
তবে সফুরা খাতুন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক রফিকুল ইসলাম জানান, গত মাসের মতো আজকেও তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের ভুল বুঝিয়ে ও প্ররোচিত করে বিােভে বাধ্য করা হয়েছে । আমার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের করা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। একটি প তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও জানান, খণ্ডকালীন দুই শিক পদ করার পর নতুন করে দুইজন শিক নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ম্যানেজিং কমিটি। আজকে ছিল তাদের নিয়োগ পরীা। এই পরীা বানচাল করার জন্যই ছাত্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
তিনি আরো বলেন, এসব ছাত্রীরা হচ্ছে কোমলমতি। তারা এখনো ষড়যন্ত্র কি তা বুঝে না। তাদেরকে ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা বলানো হচ্ছে। দীর্ঘ দিন বিদ্যালয়ে প্রধান শিক ছিল না। আমার যোগদান কেউ কেউ ভালো ভাবে নেয়নি।
বিদ্যালয়ের নতুন ভবন, শিার সুষ্ঠু পরিবেশ, লেখা পড়ার মান বৃদ্ধিসহ নানা কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি অল্প সময়ের মধ্যে। আজকে আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ করানো হচ্ছে তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। আমি সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।
এই শিাপ্রতিষ্ঠানের বেশ কয়েকজন শিকিার সাথে কথা বলে জানা গেছে অন্য তথ্য। সাবেক শরীর চর্চা বিষয়ক শিকিা সুমিতা নাথ, গানের শিকিা শাহীন চৌধুরী, ইংরেজী শিকিা ফরিদা আক্তার, সমাজ বিজ্ঞান শিকিা শাসচ্ছুন্নাহার শিলা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আমরা কখনো প্রধাণ শিক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের করা অভিযোগের বিষয়টি জানতে পারিনি।
২০১৯ সালে রফিক স্যার এখানে প্রধান শিক হিসেবে যোগদান করেন। এর পরে করোনা কারণে প্রায় দুই বছর বিদ্যালয় বন্ধ ছিলো। গত বছরের শেষের দিকে যখন বিদ্যালয় চালু হয় তখন থেকে এখন পর্যন্ত রফিক স্যার আমাদের সাথে এমন কোন আচরণ করে নাই যাতে তার অন্য কোন উদ্দেশ্যর প্রকাশ পায়।
এই বিদ্যালয়ের দু,জন খন্ডকালীন শিক ছিলেন সোহেল ও বিল্লাল । ২৫ সেপ্টেম্বর তারা পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে চাকরি ছেড়ে দেয়। সেই শিকদের আবার ফেরত আনার জন্য ছাত্রীরা দাবী করে ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে স্কুলের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিােভ করে।
পরে স্কলের সভাপতি সফর আলী ভুইয়া দুই শিকের পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করে তাদের স্থলে নতুন দুইজন শিক নিয়োগের উদ্যোগ নেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় নতুন দুই শিকের নিয়োগ পরীার সময় নির্ধারন করা ছিল। সেই নিয়োগ পরীা বানচাল করার জন্যই আজকে শিার্থীদের রাস্তায় নামার চক্রটি। এবং রাতের বেলা বেশ কয়েকটি ব্যানার করে দেয়।
এদিকে স্থানীয়দের একটি সুত্র জানায়, পদত্যাগী খণ্ডকালীন দুই শিকসহ বিদ্যালয়ের একটি চক্র প্রধান শিক বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে আসছে। অনেক অবৈধ সুযোগ সুবিধা বন্ধ হয় গেছে চক্রটির।
পদত্যাগি দুই শিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা শিক দীর্ঘদিন থেকে ওই স্কুলের শিার্থীদের প্রাইভেট পড়াতেন। এই প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে তারা পরীার আগেই প্রাইভেট শিার্থীদের কাছে কৌশলে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দিতেন।
এতে করে তার শিার্থীরা পরীায় ভালো ফলাফল করতো। শিার্থীরা ভালো ফলাফল করায় তাদের প্রাইভেট শিার্থী ব্যাপকভাবে বাড়তে থাকে।
প্রধান শিক যোগদান করার পর তিনি নিজেই এসব প্রশ্নপত্র তার নিয়ন্ত্রনে রেখে তৈরী করতেন। এরফলে ওই দুই শিকের প্রাইভেট শিার্থীরা এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
এসব নানাবিধ কারনেই প্রধান শিকের বিরুদ্ধে প্রাইভেট পড়া শিার্থীদের ফুঁসলিয়ে বিদ্যালয়ের সাধারণ শিার্থীদের মাধ্যমে এ আন্দোলন করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এদিকে নির্ধারিত সময়ের কিছুটা বিলম্বে শিক নিয়োগ পরীা সম্পন্ন হয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort