রুদ্রবার্তা২৪.নেট: মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত পাকিস্তানি যুদ্ধজাহাজ ‘এমভি একরাম’ সংরক্ষণ করে জাদুঘর নির্মাণ করার পরিকল্পনা মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের। জাদুঘর নির্মাণের জন্য স্থান নির্বাচন করতে নারায়ণগঞ্জ সফর করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। বুধবার (৪ আগস্ট) বিকেলে মন্ত্রীর সাথে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী শাহ্জাহান খান ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
জাদুঘর স্থাপনের প্রাথমিকভাবে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকায় ও বন্দর উপজেলায় মোট চারটি স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। বুধবার সবগুলো স্থান পরিদর্শন করেছেন বলে জানান মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, “মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর দখলে থাকা ২৬টি জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধারা। ১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট মুক্তিযোদ্ধারা এই ‘অপারেশন জ্যাকপট’ চালিয়েছিলেন। একদিনে তারা ২৬টি জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছিল। সেই স্মৃতিকে সংরক্ষণ করার জন্য ‘এমভি একরাম’ জাহাজের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করে সংরক্ষণ করেছি। আমরা একটি জাদুঘর নির্মাণ করে এটিকে সেখানে সংরক্ষণ করতে চাই। যাতে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এবং দেশি-বিদেশি পর্যটকরা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের গৌরবগাঁথা জানতে পারে। এবং পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর কলঙ্কজনক অধ্যায়ও যেন মানুষ জানতে পারে। সেইজন্য আমরা এটিকে সংরক্ষণ করতে চাই।”
তিনি আরও বলেন, “জায়গা নির্ধারণের কার্যক্রম চলছে। কাঁচপুর ও বন্দর এলাকায় চারটি স্থান আমরা প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করেছি। কোন জায়গায় এটি করা যায় সেজন্য সরেজমিনে আমরা পরিদর্শন করলাম। নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রীও এসেছেন। কোন জায়গাটি ভালো হবে সে বিষয়ে পরামর্শকদের পরামর্শ নেবো।”
নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ বলেন, “প্রতি ইঞ্চি মাটির মধ্যে আমাদের শহীদদের রক্ত আছে। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, ৫০ বছরেও আমরা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ করতে পারিনি। খুনি, ঘাতক, অপরাধীদের পুনর্বাসিত করা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের জন্য ১২ বছর যাবৎ কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা। এই কাজেরই অংশ হিসেবে ‘এমভি একরাম’ জাহাজটি আমরা খুঁজে পেয়েছি। এটি উদ্ধার করা হয়েছে। একই সাথে সংরক্ষণ করে সকলের সামনে তুলে ধরার কার্যক্রম চলছে। এই জাদুঘর আগামী ১০০ বছরেও প্রজন্মের পর প্রজন্মে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলবে।”
এই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাঁজা মিয়া, বিআইডবিøউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক, বিআইডবিøউটিএ’র নারায়ণগঞ্জ বন্দরের উপপরিচালক মাসুদ কামাল, বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুক্লা সরকার, কৃষক লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগ তালুকদার প্রমুখ।
উল্লেখ্য, মুক্তিবাহিনীর ডুবিয়ে দেওয়া পাকিস্তানি যুদ্ধজাহাজ ‘এমভি একরাম’ বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জের কর্ণফুলী ডকইয়ার্ডের সামনে শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসমান অবস্থায় রয়েছে।