৫ সদস্য বিশিষ্ট নিয়োগ কমিটি। মাত্র ২ সদস্যের স্বাক্ষর নিয়ে যোগদান করেছেন কাজে। এক বছর কাজ করেছেন, তুলেছেন বেতনও।
দূর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ পড়ার পর তদন্তে বেড়িয়ে এসেছে নিয়োগে জালিয়াতির বিষয়টি। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার পদে সোহেল রানার চাকুরি দুনীর্তির মাধ্যমে হওয়ায় নিয়োগ বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ২৬ আগস্ট সার্ভেয়ার পদে এক জনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ। সেই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন রাকিবুল হাসান রাকিব আর দ্বিতীয় হন সোহেল রানা। প্রথমস্থান অর্জনকারী রাকিব নয় মাস চাকুরির পর প্রতিষ্ঠান থেকে অব্যহতি নেন। এরপর একই পদে নিয়োগ দেওয়া হয় দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী সোহেল রানাকে।
সার্ভেয়ার পদে সোহেল রানার এই নিয়োগ দুনীর্তির মাধ্যমে উল্লেখ করে দূর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ আসেন এক ব্যক্তি। অভিযোগটি বিধিমতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২০২২ সালের ৩১ মে দুদক থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগকে পাঠানো হয়। সরেজমিন তদন্তের জন্য একই বছরের ৩ জুলাই স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালককে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পরিচালক তদন্ত শেষে ১১ নভেম্বর জমা দেওয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ‘নিয়োগ পরীক্ষায় প্যানেল গঠন করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হলেও প্যানেল গঠনের কোন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নিয়ম অনুয়ায়ী ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির স্বাক্ষর হওয়ার কথা। কিন্তু কমিটির ২ সদস্যের স্বাক্ষর পাওয়া গেলেও মিলেনি ৩ জনের স্বাক্ষরের প্রমান। তাই সোহেল রানাকে নিয়োগ প্রদান বিধিসম্মত নয়, মর্মে প্রতীয়মান হয়।’
এ ঘটনায় স্থানীয় সরকারের উপ-সচিব এসএম নজরুল ইসলাম জেলা পরিষদের প্রদান নির্বাহী বরাবর সোহেল রানার নিয়োগ বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। একই সাথে জেলা পরিষদের প্রাক্তন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন ও সহকারী প্রকৌশলী মো. ওয়ালিউল্লাহকে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার সোহেল রানা বলেন, ‘আমি পরীক্ষা দিয়েছি, নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগপত্র যাওয়ার পর চাকুরিতে যুক্ত হয়েছি। এখানে আমার কি ভূল। ভূল হলে যারা নিয়োগ দিয়েছে, তাদের হয়েছে।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের বর্তমান প্রধান নির্বাহী এম.এম. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘বিস্তারিত ভাবে মন্ত্রণালয়কে জানাবো। তারা যে নির্দেশ দিবে, সেটাই অনুসরণ করবো।’