নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স। নগরীর নবীগঞ্জ খেয়াঘাট দিয়ে বন্দর থেকে নারায়ণগঞ্জ আসার পথে মাঝ নদীতে ১১ যাত্রী নিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। বাকিরা সাঁতরে তীরে আসতে পারলেও তিনজন নিখোঁজ থাকেন।
শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শীতলক্ষ্যা নদীর নারায়ণগঞ্জের নবীগঞ্জ ঘাট এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের প্রায় দেড় ঘণ্টা তল্লাশিতে একে একে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন, খানপুর ব্রাঞ্চরোড এলাকার মো. জিয়ার ছেলে শাওন (১৭), মেহেদী হাসানের ছেলে জীম (১৮) ও মো. শাহজাহানর ছেলে রিফাত (১৭)। নিহত সকলেই সম্পর্কে বন্ধু ও সহপাঠী ছিলেন।
দুর্ঘটনাকবলিত নৌকায় থাকা একাধিক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নবীগঞ্জ দর্গার মেলা থেকে ফিরছিলেন সবাই। এ সময় মাঝ নদীতে একটি বড় লাইটার জাহাজ যাচ্ছিল। জাহাজটি যাওয়ার জন্য তাদের নৌকাটি অপেক্ষায় থাকে জাহাজটি পার হওয়ার জন্য। জাহাজটি পাশ দিয়ে গেলে জাহাজের ঢেউয়ে পাশে থাকা অপর নৌকার সাথে ধাক্কা লাগে। এসময় দুর্ঘটনাকবলিত নৌকার অগ্রভাগ ডুবে যায়। এমন পরিস্থিতিতে তাড়াহুড়ো করে লাফিয়ে নদীতে পড়েন নৌকায় থাকা অনেকে।
নিহতদের বন্ধু ও সহপাঠী তামিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জ বার একাডেমির ছাত্র। নিহত তিনজন আমার বন্ধু ও সহপাঠী। তারা মেলায় ঘুরে নৌকাযোগে ফিরছিলেন। নিহতদের কেউই সাঁতার জানতেন না। নৌকায় মোট ১১ জন যাত্রী ছিলেন। নৌকাটি যখন ডুবতে শুরু করে তখন নৌকার ইঞ্জিন বন্ধ করতে বার বার বলা হয়। কিন্তু তা না করে ইঞ্জিনের গতি আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়। নৌকার অগ্রভাগ প্রথমে ডুবতে শুরু করে। ইঞ্জিনের গতি বাড়িয়ে দেওয়ায় দ্রুত ডুবে যায় নৌকাটি।
নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ-থানার উপ-পরিদর্শক ফোরকান আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্থানীয়দের থেকে রাত সাড়ে ১০টায় খবর আসে নৌকাডুবির। ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি, নৌকায় মোট ১১ জন যাত্রী ছিলেন, এর মধ্যে তিন জন নিখোঁজ। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নিখোঁজ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক ফখর উদ্দিন আহমেদ জানান, নিখোঁজ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের বয়স ১৭ থেকে ১৮। তাদের বাড়ি খানপুর ব্রাঞ্চরোড এলাকায়।