‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কোনও পরিকল্পনা সরকারের নেই’— উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগ কর্তৃক সংঘটিত পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা হত্যাকাণ্ড, আগ্রাসন, বিগত আন্দোলনের হত্যাকাণ্ড, গুম, ক্রসফায়ার ভোট ডাকাতিসহ জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রশ্নে কার্যকর অগ্রগতি দৃশ্যমান হওয়ার আগে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পদ থেকে এ ধরনের বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত। শুক্রবার (২১ মার্চ) রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ কোনও গণতান্ত্রিক দল নয়, বরং এটি একটি ফ্যাসিবাদী সংগঠন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু নির্বাচনে পরাজিত হয়নি, বরং এটি সাংগঠনিকভাবে রাষ্ট্রে দমন-পীড়ন চালিয়েছে। বিগত সময়ে দলটি গুম, হত্যা, নির্যাতন, ভোট ডাকাতির মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত ছিল। এনসিপির মতে, আওয়ামী লীগের এসব কর্মকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের নিশ্চয়তা না থাকলে তাদের রাজনীতিতে ফেরার বিষয়ে কোনও আলোচনা গ্রহণযোগ্য নয়।
এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করা উচিত। তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনার যে কোনও প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করবে এনসিপি। দলটি বরাবরই অপরাধের বিচার ও দায় স্বীকারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে। তিনি উল্লেখ করেন, পাপমোচন ও অনুশোচনা ছাড়া আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের প্রচেষ্টা দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য হুমকিস্বরূপ।
নাহিদ ইসলাম বলেন, বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে। বিশেষ করে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের ঘটনা এবং সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত রাজনৈতিক সহিংসতার বিচার জরুরি। তিনি বলেন, জাতির স্বার্থে এসব অপরাধের দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা উচিত এবং কোনও রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে তাদের ছাড় দেওয়া ঠিক হবে না।
সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে এনসিপি জানায়, তারা ফ্যাসিবাদী রাজনীতি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জাতীয়ভাবে লড়াই চালিয়ে যাবে। নাহিদ ইসলাম বলেন, “দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এনসিপি জনগণের সঙ্গে থেকে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে।”