জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তৈরি পোশাক শিল্প খাতে শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রয়েছে। এই খাতের কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।
রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ৪টি শিল্পকারখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। গার্মেন্টস কর্মীদের সার্বিক কর্মপরিবেশ খতিয়ে দেখার জন্য তিনি এই পরিদর্শনে আসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মোঃ সেলিম রেজা, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রমুখ।
পরিদর্শনের সময় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নানা বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন। পাশাপাশি মালিকপক্ষ এবং শ্রমিকদের মধ্যে সুসম্পর্ক ও সমন্বয় আছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখেন। শ্রমিকরা যথাসময়ে ঠিকমতো মজুরি পাচ্ছে কিনা, তাদের কর্ম পরিবেশ ঠিক আছে কিনা, শ্রমিকদের জন্য কল্যানমূলক ব্যবস্থাসহ তাদের যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে কিনা, এ বিষয়গুলো শ্রমিকদের কাছে জানতে চান তিনি।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। এর উৎপাদন আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে। সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আমরা এই খাত থেকেই পাই। বিশ্বের বিভিন্ন উৎপাদনকারী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের এই শিল্পের যারা আছেন তাদেরকে প্রতিযোগিতা করতে হয়। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তারা এগিয়ে যাবে। কিন্ত এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কথা আসে, যেমন আমাদের এই প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে কি না, উৎপাদনের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে এর ফল সবাই পাচ্ছে কি না।
তিনি বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানে মালিক ও শ্রমিক উভয় পক্ষ মিলে কার্যক্রম সম্পন্ন করে। এই সম্পর্কটা যদি ভালো না হয়, তাহলেই সমস্যার সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ কোনো এক পক্ষ বেশি লাভবান হয় কোনো পক্ষ কম লাভবান হয়। কিন্ত বাস্তবিকভাবে যদি উভয় পক্ষ লাভবান হওয়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয় তাহলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে। এটার জন্য অনেক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ফলে আজকে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। একই সঙ্গে মালিক-শ্রমিক সম্পর্কটাও উন্নত হচ্ছে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে কেউ কেউ আমাদের সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন।
তিনি বলেন, মালিক-শ্রমিক সম্পর্কের মাধ্যমে শ্রমিকরা এই শিল্পগুলোকে মূলত ধরে রাখে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে যারা সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে তাদের দিকে সঠিকভাবে দেখা হচ্ছে কি না, অর্থাৎ তাদের কর্ম পরিবেশ, তাদের কল্যাণ, তারা শান্তিপূর্ণ ভাবে কাজ করতে পারছে কি না এটা আমাদের দেখা একান্ত জরুরি। কারণ এটি হলো একটি মানবাধিকার।
তাদের অধিকারগুলো যদি সঠিকভাবে নিশ্চিত করা না হয়, তারা যদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়, কর্মক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হয়, নির্যাতনের শিকার হয়, এগুলো আমাদের দেখা অত্যন্ত জরুরি। যাতে করে এই ধরনের কোনো প্রকার প্রভাব না থাকে।
একই সঙ্গে তারা নিরাপদে কাজ করতে পারছে কি না, সঠিক মজুরি পাচ্ছে কি না, সাম্প্রতিক সময়ে মজুরি নিয়ে অনেক কথা হয়েছে, পারস্পরিক আলাপ আলোচনা হয়েছে এবং সবশেষে একটা মজুরি নির্ধারন করা হয়েছে। তারপরও অভিযোগ পাওয়া গেছে একমত হয়ে যে মজুরি নির্ধারিত হয়েছে সেটা কেউ কেউ দিচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, এখানকার শ্রমিকরা জানিয়েছেন, তাদের কর্মপরিবেশ ভালো, সঠিক সময়ে মজুরি পাচ্ছেন এবং মজুরি নিয়ে তারা সন্তুষ্ট।