নিজস্ব প্রতিনিধি- নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানাধীন বাগবাড়ী ৪৭ নং লাল মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আল আমিন হোসেন এর বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূর্ণীতি ও কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ এনে স্কুলের অভিভাবকদের পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাথমিক
শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে অভিযোগ উঠে এসেছে। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ মোট ৮ জন শিক্ষক রর্মরত এবং ২ টি পদ এখনো শূন্য রয়েছে। শিশু থেকে ৫ শ্রেণী পর্যন্ত শিশুদের পাঠদান করা হয়। । স্কুলে মোট ৪৮০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে ২৪ অক্টেবর বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে অভিভাবকদের সাথে কথা বললে প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকদের নিয়ে পক্ষ বিপক্ষে মতামত উঠে আসে। অনেকের মতে প্রধান শিক্ষক তার বাসায় কোচিং পড়ালেও আমরা স্বেচ্ছায় আমাদের ছেলে মেয়ে কে পড়াতে দিয়ে থাকি এর জন্য কোন চাপ প্রয়োগ করেন না। এই স্যার আসার পর স্কুল ভালো ভাবে চলছে। এর আগে শিক্ষক ও অভিভাবক সবাই মিলে আড্ডা দিতো। কিন্তু অনেক অভিভাবক এর ব্যতিক্রম বলেন, এখানে শিক্ষার্থীদের কোচিং করাতে বাধ্য করা হয় এবং যারা কোচিং পড়ে তাদের মধ্যে প্রশ্ন পত্র ফাঁস করা এবং তাদের যত্ন সহকারে পড়ানো হয়। না পড়লে তাদের পরিক্ষায় নাম্বার কম ও অবহেলার চোখে দেখে থাকেন। সেই সাথে সরকারি নিয়োগ ছাড়া একজন পিয়ন নিয়োগ করেন যার মাসিক বেতন ৫হাজার টাকা। সে টাকাও অভিভাবকদের কাছ থেকে নেয়া হয়ে থাকে বলে জানান।
এ বছরের মে মাসে শান্ত(২৫) নামে একজনকে পিয়ন হিসেবে নিয়োগ করেন প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটি । সে কদম রসুলের বিবিএ ২য় বর্ষে অধ্যায়নরত । সকাল ৮ টা হতে ৫ টা পর্যন্ত সে স্কুলে কাজ করে। সংসারের খরচ বহন করতে সে এই চাকুরী করার জন্য বর্তমানে লেখা পড়া বন্ধ হয়ে আছে বলে জানান।
এ সময় সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় নারায়ণগঞ্জ জেলা’র প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার এ এন এম মাহবুব আলম অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্কুলে ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করতে আসেন এবং অভিভাবকদের সাথে কথা বলেন। এ সময় তার সাথে কথা বললে তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এখানে এসে অভিযোগের বিষয়ে অনেক অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানতে পারি অনেকের ব্যক্তি মতামতে পক্ষ বিপক্ষ রয়েছে শিক্ষকদের দ্বায়িত্ব পালন নিয়ে। তবে প্রধান শিক্ষকের কিছু অনিয়ম ও অবহেলা রয়েছে বলে আমি কিছুটা বুঝতে পেরেছি। তবে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও স্কুলের টাকা পয়সার হিসাব সে বিষয় গুলো আরো গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
প্রধান শিক্ষক আল আমিন বলেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে অভিযোগের তদন্তে এসেছেন তারা সুষ্ঠু ভাবে তদন্ত করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন বলে আশাবাদী।
স্হানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বললে তারা বলেন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন অনিয়ম ও দূর্ণীতি আমরা মেনে নিবোনা। আমাদের সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠনে শিক্ষকরা তাদের দ্বায়িত্ব পালনে সোচ্চার থাকবেন এবং কোন কিছু প্রয়োজন হলে আমরা সর্বদা পাশে থাকবো। তবে কোমলমতি শিশুদের নিয়ে কেউ বানিজ্যিক চিন্তা ভাবনা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিবো। তবে তার কোচিং বাণিজ্য টা বন্ধ হোক এটা আমরা চাই। অভিভাবকদের সাথে মূলত সমস্যা হচ্ছে তার এই কোচিং বাণিজ্য নিয়ে। স্কুলের পাশে ভাড়া বাড়ি নিয়ে সে এ কোচিং পরিচালনা করে ফলে অনেক সময় স্কুলে সময় না দিয়ে মাঝে মধ্যেই কোচিং পড়াতে ব্যস্ত থাকে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে না দেখলে এলাকায় যে কোন সময় অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে ।তাই শিক্ষকদের এ অবৈধ কোচিং বাণিজ্য বন্ধের দাবী জানান।