ফতুল্লা লঞ্চঘাটে নানা অনিয়মের মধ্য দিয়ে টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধুমাত্র অতিরিক্ত টোল আদায়ই নয়, টোল আাদায়কারীদের হাতে লাঞ্চিত হতে হচ্ছে অনেককেই। যেখানে মানুষ প্রতি আদায় করা হয় ১০ টাকা পক্ষান্তরে হাস বা মুরগির ক্ষেত্রে টোল আদায় করা হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত।
আর তাই ফতুল্লা লঞ্চঘাট নিয়ে অনেকেই মন্তব্য করেন মানুষের মূল্য ১০ টাকা আর হাস-মুরগির মূল্য দেড় দুইশ টাকা। অতিরিক্ত টোল আদায়সহ যাত্রী হয়রানী রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে ভুক্তভোগী যাত্রীরা।
ফতুল্লা মডেল থানা হতে মাত্র ৫ শত গজ দূরে ফতুল্লার লঞ্চঘাটটি। আর এই লঞ্চঘাটের ইজারাদারের খামখেয়ালী অতিরিক্ত টোল আদায়ের শিকার ও রোষানলে পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত দক্ষিনাঞ্চলের লঞ্চ ভ্রমনের যাত্রীদের।
এ যেন দেখার কেউ নেই, ঘাট ইজারাদারেরা অনিয়মের রামরাজ্যত্ব চালাচ্ছে বলে দাবী ভুক্তভোগি যাত্রীদের। আর এই ঘাট মালিকরা বিশেষ পেশা এবং স্থানীয় কিছু পাতি নেতা, হোমড়া- চোমড়াদের নগদ অর্থ দিয়ে তাদের সহোযোগিতা নিয়ে প্রতিনিয়ত অনিয়মের জন্ম দিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে গত (২৭ ডিসেম্বর) ফতুল্লা লঞ্চঘাটে যাত্রী হয়রানির অভিযোগে দুদক’র এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ শিহাব সালামের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ফতুল্লা লঞ্চঘাটে যাত্রীদের কাছ থেকে বিনা রশিদে প্রবেশ ফি, লাগেজ ফি ও অন্যান্য ফি বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক টিম লঞ্চঘাট ও বিআইডব্লিউটিএ’র অফিস পরিদর্শন করে।
লঞ্চঘাটের কার্যক্রম বিকেল ৪টা থেকে আরম্ভ হয় বিধায় অভিযানকালে বিআইডব্লিউটিএ’র দায়িত্বপ্রাপ্ত আঞ্চলিক কর্মকর্তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যাত্রীদের রয়েছে নানান অভিযোগ তারা ঘাটের লোকদের কাছে এক পর্যায়ে জিম্মি। রাঙ্গাবালী থেকে আসা যাত্রী আবুল হেসোন (৫৫) জানান, আমি একটি বস্তায় লেপ তোষক এবং আরেকটি বস্তায় ব্যবহৃত কাপড় চোপড় নিয়ে আসি, আমার কাছে ৪শ’ টাকা চাওয়া হয় পরে অনুনয় বিনয় করে ১৮০ টাকা দিয়ে মালমাল নিয়ে ঘাট থেকে সড়কে উঠি।
আমতলী থেকে আসা নাজমা বেগম (৩৫) জানান, আমি একটি রাজহাঁস ও একটি মুরগী আনি তারা আমার কাছে ২০০ টাকা দাবি করে আমি তাদেরকে ৫০ টাকা দিতে চাইলে গেটে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন আমার হাঁস-মুরগি জোর করে ছিনিয়ে নেয় এবং বলে ২০০ টাকা না দিলে হাঁস-মুরগি দেওয়া হবে না।
এমনকি গেটে থাকা লোকজন আমার উপর খারাপ আচরণ করে। পরে আমি তাদেরকে ১৫০ টাকা দিয়ে হাঁস মুরগি নিয়ে আসি। এমনি করে প্রতিদিন তারা জোরপূর্বক মানুষকে হয়রানি করছে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা লঞ্চঘাটের ইজারাদার মো. রিপনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। তার দাবী কুচক্রিমহল ঘাটের ইজারার ডাক না পেয়ে ষড়যন্ত্র করছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত ফেরদৌস জানান, ফতুল্লা লঞ্চঘাটে যাত্রী হয়রানি ও অতিরিক্ত টোল আদায় বিষয়টি আমরা জানি না।
অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়টি আমরা শুনেছি। আমরা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।