বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার জোয়ারে উত্তাল সাগরেও মাছ ধরতে নেমেছেন জেলেরা। মাত্র পাঁচ দিনে মা আয়েশা-২ নামে একটি ট্রলারের ২১ জন জেলে পেয়েছেন ১৩০ মণ ইলিশ। একসঙ্গে এত মাছ পেয়ে খুশিতে আত্মহারা সবাই। এসব মাছ নিলামে বিক্রি হয়েছে ২৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নোয়াখলীর হাতিয়ার চেয়ারম্যান ঘাটে এসব ইলিশ বিক্রি করা হয়।
জানা যায়, ভোলার মনপুরা উপজেলার মো. জহির উদ্দিন মা আয়েশা-২ ট্রলারের প্রধান মাঝি। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার জোয়ারের মধ্যেই ২১ জন মিলে উত্তাল সাগরে মাছ ধরেছেন। মাত্র পাঁচ দিনে মিলেছে ১৩০ মণ ইলিশ। ভালো দাম পেয়ে উচ্ছ্বসিত জেলেরা।
জেলে গিয়াস উদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় সাহস করে মাছ ধরেছি। বাতাস কম ছিল তাই জাল ফেলতে পেরেছি। প্রচুর মাছ পেয়েছি। এতে আমরা আনন্দিত।
মো. শাহীন নামে আরেক জেলে বলেন, ৩ নম্বর সংকেতের কথা শুনে অনেক ট্রলার কূলে এসে গেছে। কিন্তু আমরা উঠে আসিনি। বাতাস কম থাকায় আমরা সাগরেই ছিলাম। প্রথম জাল ফেলার পর মাছ পেয়েছি কম। পরের বার প্রচুর মাছ পেয়েছি। এভাবে ৪-৫ দিন মাছ ধরে কূলে এসেছি।
আব্দুল মালেক নামে আরেক মাঝি বলেন, বিভিন্ন সাইজের মাছ ধরা পড়েছে। এক কেজি সাইজের মাছের মণ ৩০ হাজার টাকা করে পাই। আধাকেজির থেকে কম ওজনের মাছ আমরা ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা পাই।
প্রধান মাঝি মো. জহির উদ্দিন বলেন, ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা গত বছর থেকে ১০ দিন এগিয়ে দিয়েছে সরকার। আমরা প্রথম সিজনে কোনো মাছ পাইনি। এখন যা কিছু মাছ পাচ্ছি তা দিয়ে ধার দেনা দিব। কিন্তু সরকার নিষেধাজ্ঞা এগিয়ে দিয়ে আমাদের ক্ষতি করল। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ বেশ কয়েকজন বলেছেন নিষেধাজ্ঞা পিছিয়ে দিতে। কিন্তু সরকার তা শোনেনি। সরকার গরিবের দিকে তাকায় না।
মেঘনা ফিশিংয়ের ম্যানেজার মো. হাবিব ভূঁইয়া বলেন, মাঝি জহির উদ্দিন ১৩০ মণ মাছ পেয়েছেন। যার নিলামে দাম গড়ে ১৯ হাজার টাকা করে ২৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা। মাছগুলো সব বড় বড় এবং দেখতে সুন্দর। সারা দেশে এত বড় মাছ উঠেছে কিনা আমার জানা নেই। তবে চেয়ারম্যান ঘাটে প্রচুর মাছ উঠছে। জেলেরাও ভালো দাম পাচ্ছেন। এখানে সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মাছ বিক্রি হয়।