বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সড়কপথে সরাসরি যাতায়াতের দুয়ার খুলল। শনিবার বর্ণিল উৎসব, বাতাসে রঙিন আবির ও ফলক উন্মোচনসহ উৎসবমুখর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই প্রথম টোল দিয়ে এ সেতু পার হলেন। এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুতে আনুষ্ঠানিকভাবে গাড়ি চলাচল শুরু হলো। সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে বিপুলসংখ্যক উৎসুক মানুষ পদ্মা নদীর দুই পার মাওয়া ও জাজিরায় ভিড় জমান। উৎসবের এক পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই সেতুতে হেঁটে উঠে পড়েন তারা। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের নিবৃত করে। আজ রোববার সকাল ৬টায় সেতুটি জনসাধারণের গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এ সেতুর মধ্য দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর সঙ্গে ঢাকা তথা সারা দেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হলো। খুলল অর্থনৈতিক ও যোগাযোগের নতুন সম্ভাবনার দ্বার। অবসান হলো দীর্ঘ প্রতীক্ষার।
প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সংযোগসহ ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে পদ্মা সেতুতে গাড়ি চলাচল শুরু হলো। এতে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতের সময় ও খরচ দুই-ই কমেছে। ফেরিঘাটের অপেক্ষার বিড়ম্বনা কেটে গেল। ২০১২ সালের ২৯ জুন বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পে ঋণ চুক্তি বাতিলের পর নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনাভাইরাস, নদীভাঙনসহ নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে ২২ জুন এটি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ।
এদিন পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়। মাওয়ায় সুধী সমাবেশের আয়োজন করে সেতু বিভাগ। আর জাজিরায় জনসমাবেশ বাস্তবায়ন করে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দুটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দেন। তিনি মাওয়া ও জাজিরায় ফলক উন্মোচন করে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন। এ সময় বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজ থেকে বাতাসে রঙিন আবির ছড়ানো হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুতে নেমে নদীর দৃশ্য দেখেন।
সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর নির্মাণ শুরুর আগেই তার ও তার বোনের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, নির্মাণকাজের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই সেতু শুধু একটি সেতু নয়, এ সেতু দুই পারের যে বন্ধন সৃষ্টি করেছে শুধু তাই নয়, এই সেতু শুধু ইট-সিমেন্ট-স্টিল-লোহার কংক্রিটের একটি অবকাঠামো নয়-এ সেতু আমাদের অহংকার, আমাদের গর্ব ও আমাদের সক্ষমতা আর মর্যাদার প্রতীক।
এর আগে শনিবার সকাল ১০টায় ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে মাওয়ায় পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী। তার পৌঁছার আগেই সুধী সমাবেশে আসেন জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ-সদস্য, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর, কূটনীতিক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনের প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ। সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশের মঞ্চে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ও পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ভাষণ শেষে স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধন খাম, সিলমোহর ও ১০০ টাকার স্মারক নোট উদ্বোধন করেন।
জানা যায়, সুধী সমাবেশ শেষে বেলা ১২টার কিছু সময় আগে টোল দিয়ে প্রথম যাত্রী হিসাবে পদ্মা সেতু এলাকায় প্রবেশ করেন শেখ হাসিনা। শুধু নিজের গাড়ির নয়, বহরে থাকা সব গাড়ির টোলও পরিশোধ করেন তিনি। সেতুতে ওঠার আগে পদ্মা সেতুর ফলক উন্মোচন করেন। ওই সময়ে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছিলেন। অনুষ্ঠানে মোনাজাত পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। সেখানে লাল গালিচায় ফটোসেশনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। তার সঙ্গে মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও ছিলেন। এই উৎসবের ক্ষণে মায়ের সঙ্গে তাকে মোবাইল ফোনে সেলফি তুলতে দেখা যায়।
