এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে আবারও সোশ্যাল মিডিয়ায় বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়লেন পাকিস্তানের দুই সিনিয়র রাজনীতিক ইমরান খান ও মরিয়ম নওয়াজ। গত সপ্তাহে মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে কথার যুদ্ধে জড়ান তারা।
ডলারের বিপরীতে রুপির অবমূল্যায়ন নিয়ে বৃহস্পতিবার আবারও টুইটারে একে অপরকে রাজনৈতিকভাবে ‘আক্রমণ’ করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সিনিয়র সহ-সভাপতি মরিয়ম নওয়াজ।
জিও নিউজ জানিয়েছে, এদিন পিএমএল-এনের প্রধান সংগঠক মরিয়ম ফেডারেল সরকারের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের সমালোচনা করার জন্য খানকে আক্রমণ করেন। পিটিআই প্রধানকে তিনি বলেন, তার সরকারের তৈরি করা জঞ্জাল দূর করার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান সরকার।
এর আগে বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে গত বছরের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতা হারানো ইমরান খান বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) কামার জাভেদ বাজওয়া রিজাইম চেঞ্জের (ক্ষমতা পরিবর্তন) মাধ্যমে পাকিস্তানিদের উপর যে পুতুল সরকার চাপিয়ে দিয়ে গেছেন, পিডিএমের (পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট) নেতৃত্বাধীন সেই সরকার রুপির বারোটা বাজিয়েছে।
সরকারের এমন কর্মকাণ্ডের নিন্দা করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী টুইটারে বলেন, রুপিকে হত্যা করা হয়েছে। পিডিএম সরকারের ১১ মাসে রুপির মান হ্রাস পেয়ে ৬২ শতাংশ। এখন প্রতি ডলারের বিপরীতে রুপির মান দাঁড়িয়েছে ১১০। এর ফলে শুধু সরকারি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন রুপি। এ ছাড়া ৭৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি অর্থাৎ ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানিরা শাসন পরিবর্তনের ষড়যন্ত্রের চড়া মূল্য পরিশোধ করছে। এর মাধ্যমে সাবেক সেনাপ্রধান একগুচ্ছ অপরাধীকে জাতির উপর চাপিয়ে দিয়ে গেছেন।
ইমরানে খানের এমন স্পর্শকাতর বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় পিএমএল-এন নেত্রী তার দলের তিন বছরের ‘অযোগ্যতা’কে তিরস্কার করে তার দিকেই আঙুল তুলেছেন।
মরিয়ম টুইটে বলেছেন, যারা নির্মম লুণ্ঠন, অযোগ্যতা, ভুল অগ্রাধিকার, আইএমএফের সঙ্গে নিষ্ঠুর চুক্তি করার মাধ্যমে দেশকে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে নিমজ্জিত করেছে, তাদের মুখে সমালোচনা মানায় না। বরং তাদের তৈরি করা জগাখিচুড়িকে ঠিক করতেই বর্তমান সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কন্যা মরিয়ম খানকে বলেন, ‘সুতরাং, সাহেব বসে পড়ুন।’
পাকিস্তানের এই নারী রাজনীতিবিদ এখানেই থেমে থাকেননি, পিটিআই নেতাকে ‘সুবিধাবাদী এবং তার সুবিধাদাতা’দের সম্পর্কে সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, তারা (সুবিধাদাতা) তাকে (খান) ‘হ্যান্ডপিক’ (তুলে আনা) করেছিলেন এবং চার বছর তাকে খাইয়ে দিয়েছেন।
পিএমএল-এন নেত্রী আরও বলেন, বিচার বিভাগে এখনও তাদের রেখে যাওয়া প্রেতাত্মা রয়ে গেছে। তবে আবার একই সুবিধা নিতে দেওয়া হবে না।
মরিয়ম নওয়াজ বলেন, ‘ভবিষ্যতে এটা হতে দেব না ইনশাআল্লাহ।’