নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, ঢাকার পাশে হওয়াটা নারায়ণগঞ্জের জন্য একটা আশীর্বাদ। শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ নানা কাজের জন্য মানুষ সহজে ঢাকায় যেতে পারছে। ফলে আমাদের অনেক সুবিধা হয়। আবার এটা অভিশাপও হয়ে গেছে। নারায়ণগঞ্জ ঢাকার অনেক কাছে হওয়ার কারণে যে জিনিসগুলি এখানে বিল্ডাব হওয়া উচিৎ ছিলো সেটা হয়নি। যদি আমরা আরও ৫০ বা ১শ’ কিলোমিটার দুরে হতাম, তাহলে যে শিল্পপতি বা যারা বিল্ডাপ করতে পারতেন তাদের ব্যাক্তিগত উদ্যোগে, তারা আসলে ঢাকায় বেইজ্ড হয়ে গেছেন। সে কারণে আমার মনে হয় এখানে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একটি গ্যাপ সৃষ্টি হয়েছে। আর খেলার মাঠ সংস্কৃতিচর্চা এই গ্যাপ সুধু নারায়নগঞ্জে হয়েছে তা না, এটা পুরো বাংলাদেশেই হয়েছে।
দেশের অন্যতম প্রভাবশালী এই আওয়ামী লীগার আরও বলেন, আমাদের কালচার পরির্বতন হয়েছে। ভাবতে অবাক লাগে যখন দেখি, আমার কোন ফেসবুক একাউন্ট নাই। কিন্তু আজকালকার জেনারেশন ফেইসবুক ব্যবহার করছে। তবে এটা খারপ না যদি তা ভালো কাজে ব্যবহার করা হয়। তবে এটার একটা মন্দ দিক হলো, আমাদের পরবর্তি জেনারেশন অনেক আনসোশ্যাল হয়ে যাচ্ছে। খাবার টেবিলে বাবা, মা, ভাই-বোন এক সাথে খেতে বসেছে সবাই কিন্তেু ফোন চাপতে থাকে। আমাদের উচিৎ বাচ্চাদের একটা সময় বেধে দেয়া। বাকি সময়টা পরিবার ও বন্ধুদের সাথে কাটানো। আমার মনে হয় এই যায়গা গুলিতে আমাদের অনেক গ্যাপ আছে।
তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্য এমপি শামিম ওসমান বলেন, আমরা পৃথিবীতে এসেছি একবারের জন্য, দু’বারের জন্য না। আমি একটা জিনিস বিশ্বাস করি, মানুষ আজীবন বাঁচবে না। তার পরেও আমরা একটা কাজ ধরে নেই যে কালকে করবো, কিন্তু আজ কেনো নয়? আজকে তরুণ সমাজের কাছে আমার সন্তান হিসেবে একটাই দাবি যে, আজকের দিনটাতেই যাতে কাজটা করে। আজকের দিনটাতেই সকালে ঘুম থেকে উঠে তার মা ও বাবাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসাটা দেয়। সে যে মহল্লায় থাকে আজকের দিনটাতে সে এলাকার ছোট বড় সবাই বুঝে যে সে একজন ভালো মানুষ ।
শামীম ওসমান বলেন, আমরা যারা রাজনিতি করি, যারা জনগণের দারা সম্মানিত হয়ে কিছুটা উচু যায়গায় চলেগেছি, সেই আমরা মনে করি জনগণ বোকা। তবে জনগণ কিন্তু বোকা নয়। তারা জথেষ্ট বুদ্ধিমান। মানুষ যে দেশেরই হোক না কেন সে কিন্তু বুঝার চেষ্টা করে যে, কে আমার জন্য কথা বলছে আর কে নিজের সার্থের জন্য কথা বলছে বা রাজনৈতিক ও দেশের সার্থে কথা বলছে।
তিনি বলেন, আর এই দেশের সার্থে যারা কথা বলছে, আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আদর্শিত হয়ো রাজনীতিতে এসেছি, বঙ্গবন্ধুহীন এই বাংলাদেশে। আল্লার হুকুমে আমরা পেয়েছি জাতির পিতার কণ্যা শেখ হাসিনাকে। উনার কাছে একটা জিনিস শিখেছি। যে মানুষের জন্য কথা বলো, মানুষের জন্য চিন্তা করো, মানুষের সেবা করো যেইটুকু সময় তুমি বেঁচে আছো। হয়তো কিছুই পারি নাই করতে আর উনার মতো তো প্রশ্নই আসে না। তবে যেটুকু করেছি তার জন্য হয়তো মানুষের কিছুটা ভালোবাসা পাই। সুধু ভালোবাসাই নয় অসংখ সময় তিরস্কারও পাই, ধাক্কাও খাই, নমস্কারও পাই। এটার নামই জীবন। তা ছাড়া আমি মনে করি না আমি পারফেক্ট। কারণ পৃথিবীতে কেউই পারফেক্ট না। তবে কী ভাবে পারফেক্ট হওয়া যায় সেই চেষ্টা করছি।
বিভিন্ন সমালোচনার বিষয়ে শামীম ওসমান বলেন, আগে সিরিয়াস রাগ হতো। আজ থেকে ২০/২৫ বছর আগে রাগ হলে রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতাম। কিন্তু এখন রাগ হয় না। যারা অনুমান ভিত্তিক কথা বলে তাদের প্রতি করুণা হয়। আর করুণা হয় এই কারণে যে তারা না জেনে কথা বলে, নিজের অজান্তে কত বড় একটা পাপ কাজ করছে তার জন্য। অনুমান ভিত্তিক কথা বলার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে বলেছেন, তোমরা কী তোমার মৃত ভাইয়ের মাংস খেতে চাও। আর এটাকি তোমাদের জন্য ভালো? তবে কিছু সমালোচনা হয়তো সত্য আর সেটা জখন শুনি তখন নিজেকে সংসোধন করার চেষ্টা করি। আমি মনে করি প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে সঠিক সমালোচক থাকা দরকার। তা হলে আমরা সঠিক পথে থাকবো।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে জনগনদের প্রতি ঈদ শুভেচ্ছা ব্যাক্ত করে গনশাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষ্যাৎকারে শামীম ওসমান উপরোক্ত কথা গুলো বলেন।