মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

থ্রি লায়ন্সদের স্বপ্ন ভেঙে ইউরোপের সেরা স্পেন

  • আপডেট সময় সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪, ৮.০৬ এএম
  • ৪১ বার পড়া হয়েছে

ইটস কামিং হোম! এই বাক্যটা স্বপ্নই রয়ে গেল। এবারও ইংলিশদের ঘরে গেলো না ট্রফি। আরও একবার ব্যর্থ স্লোগান। স্প্যানিশদের দাপুটে ফুটবলে কার্যত হার মেনেছে থ্রি লায়ন্সরা! ১৬ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামাল আর নিকো উইলিয়ামসের মতো তরুণরা নাচিয়ে ছেড়েছেন অভিজ্ঞ হ্যারি কেন-কাইল ওয়াকারদের। ইউরোপের সেরার লড়াইয়ে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় স্পেন।

স্প্যানিশদের হয়ে ১টি করে গোল দেন উইলিয়ামস-ওয়ারজাবাল। ইংল্যান্ডের একমাত্র গোলটি করেন হ্যারি কেনের বদলি হিসেবে নামা কোল পালমার। তবে গোল না দিয়েও ম্যাচ শেষের নায়ক দানি অলমো!

ঠিক ৯০ মিনিটে হতে পারতো ২-২। বার্লিনের অলিম্পিয়া পার্কে অলমো গোল লাইনে দাঁড়িয়ে তৈরি করেন ‘বার্লিন দেয়াল’। না হয় ম্যাচ যেতে পারতো অতিরিক্ত সময়ে। রচিত হতে পারতো ভিন্ন গল্প। কিন্তু অলমো দাঁড়ান বাধা হয়ে।

রাইসের শক্তিশালী হেড প্রথমে রুখে দেন গোলরক্ষক উনাই সিমন। আবার ফিরতি হেডে বল গোলের দিকে পাঠান গুয়েহি। তার হেড অলমো ফেরান হেড দিয়েই! ফলে আর সমতায় ফিরতে পারেনি ইংল্যান্ড।

 

এর ৪ মিনিট যোগ করা সময়ের পরেই চতুর্থবারের মতো ইউরোর চ্যাম্পিয়ন হয় স্পেন। এর আগের তিনবার ট্রফি আসে ১৯৬৪, ২০০৮ ও ২০১২ সালে। এদিকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোর ফাইনালে হেরে ইতিহাস গড়েছে গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা। গতবার তারা হারে ইতালির বিপক্ষে।

গ্রুপ পর্বে ইতালিসহ তারা নকআউটে হারিয়েছে জার্মানি, ফ্রান্সের মতো শক্তিশালী দলকে। গ্রুপ পর্ব থেকে শুরু করে ফাইনাল পর্যন্ত ৭টি ম্যাচ, সবগুলোই জিতেছে স্পেন। বিশ্বকাপসহ ইউরোতে কোনো ইউরোপিয়ান দলের এটাই প্রথম কীর্তি। এ ছাড়া বিশ্বকাপে এমন কীর্তি রয়েছে ব্রাজিলের।

ম্যাচের প্রথমার্ধ ছিল সাদামাটা। দুই দলই মাত্র ১টি করে অন টার্গেট শট নিতে পারে। স্প্যানিশদের দাপট থাকলেও গোল মুখে গিয়ে ব্যর্থ হচ্ছিল তারা। বিরতির আগে ইংল্যান্ডের ফোডেন একমাত্র অন টার্গেট শট নিতে পারে।

বিরতি থেকে যেন ভয়ংকর অবতারে ফিরে স্পেন। ১৫ মিনিট ধরে আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা করে তুলে ইংল্যান্ড ডিফেন্সকে। বিরতির পর দ্বিতীয় মিনিটেই ইয়ামালের দারুণ পাস আর উইলিয়ামসের নিখুঁত ফিনিশিংয়ে এগিয়ে যায় স্পেন।

 

৪৭ মিনিটে ডান দিক ইয়ামালকে বল বাড়িয়ে দেন কার্ভাহাল। ১৬ বছর বয়সী ইয়ামাল জায়গা বানিয়ে বাঁ পায়ের ডিফেন্স চেরা পাসে ডান দিক দিয়ে বল দেন উইলিয়ামসকে। নিখুঁত ফিনিশিংয়ে কোনাকুনি শটে উইলিয়ামস বল জড়িয়ে দেন জালে। পিকফোর্ড ঝাঁপ দিলেও পাননি নাগাল। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড।

গোল খেয়ে যেন খেই হারিয়ে ফেলে ইংল্যান্ড। মিনিট কয়েকের ব্যবধানে অলমো-উইলিয়ামস আক্রমণে করেন। অলমোর শট পিকফোর্ড বাঁচালেও উইলিয়ামসের শট বেরিয়ে যায় ডান পোস্টের পাশ দিয়ে। ৬৬ মিনিটে পিকফোর্ডকে একা পেয়েও বাঁ ডান দিকে জোরালো শট নিতে পারেননি ইয়ামাল। রুখে দেন পিকফোর্ড।

মাঝে মাঝে আক্রমণের চেষ্টা করা ইংল্যান্ড সমতা ফেরায় বদলি নামা পালমারের গোলে। হ্যারি কেনকে তুলে তাকে মাঠে নামান সাউথগেট। ৭০ মিনিটে মাঠে নামার তৃতীয় মিনিটেই গোল! জাতীয় দলের হয়ে দ্বিতীয় গোল! তাও ফাইনালের মঞ্চে।

 

ডান দিক থেকে এগিয়ে এসে সাকা বল বাড়িয়ে দেন ডি বক্সে থাকা বেলিংহামকে। কিন্তু বক্সে স্প্যানিশ ডিফেন্সের জট দেখে বেলিংহাম বল পাঠিয়ে দেন বাইরে থাকা পালমারকে। ২০ গজ দূর থেকে বাঁ পায়ের মাটি গড়ানো অসাধারণ খিপ্র শটে পালমার বল জড়িয়ে দেন জালে। ৭৩ মিনিটে সমতায় ফেরে ইংল্যান্ড। ম্যাচে ফেরে থ্রি লায়ন্স।

ইংলিশদের ম্যাচে ফেরার উচ্ছ্বাস বেশিক্ষণ থাকেনি। এবার স্প্যানিশদের ত্রাতা ওয়ারজাবাল। নিচু ক্রসে ডি বক্সে বল বাড়িয়ে দেন মার্ক। দৌড়ে এসে স্লাইড করে বল জালে জড়িয়ে দেন ওয়ারজাবাল। সুযোগ দেননি পিকফোর্ডকে। ম্যাচ শেষের কয়েক মিনিট আগে ওয়ারজাবালের গোলে হৃদয় ভাঙে ইংলিশদের।

 

তবুও চেষ্টা থামেনি ইংল্যান্ডের। ৯০ মিনিটে অলমো গোল লাইনে দেয়াল না হয়ে দাঁড়ালে ম্যাচে ফিরতে পারতো ইংল্যান্ড। ৪ মিনিট ইনজুরি সময় পেলেও গোলের সুযোগ পায়নি দলটি। শেষ বাঁশি বাজতেই স্প্যানিশদের উৎসবে লাল রঙে রঙ্গিন হয়ে ওঠে বার্লিনের অলিম্পিয়া পার্ক। অন্যদিকে ইংলিশ শিবির রূপ নেয় শ্মশানে, কান্নায় ভেঙে পড়েন সাকা-বেলিংহাম। টানা দ্বিতীয়বার কাছে গিয়েও ট্রফি থেকে দূরে, আর কত?

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort