সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৪ অপরাহ্ন

নারায়ণগঞ্জে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় ১৭ বছর পর রায়, ৪ জনের ফাঁসি

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২২, ১১.১৬ পিএম
  • ২৩০ বার পড়া হয়েছে

রুদ্রবার্তা২৪.নেট: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় ১৭ বছর পর রায় হয়েছে। এ মামলার রায়ে ৪জনকে মৃত্যুদন্ড ও এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত। একই মামলায় নাসরিন বেগমকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বেলা ১১ টার দিকে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এ রায় ঘোষনা করেন।

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলো- কামরুল হাসান, রবিউল, শুক্কুর, আলী আকবর। যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামী হলো- ডলি বেগম এবং খালাস পেয়েছেন নাসরিন বেগম। তাদের মধ্যে রবিউল ও ডলি বেগম জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছে। বাকিরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের সকলের বাড়ি ফতুল্লার বক্তাবলীর লক্ষীনগর পূর্বপাড়া এলাকায়।

ধর্ষন ও হত্যার শিকার আফসানা আক্তার নিপা (১১) ফতুল্লার চররাজাপুর এলাকার আকতার হোসেন ও নারগিছ বেগমের মেয়ে। সে মুসলিমনগর কেএম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী ছিলো।

রায়ের পর নিহতের বাবা ও মামলার বাদী আক্তার হোসেন রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমার নিষ্পাপ মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টা চালিয়েছিল খুনিরা। দীর্ঘ দিন পর রায় হলেও আমরা সন্তোষ্ট। আদালতের রায় যেন দ্রæত কার্যকর করা হয়।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মোঃ সাইদুল ইসলাম সুমন বলেন, ২০০৫ সালের ২ জুন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার চর রাজাপুর গ্রামের বাড়ি থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী আফসানা আক্তার নিপা তার ফুপুর বাড়ি লক্ষীনগর গ্রামে বড় বোনের সাথে দাওয়াত খেতে যায়। তারপর দিন সকাল থেকে ছাত্রী নিখোঁজ। ঐ বছর ৪ জুন লক্ষীনগর গ্রামের একটি ধইঞ্চা খেত থেকে স্কুল ছাত্রী নিপার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এঘটনায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে ছাত্রীর বাবা আক্তার হোসেন বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

তিনি আরো বলেন, ফতুল্লা থানা পুলিশ প্রথমে ডলি বেগমকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন ডলি পুলিশকে জানায় স্কুল ছাত্রী নিপাকে পালাক্রমে ধর্ষণ পর হত্যা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ডলি আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকারীদের নাম পরিচয় জানায়। তার দেয়া জবানবন্দিতে আসামীদের গ্রেপ্তার করে। পরে ঐ আসামীরাও আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয়। দীর্ঘ ১৭ বছর পর আলোচিত একটি মামলার রায় দিয়েছি। আদালত ন্যায় বিচার করেছেন এবং রায়ে বাদীপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আর রায়ে চারজন ফাঁসির আসামীর মধ্যে তিনজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং একজন পলাতক ছিলেন আর যাবজ্জীবন আসামীও পলাতক রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রসিকিউশন শাওন শায়লা জানান, কামরুল, রবিউল, শুক্কুর আলী মিলে ওই ধর্ষণ করেন। এসময় আলী আকবর ছিলেন বক্তাবলীর ঐদিকের ট্রলার চালক। এ সময় কান্নার আওয়াজ পেয়ে ছুটে যান আলী আকবর। গিয়ে দেখেন তারা ৩ জন ধর্ষণ করছেন। এসময় পুলিশকে বলে দেবেন জানালে আলী আকবরকে হত্যার এবং তার স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দিয়ে তাকে দিয়ে পাহারা দেয়ায় বাকি ৩ জন। পরে ধর্ষণ শেষে তাকেও ধর্ষণ করতে বলা হলে তিনি দেখেন মেয়েটির অবস্থা গুরুত্বর। পরে সে আর ধর্ষণ করেনি। পরে মেয়েটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর প্রথমে ডলি আক্তারের বাসায় ও পরে নাসরিনের বাসায় নেয়া হয়। দুজনে মিলে লাশটি আবার ক্ষেতে নিয়ে ফেলে আসে। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে আদালত আজ এ রায় ঘোষণা করেছেন।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, ধর্ষণ মামলায় ৪ আসামি মৃত্যুদন্ড ও এক আসামি যাবজ্জীবন কারাদন্ড ঘোষণা করেছেন আদালত। এসময় আরো একজনকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort