পাসপোর্ট দালাল চক্রের ১৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি। সেইসাথে বিপুল পরিমাণ পাসপোর্ট, পাসপোর্ট সংক্রান্ত নথিপত্র, অবৈধ সিল ও নগদ অর্থ জব্দ করা হয়েছে।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদিকদের এ তথ্য জানান পুলিশ।
এ চক্রের সাথে পাসপোর্ট অফিসের কেউ জড়িত রয়েছে কি না? সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আটকের সময় তাদের কাছ থেকে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ডিউটি অফিসারের ১টি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ১৪টি সিল, বিভিন্ন নামে জাল স্ট্যাম্পে ৬৪টি রোটারী পাবলিক কপি, অবৈধ্য প্রক্রিয়ায় তৈরি হওয়া ১১৪টি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে। একই সাথে ২০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হোলেন-আড়াইহাজার উপজেলার চৌধুরীপাড়া এলাকার মমুত রাম চন্দ্র চক্রবর্তীর ছেলে সুমন চক্রবর্তী (৪৩), সোনারগাঁ উপজোলার বরত এলাকার মৃত সুমন্ডন্ডু রায়ের ছেলে সাদ্দাম হোসেন মামুন (২৫), কুমিল্লা দাউদকান্দি উপজেলার মালাখোলা এলাকার আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ কামান (৩৪), মুন্সিগঞ্জ টংবাড়ির এলাকার মো. আবুল হোসেনের ছেলে মো. আলমগীর (৪৩), ফতুল্লা কুপুবপুর শাহি মহল্লার মোহাম্মদ হোসেন পাটওয়ারীর ছেলে মো. ইয়াসিন আরাফত (৩২), লক্ষিপুর রায়পুর ভুইঁ বাড়ি এলাকার কবির হোসনের ছেলে মো. ইয়াসিন রানা (২৮), শরিয়তপুর পালং উপজেলার চর স্বার্ণঘোষ এলাবার খালেক সরদারের ছেলে আনোয়ার গোসের (৩৫), সিদ্ধিরগঞ্জ জালকুড়ি পশ্চিম পাড়া এলাকর মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. হাসিবুল হাসান শান্ত (২৫), ফতুল্লা কুতুপুরের মাহমুদপুর এলাকার শহিদুর ইসলাম খোকনের ছেলে ইমরান হোসরন শান্তু (২০), ফতুল্লা দেলপাড়ার এলাকার মৃত জালার উদ্দিনের ছেলে মো. রবিউস সানি (২২), সিদ্ধিরগঞ্জ জালকুড়ি মাইঝপাড়া এলাকার আব্দুল গফুর এলাকার মো. গোলাম রাব্বি, ফতুল্লা পশ্চিম শাহি মহল্লা মো. সেকেন্দার আলীর ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম (২৯), বন্দর নবীগঞ্জ (স্টোন্ডের পর্ব পাশে) জামানের ছেলে সিফাত হাসান (২৯), সিদ্ধিরগঞ্জ মৌচাক এলাকার লিটম মিয়ার ছেলে রাব্বি সালাম লিমন (২৮) ও বন্দর উপজেলার আলী নগর এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আল-আমিন (৪০)।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমির খসরু জানান, নারায়ণগঞ্জের এই পাসপোর্ট অফিসের দালাল চক্রের উপর দীর্ঘদিন ধরেই নজর রাখছিল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশ দপ্তর, ব্যাংকসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের অফিসিয়াল সিল, রোটারী পাবলিকের জাল কপি ব্যবহার করে পাসর্পোট তৈরির অফিসিয়াল কার্যক্রম সম্পূর্ণ করতো। গত ১৮ অক্টোবর দুপুরে অভিযান পরিচালনা করে চক্রটির ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ডিউটি অফিসারের ১টি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ১৪টি সিল, বিভিন্ন নামে জাল স্ট্যাম্পে ৬৪টি রোটারী পাবলিক কপি, অবৈধ্য প্রক্রিয়ায় তৈরি হওয়া ১১৪টি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে। এ সব পাসপোর্টের জন্য গ্রাহকদের থেকে সরকার নির্ধারিত অর্থের চেয়ে কয়েক গুন বেশি অর্থ আদায় করা হতো। এতে তাদের কাছে প্রতারিত হতো সাধারণ মানুষ। ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করছি। একই সাথে পাসপোর্ট অফিসসহ অন্যান্য অফিসের কেউ যদি জড়িত থাকে, তাদের কেউ আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আমির খসরু জানান, মূল চক্রটিকেই আমরা গ্রেপ্তার করেছি। এর বাহিরে আরও কিছু থাকতে পারে, আমরা তাদেরকে খুব দ্রুতই আইনের আওতায় আনবো।