মাওয়ায় ফলক উন্মোচনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর মূল সেতুতে উঠে বেলা ১২টার পর। কিছুক্ষণ চলার পর বহরের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে সেতুতে দাঁড়ান তিনি। সেখানে প্রায় ১৫ মিনিট সময় কাটান। উপভোগ করেন বিমান ও হেলিকপ্টারের ফ্লাইং ডিসপ্লে। ছয়টি হেলিকপ্টার থেকে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানানো হয়। এগুলোর একটিতে জাতীয় পতাকা, একটিতে বঙ্গবন্ধু, একটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, একটিতে পদ্মা সেতু এবং একটিতে আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা বহন করা হয়। আরেকটি হেলিকপ্টার থেকে ফুল ছিটিয়ে অভিবাদন জানানো হয় ইতিহাসের সাক্ষী হতে জনসভায় যোগ দেওয়া মানুষের প্রতি। বিমান থেকে ছড়ানো হয় লাল, সবুজ, নীলসহ নানা রঙের ধোঁয়া। সেতুতে দাঁড়িয়ে মিগ-২৯ জঙ্গিবিমানের প্রদর্শনীও উপভোগ করেন। আনন্দঘন এ মুহূর্তগুলো ক্যামেরায় ধারণ করেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরীও এ সময় বহরে ছিলেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী জাজিরা প্রান্তে যান। সেখানে তার আগমনের খবর শুনে উল্লাসে মেতে ওঠেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সেখানে তিনি জাজিরা প্রান্তের পদ্মা সেতুর ফলক ও ম্যুরাল-২ উন্মোচন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের; প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, শেখ হেলাল এমপি, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সেতু আমাদের সক্ষমতা আর মর্যাদার প্রতীক-প্রধানমন্ত্রী : সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুকে বাংলাদেশের ‘গর্ব, সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক’ আখ্যায়িত করে বলেন, ‘সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বহুলপ্রতীক্ষিত সেতুটি এখন প্রমত্তা পদ্মার বুকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে’। তিনি বলেন, ‘আজ পদ্মার বুকে জ্বলে উঠেছে লাল, নীল, সবুজ, সোনালি আলোর ঝলকানি। ৪১টি স্প্যান যেন স্পর্ধিত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি আজকে বাংলাদেশের মানুষ গর্বিত। সেই সঙ্গে আমিও আনন্দিত, গর্বিত এবং উদ্বেলিত। অনেক বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে এবং ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে আজকে আমরা এই পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে সমর্থ হয়েছি। এই সেতু শুধু একটি সেতু নয়, এই সেতু দুই পারের যে বন্ধন সৃষ্টি করেছে, শুধু তাই নয়, এই সেতু শুধু ইট-সিমেন্ট-স্টিল-লোহার কংক্রিটের একটি অবকাঠামো নয়-এ সেতু আমাদের অহংকার, আমাদের গর্ব, আমাদের সক্ষমতা আর মর্যাদার প্রতীক। তিনি বলেন, এই সেতু বাংলাদেশের জনগণের। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের আবেগ, আমাদের সৃজনশীলতা, আমাদের সাহসিকতা, সহনশীলতা আর আমাদের প্রত্যয় এবং এই জেদ যে, এই সেতু আমরা তৈরি করবই। যদিও ষড়যন্ত্রের কারণে এই সেতুর নির্মাণ দুই বছর বিলম্বিত হয়। কিন্তু আমরা কখনো হতোদ্যম হইনি, হতাশায় ভুগিনি, আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে চলেছি এবং শেষ পর্যন্ত সব অন্ধকার ভেদ করে আমরা আলোর পথে যাত্রা করতে সক্ষম হয়েছি।
জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ‘কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’র পুনরুল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি, আমরা বিজয়ী হয়েছি। তারুণ্যের কবি সুকান্তের ভাষায় তিনি বলেন, ‘সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়/জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার/ তবু মাথা নোয়াবার নয়।’ আমরা মাথা নোয়াইনি, আমরা কোনোদিন মাথা নোয়াব না, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবও কখনো মাথা নোয়াননি, তিনি আমাদের মাথা নোয়াতে শেখাননি, ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়েও তিনি জীবনের জয়গান গেয়েছেন। তিনি বাংলার মানুষের মুক্তি ও স্বাধীনতা চেয়েছিলেন এবং তারই নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি।
পদ্মা সেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা পর্যায়ে চক্রান্তকারীদের মিথ্যা ষড়যন্ত্রের কারণে আমার পরিবারের সদস্য ছোট বোন শেখ রেহানা, আমার দুই সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সায়মা ওয়াজেদ, রেহানার পুত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, আমার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক যোগাযোগ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ কয়েকজন সহকর্মী চরম মানসিক যন্ত্রণার শিকার হয়েছিলেন। আমি তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি। সেতু নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, সেতু নির্মাণ যেমন কঠিন ছিল, তেমনই আঁকাবাঁকা, খরস্রোতা উন্মত্ত পদ্মা নদীকে শাসনে রাখাটাও একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল। সেই চ্যালেঞ্জও সফলভাবে মোকাবিলা করে নদীর দুই পাড়কে সুরক্ষিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেতুর উভয়দিকে রয়েছে উন্নত ব্যবস্থাপনাসমৃদ্ধ ও দৃষ্টিনন্দন সার্ভিস এরিয়া। তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণকাজের গুণগত মান নিয়ে কোনো অপস করা হয়নি। এই সেতু নির্মিত হয়েছে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উপকরণ দিয়ে, সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রেখে। পুরো নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে। পদ্মা সেতুর পাইল বা মাটির গভীরে বসানো ভিত্তি এখন পর্যন্ত বিশ্বে গভীরতম। সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীর পর্যন্ত এই সেতুর পাইল বসানো হয়েছে। ভূমিকম্প প্রতিরোধ বিবেচনায় ব্যবহৃত হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। এরকম আরও বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যের কারণে এই সেতুর নির্মাণ পদ্ধতি বিশ্বজুড়ে প্রকৌশলবিদ্যার পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত হবে-এটা নিশ্চিত। কারণ, এটা একটা আশ্চর্য সৃষ্টি।
সরকারপ্রধান বলেন, বহুমুখী এই সেতুর ওপরের ডেক দিয়ে যানবাহন এবং নিচের ডেক দিয়ে চলাচল করবে ট্রেন। সেতু চালু হওয়ার পর সড়ক ও রেলপথে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এর ফলে এ অঞ্চলের মানুষের একদিকে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি লাঘব হবে, অন্যদিকে অর্থনীতি হবে বেগবান। তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে। আশা করা হচ্ছে, এ সেতু জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ১ দশমিক ২৩ শতাংশের বেশি হারে অবদান রাখবে এবং এর ফলে দারিদ্র্য নিরসন হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ সেতুকে ঘিরে গড়ে উঠবে নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্ক। ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে এবং দেশের শিল্পগুায়নের গতি ত্বরান্বিত হবে। পদ্মা সেতু এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে সংযোগের একটা বড় লিংক। তাই আঞ্চলিক বাণিজ্যে এই সেতুর ভূমিকা অপরিসীম।
সাহসের উৎস জনগণকে স্যালুট জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, তাদের হয়তো চিন্তা-চেতনার দৈন্য রয়েছে। আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে। আগামী দিনে তাদের দেশপ্রেম জাগ্রত হবে এবং দেশের মানুষের প্রতি তারা আরও দায়িত্বশীল হবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
অপমানের প্রতিশোধ নিয়েছি-ওবায়দুল কাদের : সুধী সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে আমরা আমাদের অপমানের প্রতিশোধ নিয়েছি। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সক্ষমতার প্রতীক, এটা সত্য। তার চেয়েও বড় সত্য-আমরা আমাদের অপমানের প্রতিশোধ নিয়েছি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার মতো এমন কমিটেড মানুষ যদি না থাকতেন-এমন সংকট, এত প্রতিবন্ধতা অতিক্রম করতে পারতাম না। যারা পদ্মা সেতু নির্মাণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তারা জানেন এখানে কাজ করা কঠিন ছিল। বঙ্গবন্ধুর কন্যার ডাকে সাড়া দিয়ে পদ্মাপারের অনেক মানুষ যারা তাদের বাপ-দাদার বাড়ি ছেড়ে দিয়েছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর জন্য একজনেরই কৃতিত্ব। তিনি হলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। কেন পদ্মা সেতুর সঙ্গে তার নাম থাকবে না, সেটাই ছিল সবার দাবি। কিন্তু তিনি সেটি গ্রহণ করেননি। কাগজের লেখা নাম ছিঁড়ে যাবে, ব্যানারে লেখা নাম ছিঁড়ে যাবে, পাথরে লেখা নাম মুছে যাবে, কিন্তু হৃদয়ে লেখা নাম রয়ে যাবে। যতদিন পদ্মা সেতু থাকবে সম্মানের সঙ্গে আপনার নামটি উচ্চারিত হবে।