নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির জন্য সিন্ডিকেটের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাজারে সিন্ডিকেট থাকলে সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না এটা তো কোনো কথা না। কে কত বড় সিন্ডিকেট তা দেখবো আমি।’
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে গণভবনে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী মৌসুমী ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেট নিয়ে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া এবং সিন্ডিকেটের বিষয়ে ‘বিপদ আছে’ বলে মন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিপদ আছে কে বলছে, আমি ঠিক জানি না। আমরা তো সঙ্গে সঙ্গে যখন হয় আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।’
এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা বাণিজ্যমন্ত্রীর এই ধরনের বক্তব্যের বিষয়ে জানালে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরবো। সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যাবে না এটা বলেছে?’ সাংবাদিকরা আবারো বাণিজ্যমন্ত্রীর নাম বললে তিনি বলেন, ‘ঠিক আছে আমি বিষয়টা দেখবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে কয়েকটা হাউজ আছে যারা খাদ্যপণ্য নিয়ে ব্যবসা করে। যখন তারা আর্টিফিসিয়ালি দাম বাড়ায় আমরা সাথে সাথে সেটা আমদানি করি অথবা বিকল্প ব্যবস্থা এমনভাবে করি যাতে তারা বাধ্য হয় দাম কমাতে। কাজেই সিন্ডিকেট তাকলে সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না এটা তো কোনো কথা না। কে কত বড় সিন্ডিকেট তা দেখবো আমি।’
পেনশন নিয়ে অর্থের সুরক্ষার এক প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, ‘এটা খুব স্পষ্টভাবেই বলা আছে। আর এই টাকা নিয়ে নির্বাচন ফান্ড করতে হবে আওয়ামী লীগ তো সেই দৈন্যতায় পড়েনি। আওয়ামী লীগ হচ্ছে নিজের খেয়ে নৌকা। জনগণ নিজের খেয়েই নৌকার জন্য কাজ করে।’
‘সার্বজনীন পেনশনটা করাই হয়েছে সরকারি অফিসাররা পেনশন পায়, কিন্তু সাধারণ যারা তাদের জন্য তো কোনো পেনশনের ব্যবস্থা নেই। বৃদ্ধ বয়সে তাদের একটা নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্যই যেটা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিলো….এখন যে টাকাটা তারা রাখতে নির্দিষ্ট সময় পর এই টাকা তারা তুলতে পারবে, পেনশন পাবে। এই টাকা তো অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই। সম্পূর্ণ টাকা সরকারি কোষাগারে যাচ্ছে। এটা যে কেউ তুলে নিতে পারবে না বা নয়ছয় করতে পারবে না, সেই গ্যারান্টি দিয়েই এই স্কিমটা করা।”
এ সময় সমালোচকদের জবাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে ভালো কাজটাই করতে যাচ্ছি সেটা নিয়ে একটা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। যারা নিজেরা কিছু করতে পারে না এবং যারা সম্পূর্ণ অর্বাচীন তারাই এই ধরনের নেতিবাচক কথা বলে। দেশবাসীকে বলবো, এই ধরনের কথায় কান না দিয়ে নিজের স্বার্থরক্ষার জন্য…আজকে যারা এটা বলছে তারা কিন্তু পেনশনে যোগ হবে।’
‘যারা নেতিবাচক কথা বলেন, এর আগে তারা যতগুলো এভাবে বলেছে সবগুলো কিন্তু নেতিবাচক প্রমাণিত হয়েছে। সেই মেট্রোরেলের কথাই বলেন, রাস্তার কথাই বলেন। এরা আগুন দিয়ে মানুষ পোড়াতে পার, এরা জনগণকে খুন করতে পারে, হত্যা করতে পারে, গ্রেনেড মারতে পারে, দুর্নীতি করে টাকা পাচার করতে পারে, এসব কাচে তাদের পারদর্শিতা আছে। আওয়ামী লীগ সরকার এটা করতে আসেনি, জনগণের জন্য কাজ করতে এসেছে”, বলেন তিনি।