বিএনপি বিদেশি শক্তিকে দিয়ে দুই বছরের জন্য এক-এগারো সরকারের মত সরকার বসানোর পরিকল্পনা করছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপিকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেছেন, এখন আবার বিদেশি শক্তিকে দিকে ওয়ান ইলেভেনের মতো দুই বছরের জন্য নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক একটা বসাবেন। কেমনে এটা মনে করলেন? সব খবর আমরা রাখি। ওয়ান ইলেভেনের দু:স্বপ্ন দেখে আর লাভ নেই। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর হাজারীবাগে আয়োজিত এক শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ওই সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এখনো মনে মনে মন কলা খাচ্ছে। মনে করছে এক তারিখের মতো, অক্টোবর মাস। সেই তত্ত্বাবধায়ক। নিজের দলের ফখরুদ্দীন, মঈনুদ্দিনকে বসাবে। এটা দিবাস্বপ্ন। আমরা বেঁচে থাকতে সেটা আর হবে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির নেতারা বলছে, শেখ হাসিনার সময় শেষ। বিএনপির নেতারা বলছে, আওয়ামী লীগের সময় শেষ। আমি একটু জানতে চাই, ফখরুল সাহেব, আমির খসরু সাহেব। কবে শেষ? দিন তারিখ বলুন। ১৪ বছর ধরে তো শুনছি। বলে রোজার ঈদের পর, কোরবানির ঈদের পর, তারপর বলে বর্ষার পর, পরীক্ষার পর। এই বছর না ওই বছর? আন্দোলন হবে কোন বছর? দেখতে দেখতে ১৪ বছর। মানুষ বাঁচে কয় বছর?
বিএনপির উদ্দেশ্যে এ সময় তিনি আরো বলেন, ফখরুল সাহেব, সময় যখন শেষ প্রেস কনফারেন্স করর সময়টা জানিয়ে দিন। আমরা এক গোছা গোলাপ, রজনীগন্ধার নিয়ে হাজির হবো। সময়টা বলেন। যেন আমরা সময় মত আপনাদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে পারি।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কত কথা এরা বলে। আজকে আওয়ামী লীগ সারা বাংলাদেশে জনগনের কাছে একটা বিষয় আমরা জানতে চাই, আপনারা কি মনে করেন শেখ হাসিনা দেশটা ভাল চালিয়েছে? আপনারা কি মনে করেন, এত দিনে তাপমাত্রা, আল্লাহর কি রহমত, তাপমাত্রা কমে গেছে। লোডশেডিং কমে যায়নি? ফখরুল আপনার দোয়া। শকুনের দোয়া কাজে লাগে নাই। তাপমাত্রা আরও কমবে। লোডশেডিং আরও কমে যাবে। কয়টা দিন অপেক্ষা করেন।
এ সময় চলতি বছরে উত্থাপিত বাজেট প্রসঙ্গে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, বাজেটে একটু ঘাটতি ছিল। জাপান সহযোগীতা করেছে। সোয়া চারশো মিলিয়ন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা যখন বিদেশে সম্মানিত হয়, বাংলাদেশের মানুষ খুশি হয়। কষ্ট পায় বিএনপি। তাদের কলিজা শুকিয়ে যায়। শেখ হাসিনা সম্মান আনছে দেশের জন্য, এটা যখন দেখে তখন তাদের মুখের দিকে তাকানো যায় না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি এবং তাদের দোষরা মনে করে তাদের মনের কথা সেদিন তারা বলবে, নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়েছে, সুষ্ঠু হয়েছে, যে দিন আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হলে, তারা কোনো দিন পরাজয় মেনে নেবে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি আইন অমান্যকারী দল। তারা আইন মানে না, বিচার মানে না, নিরপেক্ষ সালিশ মানে না। তারা কেন কথায় কথায় বলে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক বাদ দিয়েছে? বাদতো দিয়েছে উচ্চ আদালত।
নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ প্রস্তুত উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা প্রস্তুত আছি। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। যারা বাধা দেয়, যুক্তরাষ্ট্রে ভিসানীতি তাদেরকে বাধা দেয় কিনা, আমরা তা দেখতে চাই।
গাজীপুর, খুলনা, বরিশালের মতো সামনের সকল নির্বাচন সুন্দর হবে বলেও জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, সংবিধানের নিয়ম কারও জন্য অপেক্ষা করে না।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরসহ মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।