নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বেড়েছে ভাইরাস জ¦রের প্রকোপ। এতে সবচাইতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও বাদ যাচ্ছে না এ রোগের কবল থেকে। অনেকে হাসপাতাল-ক্লিনিকে চিকিৎসক না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন।
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বার ও ক্লিনিকে রোগী বাড়ায় হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। শিশু রোগ চিকিৎসকদের গভীর রাত পর্যন্ত চেম্বারে রোগী দেখতে হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলার বরপা, কাঞ্চন, মুড়াপাড়া, হাটাবো, জাঙ্গীর, ইছাপুরা, মাসাবো, নোয়াপাড়া, ইছাখালিসহ আশপাশের এলাকায় ভাইরাস জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক।
পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালেও এ রোগীর সংখ্যা কম নয়। ভাইরাস জ¦রকে ডেঙ্গু জ্বর মনে করে অনেকে শারিরিক মানসিক আতঙ্কে রয়েছে। রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই অতিমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিকের সেবন করে স্বাস্থ্য হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
সুষ্ঠু ও সময় উপযোগী চিকিৎসা সেবা বৃদ্ধি পাওয়ায় রূপগঞ্জ উপজেলা স্বস্থ্য কমপ্রেক্সে রোগীর চাপ সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা বরপা এলাকার বাসিন্দা ও শেখ রাসেল ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ঈশিকা জানায়, সে গত এক সপ্তাহ ধরে ঠান্ডা, কাঁশি ও ভাইরাস জ¦রে ভুগছে।
দাউদপুর ইউনিয়নের দেবই এলাকার ইব্রাহীর মিয়া জানান, গত ৪/৫ দিন ধরে তিনি জ্বর ,গলাব্যাথা ও কাঁশিতে ভুগছেন।
রূপগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ মাহমুদুল্লাহ বলেন, গত ১৫ দিন ধরে ভাইরাস জ্বর আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। হাসপাতালগুলোতে দৈনিক গড়ে ৩০০ থেকে ৫০০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসছে।
ভুলতা মেমোরী হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ ফারুকুল ইসলাম বলেন, জ¦রে আক্রান্ততদের সর্দি, হাঁচি ও কাশি থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। অসতর্কতায় অন্যদের শরীরে প্রবেশ করছে। ফলে পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে ওই পরিবারের অনূরাও এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ওঠে।
রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকার ইউএসবাংলা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক নবজাতক ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ দেলোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, ভাইরাস জ্বর এক ধরনের ছোঁয়াছে রোগ। জ্বরে আক্রান্ত হলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে হবে।
শরীর পানি দিয়ে মুছে দিতে হবে। রোগীকে তরল জাতীয় খাবার দিকে হবে। এতে কিছু দিনের মধ্যেই রোগী সুস্থ্য হয়ে উঠবে।
রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আইভি ফেরদৌস বলেন, ভাইরাস জ্বরে আক্রান্তদের নিয়মিত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ডেঙ্গু জ্বর ও ভাইরাস জ্বরে আক্রান্তদের সেবা দিতে চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
একটু সচেতন হলেই এ জ্বর থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করা যায়। পাশাপাশি বেশি কাশি অন্য কোনো ধরনের জটিলতা থাকলেও ওই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা উচিত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।