বহু বছর ধরে একসঙ্গে অনেক লড়াইয়ের সঙ্গী লিওনেল মেসি ও অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। ২০০৮ সাল থেকে আর্জেন্টিনার হয়ে একসঙ্গে খেলছেন দুই বন্ধু। দুজনের ঝুলিতে অনেক অর্জন জমা পড়লেও ছিল না বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফিটা। ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে এসে সেটিও জিতলেন দুজনে।
ডি মারিয়া ইতি টেনে দিয়েছেন ফুটবল ক্যারিয়ারের। মেসি খেলবেন আরও কিছু দিন। সেটি হতে পারে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত। ২০২২ বিশ্বকাপের পর কোপা আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বও জিতলেন দুজনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। গত জুলাইয়ে কোপা আমেরিকা ফাইনালের পর আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেন ডি মারিয়া। ওই ম্যাচের পর চিলির বিপক্ষেই প্রথম ঘরের মাঠে খেলতে নামে আর্জেন্টিনা।
বৃহস্পতিবার বুয়েন্স আয়ান্সে চিলির বিপক্ষে বিশেষ এই ম্যাচটিতে ৩-০ গোলের জয় পায় আর্জেন্টিনা, আর এই জয় ডি মারিয়াকে উৎসর্গ করেছেন তারা। ম্যাচের আগেই তাকে বিদায়ি সংবর্ধনা জানায় আর্জেন্টাইনরা।
ম্যাচের আগে আর্জেন্টিনার সব ফুটবলার গায়ে জড়ান ডি মারিয়ার ‘১১’ নম্বর জার্সি। জায়ান্ট স্ক্রিনে তখন ভাসছিল ১১ নম্বর জার্সিতে ফুটবল মাতানো অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার ক্যারিয়ারের সব অর্জন। চমকটা আসে একটু পর। বড় স্ক্রিনে ভেসে উঠে লিওনেল মেসির একটি ভিডিও। প্রিয় বন্ধুকে নিয়ে মেসি দিতে লাগলেন আবেগঘন বার্তা। যা দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে উঠেন ডি মারিয়া।
এদিন মাঠে থাকতে পারতেন মেসি। তবে পুনর্বাসনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় এই ম্যাচে থাকা হয়নি খুদে জাদুকরের। ডি মারিয়ার বিদায়ি বার্তায় দীর্ঘদিনের সতীর্থ ও কাছের বন্ধুকে উদ্দেশ করে মেসি বলেন, ‘আমি খুবই দুঃখিত, তোমার বিশেষ উপলক্ষের সময়টাতে থাকতে পারলাম না। আশা করি পরিবার ও কাছের মানুষদের নিয়ে তুমি এই রাতটি উপভোগ করেছ। তুমি আমাদের যা দিয়েছ, এই সম্মাননা তোমার প্রাপ্য।’
ভিডিওবার্তায় মেসি আরও বলেন, ‘ব্যক্তিজীবনে আমাদের যা কিছু বলার ছিল, আমরা একে অপরকে বলেছি। একসঙ্গে এত বছর কাটাতে পারার সৌভাগ্য হয়েছে আমাদের। কে ভেবেছিল জাতীয় দলে আমাদের যা কিছুর মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, যেমন অভিজ্ঞতা হয়েছে, সেগুলো সব ছাপিয়ে আমরা প্রতিটি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে পারব। উপভোগ করো, কারণ এটি তোমার প্রাপ্য। আমরা তোমাকে অনেক মিস করব।’
ম্যাচ শেষে সতীর্থরা উদযাপনে মেতে উঠেন দীর্ঘদিনের সতীর্থ ডি মারিয়াকে শূন্যে ভাসিয়ে। সতীর্থদের উচ্ছ্বাসে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন ডি মারিয়াও। এসময় ডি মারিয়া বলেন, ‘আমার ভেতরে অনেক ধরনের অনুভূতি হচ্ছে। এখন আসলে কথা বলা কঠিন। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের যারা আমার সঙ্গে কাজ করেছে, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। তাদের সঙ্গে ১৬ বছর কাটিয়েছি। আমি কঠিন জীবন পার করেছি এবং শেষে তাদের সঙ্গে আনন্দ নিয়ে শেষ করেছি। এখন আমি শুধু আরেকজন সমর্থক মাত্র। এখন এখানে আসব আমার পরিবার নিয়ে খেলা দেখতে। কোপা আমেরিকা ও বিশ্বকাপে আসব এবং তাদের সমর্থন করব।’