বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের জন্ম। ভাষা আন্দোলনের সুতিকাগার এই নারায়ণগঞ্জ। শামসুজ্জোহা সাহেবের নারায়ণগঞ্জ, মোস্তফা সারোয়ারের নারায়ণগঞ্জ। সংগ্রামী নারায়ণগঞ্জের এক নেতা শামীম ফাইটার পলিটিশিয়ান। শামীম লিডার অব অ্যাকশন। তার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের সিটি করপোরেশনের জনমানুষের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। এবং আজকের সভায় একই মঞ্চে দুজন এসেছেন। আমি অসুস্থতার পর প্রথম সরাসরি নারায়ণগঞ্জে একটি জনসভায় এসেছি। ভার্চুয়ালি অনেক সভা করেছি। আমার আসা সার্থক হয়েছে। কারণ এখানে একই মঞ্চে শামীম-আইভীসহ সবাই বসে আছে। নারায়ণগঞ্জের শক্তি হচ্ছেন এরা।
রোববার (২৩ অক্টোবর) বিকালে ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদলকে পুনরায় কমিটির এই দুই পদে বহাল রাখার ঘোষনা দেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, আগামীতে কঠিন দিন আসবে। নারায়ণগঞ্জের মানুষ বক্তৃতা শুনে , এই দুযোর্গের মাঝেও আছে। খেলা হবে? কিসের খেলা? ভোট চুরির বিরুদ্ধে খেলা হবে। ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে খেলা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে খেলা হবে। লুটপাটের বিরুদ্ধে ,ভুয়া ভোটার তালিকার বিরুদ্ধে, নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে, গুম খুনের বিরুদ্ধে খেলা হবে। কত মানুষকে তোমরা হত্যা করেছো। ঢাকায় বড় বড় কথা বলে, তারা নাকি বাঁধা পাচ্ছে। আওয়ামীলীগের অফিসের সামনে ২৩ নম্বরে ২১ শে ফেব্রুয়ারি আলোচনা সভা পিটিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে যে দল, এদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। রাজপথে মোকাবেলা হবে। আসল মোকাবেলা হবে, ডিসেম্বরে। ত্বত্তাবধায়ক ভুলে যান। উচ্চ আদালত বাদ দিয়েছে, আমাদের কি! দুনিয়ার কোন দেশে ত্বত্তাবধায়ক নেই। অন্য যেকোন দেশে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়, আমাদের সংবিধানেও সেইভাবেই নির্বাচনের বিষয় উল্লেখ আছে। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে হবে। সরকার কোন হস্তক্ষেপ করবে না। সহযোগিতা করবে। বিএনপির মতো গুন্ডা, হুন্ডা নিয়ে এগারোটার আগে ভোট শেষ! এর বিরুদ্ধে খেলা হবে।
এখন কি হচ্ছে? বহমান নদীর তরঙ্গ বিক্ষোভ। জনসভা কয়েক হাজার ,৩৫-৭৫ হাজার মানুষ নিয়ে। আমাদের নারায়ণগঞ্জে এখানে লক্ষ লোক এসেছে। লক্ষ লোক আমাদেরই। এই লক্ষ লোক নিয়েই অ্যাকশন হবে। নারায়ণগঞ্জের মানুষ সংগ্রামী। এখন নদী তরঙ্গ বিক্ষোভ হচ্ছে। নভেম্বরে সাগর, ডিসেম্বর বিজয়ের মাস, এই মাসে জনতার সমুদ্রের গর্জন হবে। ফখরুল সাহেব কান পেতে শুনতে থাকুন। তরঙ্গ বিক্ষোভের পর আসবে সাগরের গর্জন।
বাংলার জনগন চেহারা না, উন্নয়ন দেখে ভোট দেয়। ১৩ বছর আগে কেমন ছিল নারায়ণগঞ্জ, এখন কেমন। নারায়ণগঞ্জে কমিটি একটা হবে। নতুন নেতাও তো আসতে দেন না, কি করে আসবে? মশারির মধ্যে মশারি টানায়। বসন্তের কোকিল আছে, দু:সময়ের কর্মীরা নাই। এই আওয়ামীলীগের দরকার নাই। কিছু মানুষ আছে, টাকা ছাড়া কিছুই বুঝেনা, আর কত টাকা দরকার তাদের! দেশের মানুষ সব লক্ষ করে। কে কি করে শেখ হাসিনাও জানে। এখানে সভাপতি, সাধারন সম্পাদক মাথা নাড়ছেন। পদ বানিজ্যের কথা যেন না শুনি। ডেকে ডেকে পকেটের লোক বানাবেন, চলবেনা। ঢাকায় নেত্রী কোন কমিটি পুঙ্খানুরূপে, তিনি নির্দেশ দিলে অনুমোদন দেওয়া হবে। এবার তদন্ত করে খোঁজ –খবর নিবো। পয়সা খেয়ে যারা কমিটি করে, তারা তলে তলে আওয়ামীলীগের সাথে বিশ^াস ঘাতকতা করে। এধরনের নেতা আমাদের দলের প্রয়োজন নেই। মোটেও ঠিক না, কে কি করেন সব জানি। মাথা নাড়ছেন অনেকেই। কে কি করছেন জানি। ভালো হয়ে যান, নিজেদের সংশোধন করুন। সৎ হতে চেষ্টা করুন। রাজনীতিতে বিএনপির ক্ষমতা দখল হচ্ছে লক্ষ। অর্থপাচার এটাই তাদের লক্ষ্য। কিন্তু আওয়ামীলীগ বঙ্গবন্ধু আদর্শে এগিয়ে যাচ্ছে। তৃনমূলের সাথে ঘনিষ্ঠ একটি দল। আওয়ামীলীগের ত্যাগী কর্মীদের সাথে প্রতারণা করবেন না। এতে আওয়ামীলীগ দুর্বল হয়ে যায়। এখন এসে ভীড় করেন অনেকে। দুঃসময় এলে তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না।
জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামীলীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কার্যকরি পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট রিয়াজুল কবির কাওছার, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী ও সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও নজরুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।