শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

ফতুল্লার সবুজ-শান্তা দম্পতি আত্মগোপনে নাকি গুম; নেপথ্যে কারা?

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৪.০৩ এএম
  • ৮৮ বার পড়া হয়েছে

ফতুল্লার দক্ষিন শিয়াচরে নিজ জমির উপর বিল্ডিংসহ সকল স্থাপনা বন্ধক রেখে মামুন সরদারের কাছ থেকে ছত্রিশ লাখ পন্চাশ হাজার (৩৬,৫০,০০০) টাকা নিয়ে তা ফেরত না দিয়ে, ঐ জমি স্থানীয় আলী গংদের কাছে বিক্রি করার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছে সবুজ-শান্তা দম্পতি। সবুজ- শান্তা দম্পতির হঠাৎ লাপাত্তা হওয়ার ঘটনায় এলাকায় ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহত্তর তক্কা-শিয়াচরবাসীর মুখে মুখে এখন একটাই প্রশ্ন সবুজ-শান্তা দম্পতি কি নিজেরাই আত্মগোপনে আছে নাকি তাদেরকে কেউ গুম করে রেখেছে!

জানা যায়, সবুজ হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী, ঢাকার ফকিরাপুলে তার হার্ডওয়্যারের দোকান আছে, তিনি ও তার স্ত্রী শান্তা ব্যবসায়ীক কাজে গত ৭ মে নিজ জমিতে ( যা ঢাকা কমার্স ব্যাংকে বন্ধকিকৃত) থাকা স্থাপনা এনআরবিসি ব্যাংকের ৩ টি চেক ও ৬০০ টাকার স্ট্যাম্পের মাধ্যমে বন্ধক রেখে মামুন সরদারের কাছ থেকে এক মাসের জন্য ৩৬ লাখ টাকা ধার নেয়, মামুন সরদারের দায়দেনা পরিশোধ না করে ২৫ মে কমার্স ব্যাংকের দেনা শোধ করে ফকিরাপুল ব্যাংকে বসেই রাতারাতি সবুজের কাছ থেকে জমিটি লিখে নেয় আলী গং, ২৬ মে থেকেই হঠাৎ সবুজের বাড়ীটি স্থানীয় আলী, আসলাম (দিন দশেক আগে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত) ও সোহাগ দখল করে এবং আলী তার পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করে ঐবাড়ীতে।

ভুক্তভোগী মামুন সরদার জানায় যে, স্থানীয় হোসিয়ারী ব্যবসায়ী আলী, সুদ ব্যবসায়ী আসলাম ও সোহাগ জানতো যে সবুজ বাড়ীর স্থাপনা বন্ধক রেখে আমার কাছ থেকে ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে, কিন্তু আমার সাথে কোনোরকম যোগাযোগ বা আলোচনা না করেই সবুজের জমিটি ব্যাংকের দেনা শোধ করে নামমাত্র মুল্যে কিনে জমিতে থাকা বাড়ীঘর ও অন্যান্য স্থাপনা দখল করে আলী গং এবং আমার টাকা পরিশোধ না করার পরামর্শ দিয়ে লুকিয়ে রেখেছে সবুজ-শান্তা দম্পতিকে। আমি, আমার সহকর্মী রাজীব, মাহবুব ২৬ জুন থেকে এপর্যন্ত দক্ষিন শিয়াচরের ঐ বাড়ীতে গিয়ে সবুজ শান্তার খোজ করলে বাড়ীতে থাকা আলী তাদের খোজ জানে না বলে জানিয়ে আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে, মারধরের হুমকি দেয় এবং সেই প্রভাবশালীদের ভয় দেখায়। হুমকি ধামকির এপর্যায়ে তাদের সাথে যোগ দেয় হোসিয়ারী ব্যবসায়ী মিজান। আলী ও সোহাগের এহেন আচরণে আমার সন্দেহ হয় ওরাই সবুজ শান্তাকে কোথাও লুকিয়ে রেখেছে।

পুরো বিষয়টি অবগত করে মামুন সরদার আলী, আসলাম ও সোহাগের নামোল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ দায়েরের পরপর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অভিযুক্তদের থানায় ডাকলে তারা মামুন সরদারের কাছ থেকে সবুজ-শান্তার ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ধার নেয়ার বিষয়টি জানেন বলে জানান। অভিযুক্তরা স্বল্প সময়ের সময়ের মধ্যে সবুজ-শান্তা দম্পতিকে থানায় হাজির করবে বলে আশ্বাস দিলেও কয়েকমাসেও তা পারেনি।

এদিকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর সবুজ-শান্তার খোজ জানতে আবারো আলী ও সোহাগকে থানায় ডাকলে সোহাগ পুলিশকে জানিয়েছিলো যে, গত ২৬ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত আলী সবুজ-শান্তা দম্পতিকে নিজেদের সাথে ঐবাড়ীতে রেখেছেিলো, সবুজ-শান্তা দম্পতির খোজ আলীই জানে।

এলাকাবাসী জানায়, মামুন সরদারের কাছ থেকে সবুজ শান্তা দম্পতি মোটা অংকের টাকা ধার নিয়েছে একথা সকলেই জানে। সব জেনে বুঝেই এই বন্ধকী জায়গাটি কিনেছে আলী গংরা। জমিটি কেনার পর ১৫ দিন সবুজ শান্তাকে ঐ বাড়ীতে রেখেছিলো আলী, ১০ তারিখের পর থেকে ঐ দম্পতিকে আজকে পর্যন্ত আর এলাকায় দেখা যায়নি। হঠাৎ করে গত জুলাই মাসে জমিটি কেনার পরও সেখানে কমার্স ব্যাংকের সাইনবোর্ড লাগায় আলী যা কয়েক দিন পরেই আবার সরিয়ে দেয় তারা।

তাছাড়া জমিটি কেনার পুর্বে প্রায়ই বাড়ীতে ঢুকে সবুজ শান্তাকে মারধর করতো আলী গংরা বলে জানায় এলাকাবাসী।

জেনেশুনে বন্ধকী জায়গা কেনা, রাতারাতি রেজিস্ট্রি করা, হঠাৎ ব্যাংকের সাইনবোর্ড লাগিয়ে আবার সরিয়ে ফেলা, মামুন সরদার ও পুলিশের কাছে অসামঞ্জস্য তথ্য দেয়া সর্বশেষ জমির বিক্রির পরপর কয়েকদিন বাড়ীতে রাখার পর সবুজ শান্তা দম্পতির লাপাত্তা হওয়া- সবই যেন আজব লাগছে। মনে হয় নেপথ্যে যেন কাজ করছে?

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort