বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের সময়ে উসকানিমূলক বক্তব্য না দিতে রাজনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর)। একইসঙ্গে নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময় ও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সব নাগরিকের মানবাধিকার সমুন্নত রাখার এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমনে সরকারকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনেরও আহ্বান জানিয়েছেন হাইকমিশনার।
মঙ্গলবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে সংস্থাটির মুখপাত্র লিজ থ্রোসেল বলেন, ‘বাংলাদেশে চলমান বিক্ষোভের মধ্যে একের পর এক সহিংসতার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। দেশটিতে সামনে জাতীয় নির্বাচন থাকায় আমরা রাজনৈতিক সব পক্ষের প্রতি এটা স্পষ্ট করার আহ্বান জানাচ্ছি যে এমন সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়। সেই সঙ্গে সহিংসতা উসকে দেয়—এমন বক্তব্য ও তৎপরতা থেকে বিরত থাকতেও আমরা রাজনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
গত শনিবার ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনার উল্লেখ করেছে ওএইচসিএইচআর। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘২৮ অক্টোবর সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারকদের বাসভবনে হামলা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া সেদিন আনুমানিক ৩০ সাংবাদিকের ওপর হামলা করা হয়েছে। এসব হামলায় বিক্ষোভকারীরা ছাড়াও মোটরসাইকেলে আসা মুখোশ পরা একদল ব্যক্তি যুক্ত ছিলেন, যারা ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর বলছে, পুলিশ রড, লাঠি, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর আক্রমণ করেছে বলে খবর রয়েছে। এছাড়া তারা দেশজুড়ে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা–কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি, নির্বিচার আটক এবং নেতা–কর্মীদের পরিবারের সদস্যসহ শত শত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।
কেবল জরুরি প্রয়োজন হলেই যেন শক্তি প্রয়োগ করা হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। বলা হয়েছে, সেটি করা হলে যেন আইনের মূলনীতি, পূর্ব সতর্কতা এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে করা হয়।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তারের কথা উল্লেখ করে ওএইচসিএইচআর বলেছে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে। তাকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ বিরোধীদলীয় নেতা আত্মগোপনে গেছেন বলে খবর রয়েছে।