মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাষ্টি, লেখক গবেষক মফিদুল হক বলেন, স্বাধীন দেশে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের প্রাসঙ্গিকতা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা যেন অগ্রগতির পরিবর্তে ক্রমঅধঃপতিত হচ্ছি। আমাদের সাস্কৃতিক মূল্যবোধ অন্ধকারাচ্ছন্ন হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও আমরা তা ধরে রাখতে পারছি না।
শুক্রবার (৭ জুন) সাংস্কৃতিক সংগঠন আনন্দধারার আয়োজনে নারায়ণগঞ্জের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তনে রবীন্দ্র-নজরুর জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন।
সংগঠনের সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠনে আরও বক্তব্য রাখেন কবি সাংবাদিক হালিম আজাদ ও শিল্পী জীবন চৌধুরী। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক উত্তম সাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেন জিয়াউল ইসলাম কাজল ও ফাহমিদা আজাদ।
মফিদুল হক আরও বলেন, আমরা বিশ^াস করি আমাদের সংস্কৃতিতে যে অমিয় শক্তি তা দিয়ে আমরা সকল অন্ধকারের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার শক্তি পাবো। আমাদের এ যাত্রাপথে, এই দুর্যোগ-দুর্বিপাকে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল আমাদের সহায় হবেন।
রফিউর রাব্বি বলেন, যে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল তাঁদের কর্মে, সৃষ্টিতে সতত-সর্বদা ধর্ম-বর্ণ-জাতীয়তাবাদ ও সম্প্রদায়ের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষকে মানুষের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠার কথা বললেন, বিশ^মানবতার কথা বললেন, সমতার কথা বললে আজকে তাঁদেরকেই ধর্মীয় কাঠামোতে আবদ্ধ করার, খণ্ডিত করার, বিভাজিত করার হীন-প্রচেষ্টা চলছে। পাকিস্তানের শাসনামলেও তাই ছিল। তা হলে প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কতটা এগিয়েছে? একদিকে কুশিক্ষা, অন্যদিকে উগ্র ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা আমাদের সংস্কৃতির চিরায়ত মূল্যবোধকেই উপরে ফেলতে উদ্যত হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণ আজ জরুরি হয়ে পড়েছে।
পরে সকালে বিভিন্ন বিভাগে অনুষ্ঠিত রবীন্দ্র সংগীত ও নজরুলগীতি প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সব শেষে সংগঠনের শিল্পী, জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও বসন্তবাহার সংগীত একাডেমির শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করে।