সোনারগাঁ প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বেফাস বক্তব্য দিয়ে বিতর্কিত নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বারদী ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বাবুল ওরফে চুম্মা বাবুল ক্ষমা চেয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া তার একটি ভিডিও নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে দেশ বিদেশে তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে। এতে দেখা যায় ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল তার এলাকার একটি ওয়াজ মাহফিলে প্রকাশ্যে বলেন, আমার এলাকায় প্রবেশ করতে হলে প্রধানমন্ত্রীকেও আমার অনুমতি নিতে হবে। তার এমন বক্তব্যে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও জনসাধারন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তার এমন দাম্ভিকতা দলীয় হাইকমান্ডের নজরে আসে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শুক্রবার (১৮ ফেব্রæয়ারি) সংবাদ সম্মেলন ডেকে ক্ষমা চান বারদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বাবুল ওরফে চুম্মা বাবুল।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন আদর্শের সৈনিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন কর্মী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টির কারণে তিনি সোনারগাঁ উপজেলার বারদি ইউনিয়ন পরিষদে (নৌকা প্রতিক নিয়ে) বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ একটি কুচক্রী মহল নানাবিদ ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তার ওয়াজ মাহফিলের একটি বক্তব্য এডিট করে আগে ও পরের কথাগুলো কেটে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপ-প্রচার করছে ও সামাজিক এবং রাজনৈতিকভাবে তাকে হেয়-প্রতিপন্ন করছে।
তিনি আরো জানান, গত ১২ই ফেব্রুয়ারী রাতে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভাষাগত ত্রæটি হয়েছে। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাই।
শুক্রবার বিকেলে উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তার একটি রেষ্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি তার সকল দায় স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের প্রতিটি নেতাকর্মী যারা ব্যথিত হয়েছেন, তাদের কাছেও ক্ষমা চাই। তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যতে যে কোন বক্তব্য দেয়ার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করব। আমাকে আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের পতাকা তলে থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে উন্নয়নের অগ্রগতির মহাসড়কে থেকে যেন কাজ করতে পারি এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, একটি কুচক্রী মহল নির্বাচনের পূর্বে ও পরে আমাকে হেয় করার জন্য আমার প্রতিটি কাজে বাঁধার সৃষ্টি করছে। পরে তিনি দেশ ও জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে বিতর্কিত ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন।
এদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যানের বেফাঁস বক্তব্যের বিষয়সহ বিভিন্ন ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগ শনিবার জরুরী সভা আহবান করেছেন।
উল্লেখ্য, স¤প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বারদী ইউপি চেয়ারম্যান বাবুলের বেফাঁস বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান বেফাঁস ও অশালীন বক্তব্যের কারণে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের আহŸায়ক কমিটির সদস্য পদ থেকে তাকে সাময়িকভাবে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। একই সাথে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে।