যুদ্ধরত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে মিছিল, গান ও আলোচনা অনুষ্ঠান করেছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মিছেল নিয়ে চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যায়। সেখানে শুরুতে যুদ্ধ-বিরোধী সঙ্গীত পরিবেশন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। পরে সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দীপু, ন্যাপ জেলা সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা, বাসদের জেলা সংগঠক এস এম কাদের ও নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অমল আকাশ।
রফিউর রাব্বি বলেন, ১৮৯৭ সাল থেকে উদ্বাস্তু ইহুদিরা নিজেদের নিজস্ব-আবাসভূমি ও আলাদা একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জায়নবাদের উদ্ভব ঘটায়। ১৯১৭ সালে ব্রিটেন তুরস্কের কাছ থেকে জেরুজালেম দখল করে নিলে তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী লর্ড আর্থার বেলফোর এ বিষয়ে একটি অডিনেন্স জারি করেন। তাতে বলা হয়, ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ডে আলাদা ভাবে ইসরায়েলিদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে। এইটি ‘বেলফোর ডিক্লারেশন’ হিসেবে পরিচিত। এর পর ইহুদিরা বিশে^র বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফিলিস্তিনে আসতে থাকে। দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধ শেষে ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডকে দুই ভাগ করে অর্ধেক ফিলিস্তিন ও অর্ধেক ইসরায়েলিদের জন্য দুটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করে। ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিন ছিল ব্রিটেনের অধিনে। সে বছর ১৪ মে ব্রিটিশরা ফিলিস্তিন ছেড়ে চলে আসে। এই ১৪ মে তারিখটিকে ইহুদিরা স্বধীনতা দিবস আর ফিলিস্তিনিরা ভূখন্ড হারানোর কালো দিন হিসেবে পালন করছে। এখন পুরো ফিলিস্তিনের প্রায় ৮০ শতাংশ ইসরায়েলিদের দখলে। নিজ ভূমিতে পারাসী হয়ে প্রায় আশি বছর ধরে লড়াই করে চলেছে ফিলিস্তিনিরা। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্ব নগ্নভাবে সমর্থন দিচ্ছে ইসরায়েলি জায়নবাদীদের। আজ আরব বিশে^র বিভক্তি ইসরায়েলিদের আগ্রাসনকে যেমনি শক্তি যোগাচ্ছে, অন্যদিকে ফিলিস্তিনের ইতিহাস আজ সারা বিশে^ পশ্চিমাদের সভ্যতার নামে বর্বরতার নগ্ন উদাহরণ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।
সমাবেশে বক্তারা পশ্চিমাবিশে^র মানবতাবিরোধী অবস্থানের নিন্দা ও সারা বিশ্বের মানবতাবাদী সংগঠন ও মানুষকে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর এবং সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।