তুরস্ক ও সিরিয়ার ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে। প্রাণঘাতী এই দুর্যোগের পঞ্চম দিন শনিবারও ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিত মানুষদের উদ্ধার অব্যাহত রয়েছে। তবে যত যাচ্ছে আটকেপড়া মানুষদের জীবিত উদ্ধার আশাও তত কমছে। তুরস্কে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকলেও সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে বন্ধ ঘোষণা করেছে হোয়াইট হেলমেটস। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এ খবর জানিয়েছে।
শনিবার তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান তুরস্কে নিহতের সংখ্যা ২১ হাজার ৮৪৮ এবং আহত ৮০ হাজার ১০৪ জন বলে জানিয়েছেন। আর সিরিয়ার সরকার ও বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৫৫৩ জন।
সোমবারের ভূমিকম্পের ১৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার পাঁচ সদস্যের একটি পরিবারকে উদ্ধার করা হয়।
তুরস্কের গাজিয়ানতেপ প্রদেশের নুরদাগি শহরে উদ্ধার করা হয় এক মা ও তার মেয়েকে। উদ্ধারকারী টিম মেয়েটির বাবা হাসান আসলানের কাছে পৌঁছালেও তিনি অপর মেয়ে জায়নেপ ও সালতিক বুগরাকে আগে উদ্ধারের জন্য চাপাচাপি করেন। পরে বাবাকেও উদ্ধার করা হয় জীবিত।
পরে একই প্রদেশের ইসলাহিয়ে শহরের ধ্বংসস্তূপ থেকে ৩ বছর বয়সী এক মেয়ে ও তার বাবাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ভূমিকম্পের ১৩২ ঘণ্টা পর হাতায় প্রদেশে উদ্ধার করা হয় ৭ বছর বয়সী কন্যা শিশুকে। তীব্র শীতল তাপমাত্রা ও জীবিত উদ্ধারের আশা কম থাকলেও শনিবার মোট ১২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
কাহরামানমারাস উদ্ধার হওয়া ১৬ বছর বয়সী কামিল জান আগাসকে বের করার পর উদ্ধারকর্মীদের কাছে তার জিজ্ঞাসা ছিল, আজ কী বার?
সব জায়গায় এমন জীবিত উদ্ধারের আনন্দ ছিল না। শনিবার ভোরে হাতায় প্রদেশে একটি ধসে পড়া ভবনের নিচ থেকে ১৩ বছর বয়সী এক মেয়ের সন্ধান পান। কিন্তু তার আটকে পড়ার স্থানে মেডিক্যাল পৌঁছে অঙ্গ কেটে ধ্বংসস্তূপ থেকে মুক্ত করার আগেই তার মৃত্যু হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধ্বংসস্তূপে আটকেপড়া মানুষেরা অনেক সময় এক সপ্তাহ বা বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারেন। কিন্তু তবু জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা দ্রুত কমছে। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবনের স্পন্দন পেতে থার্মাল ক্যামেরা ব্যবহার শুরু করেছেন। যা কেউ জীবিত থাকলে তাদের দুর্বল অবস্থার ইঙ্গিত দিচ্ছে।