ওটিস গিবসনের বার্তা ছিল, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হেলাফেলা করো না।’ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরুতে এখন বলতে হয়, ‘ছোট দলগুলোকে নিয়ে হেলাফেলা করো না।’ এবারের আসরের প্রথম দিন এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে ৫৫ রানে হারিয়ে প্রথম অঘটনের শুরু। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে জিততে ঘাম ছুটেছিল নেদারল্যান্ডসের। আর দ্বিতীয় দিন হলো আরও বড় অঘটন, প্রথম দেখায় দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা ৪২ রানে হেরে গেলো স্কটল্যান্ডের কাছে। এ যেন স্কটিশ রূপকথা।
ম্যাচের শুরুতে হার কিন্তু হয়েছিল স্কটল্যান্ডের, টস হেরে যায় তারা। কিন্তু সেই হারকে পুঁজি করে দারুণ শুরু জর্জ মানসির ব্যাটে। উইন্ডিজের বিধ্বংসী রূপ যেন ভর করেছিল তাদের ওপর। ৫ ওভারেই রান পঞ্চাশ। ৫৫ রানে তার সঙ্গে মাইকেল জোনসের জুটি ভাঙলেও একপ্রান্ত থেকে রান টেনে নিতে থাকেন মানসি। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান লড়ে গেছেন শেষ পর্যন্ত। ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ের দৃষ্টান্ত তৈরি করা উইন্ডিজকে শাসন করেন পুরো ম্যাচ জুড়ে।
তার অষ্টম হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে স্কটল্যান্ড লড়াই করার মতো পুঁজি সংগ্রহ করে। অপরাজিত ছিলেন তিনি ৫৩ বলে ৬৬ রান করে। ছিল না কোনও ছয়, চার ৯টি। মানসির অনবদ্য ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি অধিনায়ক রিচি বেরিংটনের গ্যালারির ছাদে পাঠানো ছক্কাও ম্যাচের হাইলাইটস।
সঙ্গে ক্যালাম ম্যাকলিয়ড ও শেষ দিকে ক্রিস গ্রিভস দারুণ অবদান রাখেন। ৫ উইকেটে ১৬০ রান করেও স্বস্তিতে ছিল না স্কটল্যান্ড। কারণ প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ বলে কথা।
উইন্ডিজ আগ্রাসীরূপে ব্যাটিং শুরু করেছিল। কাইল মায়ার্স দ্বিতীয় ওভারে ৯ রান তোলার পর পরের ওভারে টানা দুটি চার-ছক্কা মেরে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেন। কিন্তু জশ ডেভির শিকার তিনি ১৩ বলে ২০ রান করে। এরপর এভিন লুইস তোলেন ঝড়। তাকেও থামতে হয় পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে।
দুটি উইকেট হারালেও পাওয়ার প্লেতে ৫৩ রান উইন্ডিজকে লড়াইয়ে রেখেছিল। তবে ছন্দপতন হয় অষ্টম ওভারে ব্র্যান্ড কিং (১৭) আউট হলে। মার্ক ওয়াটের আঁটসাঁট বোলিংয়ে বিপদ বাড়তে থাকে। প্রথম ২ ওভারে ৩ রান দিয়ে নেন ক্যারিবিয়ান হার্ড হিটারের উইকেট।
এরপর মাইকেল লিস্কের জাদু। নিজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওভারে আঘাত হানেন তিনি। তাতে নেই ৭২ রানে ৫ উইকেট। ম্যাচ মূলত শেষ ওখানেই। সঙ্গে যোগ দেন ব্র্যাড হুইল ও ওয়াট। এই তিন বোলার পরের তিন ওভারে আরও ৩ ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান। ৮৪ রানে ৮ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোনোমতে একশ পার করে। জেসন হোল্ডার একপ্রান্ত থেকে রানের গতি বাড়ান। কিন্তু লাভ হয়নি। ৩৭ বলে তার ইনিংস সেরা ৩৮ রান থামলে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৯তম ওভারে ১১৮ রানে অলআউট তারা।
ওয়াট ৪ ওভারে ১২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। ব্র্যাড হুইল ও লিস্ক নেন দুটি করে উইকেট।