“ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থাপনায়,ন্যায্যতা” এ প্রতিপাদ্য নিয়েএ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘মুজিব বর্ষে শপথ করি, প্লাস্টিক পন্য বর্জন করি’ এ শ্লো-গানে র্যালি ও আলোচনাসভার মধ্যদিয়ে শরীয়তপুরে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস পালিত হয়েছে।
দিবসটি পালনের লক্ষে সকাল ১০টায় জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে একটি বর্নাঢ্য র্যালি বাহির হয়। র্যালিটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তৌছিফ আহমেদ এর সভাপতিত্বে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলাপ্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনদীপ ঘরাই। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শরীয়তপুর জেলা ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক সুজন কাজি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান বলেন, রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকই ভোক্তা। একজন ভোক্তা হিসেবে রয়েছে তার ‘ভোক্তা অধিকার’। এ অধিকার সংরক্ষণের প্রথম পদক্ষেপ হলো জনসচেতনতা বৃদ্ধি। কিন্তু সে সচেতনতা সৃষ্টি না হওয়ায় ভোক্তারা পদে পদে বঞ্চিত হচ্ছে তাদের অধিকার থেকে। জাতির পিতারকন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রমজানের পূর্বেই ১ কোটি পরিবারকে ৫ টি পন্য ন্যয্যমূল্যে বিতরন করেন। এতে দেশের প্রায় ৫ কোট মানুষ উপকৃত হবে। সরকারি সংস্থা গুলো দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। আশা করছি দ্রুতই বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রনে আসবে।প্রধানমন্ত্রী আন্তরিকতা ও জনকল্যানে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহনের ফলে বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে।
তিনি বলেন, ১৯৬২ সালের ১৫ মার্চ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি কংগ্রেসে ভোক্তার স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে বক্তৃতা দেন। ভোক্তার চারটি অধিকার সম্বন্ধে তিনি আলোকপাত করেন। এগুলো হলো- নিরাপত্তার অধিকার, তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার, পছন্দের অধিকার এবং অভিযোগ প্রদানের অধিকার। ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘ কেনেডি বর্ণিত চারটি মৌলিক অধিকারকে আরও বিস্তৃত করে অতিরিক্ত আরও আটটি মৌলিক অধিকার সংযুক্ত করে। কেনেডির ভাষণের দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে দিনটিকে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস হিসাবে বৈশ্বিকভাবে পালন করা হয়।
বাংলাদেশে ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণ ও ভোক্তা-অধিকার বিরোধী কাজ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে ২০০৯ সালে সরকার ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করে। এ আইন বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এ অধিদপ্তর।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘মুজিব বর্ষে শপথ করি-প্লাস্টিক দূষণ রোধ করি’জেলা প্রশাসক বলেন,‘খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণ প্রতিরোধে বিশেষ নজরদারি রাখা প্রয়োজন।’‘ভোক্তা অধিকার সর্বজনীন। পণ্যের ন্যায্যমূল্য ও গুণগত মান নিশ্চিত করার মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯’ প্রণয়ন করা হয়েছে। আইন প্রণয়নের পাশাপাশি এর যথাযথ প্রয়োগ অত্যন্ত জরুরি। আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা।’‘আওয়ামী লীগ সরকার উন্নত দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের জনগণের জন্য নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ ও উন্নয়নের বিষয়ে অধিক মনোযোগী।’ ‘জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সব কর্মচারী ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে অগ্রগতির ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’‘একইসঙ্গে এই অধিদপ্তর ব্যবসায়ী ও ভোক্তার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আমি মনে করি। সকল ব্যবসায়ী ও ভোক্তার প্রতি আমার অনুরোধ, প্রত্যেককেই অধিকার সচেতন হওয়ায় পাশাপাশি দায়িত্বশীল হতে হবে।’