নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান বলেছেন, মাথা উঁচু করে যখন আমরা দাড়িয়ে গিয়েছি তখন পৃথিবীর বড় বড় শকুনদের চোখ পড়েছে। জানি ওনাকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) আঘাত করার চেষ্টা করা হবে। কিছু হবে না। ২১ বার আঘাত করা হয়েছিল। মরে নাই। ওই ইবলিসরা ওইটাও বুঝে না। রাখে আল্লাহ মারে কে।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের ২নং রেলগেট এলাকায় ‘বীর বাঙালি ঐক্য গড়ো, বাংলাদেশ রক্ষা করো’ শ্লোগানে শামীম ওসমান সমাবেশের আহ্বান করেন। তার সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি।
শামীম ওসমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন, মাননীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে দাড়িয়ে ওরা (বিএনপি) হুঙ্কার দেয়। আর সহ্য করবো না। প্রয়োজনে আওয়ামীলীগের পদ ছেড়ে দিবো। দলের কোন পেস্টে থাকবো না। আমাদেরকে গালি দেন, যারা আমাদের মেরেছেন ১৪ বছরে তাদের গয়ে ফুলের টোকা দেই নাই। কিন্তু শেখ হাসিনাকে নিয়ে, জাতির পিতাকে নিয়ে যে অশ্লীল ভাষায় নারায়ণগঞ্জে গালি দিচ্ছে, আমরা এটা মেনে নিতে পারি না। সবচেয়ে সভ্য কথা যেটা বলে সেটাও জঘন্য। কি বলে, হরে কৃষ্ণ হরে রাম, শেখ হাসিনার বাপের নাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান যার নামে আল্লাহর একটা নামের রহমান আছে। একদিকে মুসুলমানের মনে আঘাত করলো অন্যদিকে হিন্দুদের ভগবান হচ্ছে হরে কৃষ্ণ। ওরা কত বড় সাম্প্রদায়িক। এক সঙ্গে দুটি ধর্মকে গালি দিলো।
শামীম ওসমান বলেন, আমাদেরকে মারলে কারো কাছে বিচার দিবো না। আমাদের পুলিশ দরকার নাই। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে আমাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে কিছু মোশতাক আছে। তারা যদি ভাবেন ভালো থাকবেন, সুখে থাকবেন, আওয়ামীললীগ ক্ষমতায় আসবে কি না। আজকে আমার ভাইয়ের (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) দোয়ায় বলতে চাই। আমি থাকবো কি থাকবো না। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই হবেন।
তিনি বলেন, যারা মনে করছেন আমাদের ভয় দেখাবেন, গালি দিবেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, যথেষ্ট হয়েছে। একজন এমপি ছিল (গিয়াস উদ্দিন)। এমপি হওয়ার আগে ছিল আওয়ামীলীগ, এরআগে করতো জাতীয়পাটি, এরপর আবার আওয়ামীলীগ। এখন বিএনপিতে। রাজনীতির ভাষায় এদের বলা পলিটিক্যাল পোস্টিটিউট। এদের কোন আদর্শ নাই। চোরে চোর চিনে। বিএনপির ভালো মানুষ লাথি খেয়ে চলে গেছে। তারেক রহমান এদের (গিয়াস উদ্দিন) দলে নিয়েছে। তারা খুন খারাবি করার চেষ্টা করবে, করেন। আমাদের মতো শ্লোগান দেন, ভদ্রভাবে রাজনীতি করতে চান করেন। কিন্তু আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে বলছি, আজকের পর থেকে যদি জাতির পিতা কিংবা জাতির পিতার কণ্যাকে নিয়ে কোন অশ্লীল গালি দিয়ে শ্লোগান দেয়া হয়। আমরা কি ছেড়ে দিবো। তখন সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীরা চিৎকার করে বলেন না। তখন শামীম ওসমান বলেন, জনগনের কথা আমাদের শুনতে হবে। জনগন যদি হুকুম দেয় তাহলে আমরা দেখাবো। আমরা কারো সঙ্গে খেলবো না। আমরা ওই সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক শক্তি, স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির সঙ্গে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, ধংসের পরিবর্তে উন্নয়নের শক্তি, আমরা এই শক্তি তোমাদের চ্যালেঞ্জ করছি। নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা যাবো। কোথায় কখন খেলবো, টাইম দাও। খেলা হবে, ইনশাআল্লাহ। এসময় নেতাকর্মীদের শামীম ওসমান বলে আমরা কি জিতবো। তখন দুই হাত তুলে নেতাকর্মীরা বলেন জিতবো। যখন ডাক দিবো রাস্তায় নামবেন তো। নেতাকর্মীরা হাত তুলে বলেন নামবো। তখন স্বারাষ্ট্রমন্ত্রীকে শামীম ওসমান বলেন, ভাই আমি থাকবো কি থাকবো না জানি না। আপনি নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মাথায় ছায়া হবে থাকবেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হাত তুলে সম্মতি দেন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মো. বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, প্রমুখ।