পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ব্যাট হাতে স্বভাবসুলভ ছিলেন না সাকিব। ২ ম্যাচে মোটে ৩৮ রান করেছিলেন। তবে বল হাতে পুরোপুরি সফল না বলা গেলেও একদম হতাশ করেননি। সিরিজে পাঁচটি উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। ব্যাট হাতে এমন দুর্দিনে সাকিবের ওপর ভরসা রেখেছিল কাউন্টি ক্রিকেটের দল সারে। ব্যাট হাতে আস্থাভাজন না হতে পারলেও বোলিংয়ে ঠিকই পুষিয়ে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ভারত সিরিজের আগে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিতও দিলেন। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বাঁহাতি স্পিনার যে তুরুপের তাস হতে পারেন সেই বার্তাই দিয়ে রাখলেন।
মাঠের বাইরের সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে। তবে ২২ গজের সাকিবকে নিয়ে প্রশ্ন তোলার দুঃসাহস যে কারও নেই। ১৩ বছর পর ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে খেলতে গিয়ে সেটিই আবার প্রমাণ করলেন। বল হাতে দলের প্রত্যাশার চেয়ে বেশিই দিয়েছেন নন্দিত এই অলরাউন্ডার। সমারসেটের বিপক্ষে সারের হয়ে প্রথম ইনিংসে চার উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও পাঁচজন ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন। সেই সঙ্গে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০৬ ম্যাচ খেলে ৩৫০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন সাকিব। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৯৩ রানে ৯ উইকেট তুলে নিয়েছেন সাকিব। যেটি ১২ ম্যাচের কাউন্টি ক্রিকেট ক্যারিয়ারে সেরা বোলিং ফিগার। এর আগে ২০০৪-০৫ মৌসুমে খুলনা বিভাগের হয়ে সিলেট বিভাগের বিপক্ষে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১১৪ রানে ৯ উইকেট পেয়েছিলেন।
সমারসেটের টম ব্যান্টনকে বোল্ড করে দীর্ঘ একটার অপেক্ষার শেষও টেনেছেন সাকিব। কেননা ২৭ মাস ও ১৬ ইনিংস পর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ফাইফার পেয়েছেন। এর আগে সবশেষ ২০২২ সালের মে মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯৬ রান খরচায় ৫ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। ২০১০ সালে উরস্টারশায়ারের হয়ে মিডলসেক্সের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে আগুনঝরা বোলিং করেছিলেন মি. অলরাউন্ডার। যেখানে মাত্র ৩২ রানে নিয়েছিলেন ৭ উইকেট। যেটি এখন পর্যন্ত পেশাদার ক্রিকেটে সাকিবের ক্যারিয়ারসেরা বোলিং।
সাকিবের দুর্দান্ত বোলিংয়ের কল্যাণে সারের কপালে বইছে জয়ের সুবাতাস। সমারসেটের বিপক্ষে ৭৬ ওভারে মাত্র ২২১ রানের সহজ লক্ষ্য পেয়েছে তারা। তবে ব্যাটিং নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটছেই না। প্রথম ইনিংসে ২৪ বলে মাত্র ১২ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেছিলেন সাকিব। শিরোপার ভাগ্য নির্ধারণ করে দেওয়া লড়াইয়ে ব্যাট হাতে কতটা পুষিয়ে দিতে পারবেন সেটিই দেখার বিষয়। যদি সাকিব ব্যাটিংয়ের সুযোগ নাও পান তার আক্ষেপ থাকার কথা নয়। কেননা সারেকে চ্যাম্পিয়ন করার মঞ্চটা তো তিনিই করে দিয়েছেন।