আগামী দু’দিনের মধ্যে আফগানিস্তানে তালেবানের সরকার ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইসলামি সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর নেতা শের আব্বাস স্তানিকজাই। বুধবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি পশতুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান। স্তানিকজাই কাতারে তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের উপ-প্রধান।
বিবিসিকে তিনি বলেন, আগামী দু’দিনের মধ্যে তালেবানের সরকার ঘোষণা করা হতে পারে— এটি হবে সবার অংশগ্রহণে ঐকমত্যের সরকার। এই সরকারের নিচু স্তরে নারীদের ভূমিকা থাকবে, তবে উচ্চ পর্যায়ে তাদের দেখা যাবে না।
শের আব্বাস স্তানিকজাই বলেন, গত দুই দশকে যারা সরকারে কাজ করেছেন, নতুন সরকারে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। তিনি বলেন, সম্প্রতি কাবুল বিমানবন্দরে যে বিশৃঙ্খলা হয়েছে সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের অব্যবস্থাপনা দায়ী এবং বিমানবন্দর মেরামতের জন্য বর্তমানে ৩ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন।
তালেবানের এই নেতা বলেন, আগামী দু’দিনের মধ্যে বিমানবন্দর পুনরায় কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রস্তুত হবে। এদিকে, একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি বলেছে, বুধবার টেকনিশিয়ানদের বহনকারী কাতারের একটি বিমান কাবুলে অবতরণ করেছে।
বিবিসির প্রধান আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি লিসে ডোসেট সঙ্গীদের নিয়ে মঙ্গলবার কাবুল বিমানবন্দর ঘুরে দেখেছেন। তারা ঘুরে যাওয়ার পরপরই এই বিমানবন্দরের পুরো নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান।
তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রশাসনিক শূন্যতা তৈরি হওয়ায় বিদেশি দাতাদের মানবিক সংকট মোকাবিলা নিয়ে তীব্র অনিশ্চয়তা এবং দুই দশকের যুদ্ধ শেষে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সৈন্যদের চলে যাওয়ার পর কাবুলের একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অচলাবস্থার কারণে তালেবানের শাসনে ভীত দেশ ছাড়তে মরিয়া হাজার হাজার আফগান এখন সীমান্তের দিকে ছুটছেন।
পাশাপাশি দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বিশৃঙ্খলার পর বুধবার শত শত মানুষের ভিড় দেখা গেছে ব্যাংক এবং বিভিন্ন খাবারের দোকানে। ২০ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে লাখো মানুষকে কাবুল থেকে সরিয়ে সোমবার মধ্যরাতে মার্কিন বাহিনীর চূড়ান্ত বিদায়ের পর দেশটির ব্যাংক, হাসপাতাল এবং সরকারি প্রশাসন সচল রাখার দিকে মনোনিবেশ করেছে ইসলামি সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান।
গত ১৪ আগস্ট আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতা তালেবানের দখলে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক বাহিনী এক লাখ ২৩ হাজারের বেশি মানুষকে কাবুল থেকে সরিয়ে নেয়। কিন্তু দেশটিতে এখনো লাখ লাখ আফগান তালেবানের প্রতিশোধমূলক হামলা বা নির্যাতনের ঝুঁকিতে আছেন।