বিশেষ প্রতিনিধি: স্বৈরাচার সরকার আওয়ামীলীগের আমলে ফতুল্লার আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে আতাঁত করে জমি দখল থেকে শুরু করে নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী। এজন্য তাকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল। গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার আওয়ামীলীগের পতন হওয়ার পরই যেন আরো বেপরোয়া দয়ে উঠেছে রিয়াদ চৌধুরী। জমি দখল, লুটপাট, চাঁদাবাজী, হাট-ঘাট দখল, ঝুট সেক্টর, চোরাই তেল সেক্টর, দখলবাজীসহ নানা অপকর্মে পড়িয়ে পড়েন। তার এসকল অপকর্মে অনেকটা বিব্রতকর পরিস্থিতি পড়েছেন জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা। সর্বশেষ গত বুধবার ফতুল্লার রেললাইন থেকে কাঠের পুল পর্যন্ত গার্মেন্টসের ওয়েস্টিজ দখল নিতে সন্ত্রাসী তান্ডব চালায় রিয়াদ চৌধুরীর বাহিনী। এসময় বেশ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠারে অগ্নিসংযোগ করে সন্ত্রাসীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার আওয়ামীলীগের পতনের পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লুটপাত চালায় রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী। একই সাথে ফতুল্লার বালুর ঘাট, পশুর হাট দখল করে নেন তিনি। ফতুল্লার আশিক টেক্সটাইল, রনী ডাইং, সিটি ডাইং, ফতুল্লা ফ্যাশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাঁদা দাবী করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। চাঁদা না দেওয়ায় রনী ডাইং ও ফতুল্লা ফ্যাশনে অগ্নিসংযোগ করেন তিনি। গত ৫ আগস্টের পর ফতুল্লার ঝুট সেক্টর দখল নিতে দফায় দফায় সন্ত্রাসী মহড়া দেন রিয়াদ। তারই অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার ফতুল্লার রেললাইন থেকে কাঠের পুল পর্যন্ত গার্মেন্টসের ওয়েস্টিজ মালামাল জোর করে নেয়ার চেষ্টা করে রিয়াদ চৌধুরী। রিয়াদ চৌধুরীর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে বুধবার ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা সন্ত্রাস বিরোধী শান্তির মিছিলের আয়োজন করেছিলেন। সেই মিছিলে স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ অংশগ্রহন করেছিলেন। তবে মিছিল শুরু হওয়ার এক মিনিটের মধ্যেই হামলা চালায় রিয়াদ চৌধুরীর বাহিনী। এতে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার বিকেলে ফততুল্লা ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাসহ স্থানীয় এলাকাবাসী মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শুরু হওয়া মাত্রই দলবল নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র এবং দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র হাতে মিছিলের দিকে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে রিয়াদ চৌধুরীর বাহিনী। এ সময় মিছিলকারীরা তাদের ওপর ইট পাটকেল ছুড়েলে দুপক্ষের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়।
গার্মেন্টস মালিকরা জানান, কিছু সন্ত্রাসী রিয়াদ চৌধুরীর কথা বলে জোর করে ওয়েস্টিজ মাল নিতে চায়। রিয়াদ চৌধুরী নিজেও ফোনে কথা বলেছেন। আমরা বলেছি এলাকার যারা আছে তাদের সাথে সমন্বয় করে মালামাল নিতে। কিন্তু তিনি জোর করেই নেয়ার চেষ্টা করছে। এদিকে, রিয়াদ চৌধুরীর এমন কান্ডে গার্মেন্টস মালিকরাও বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছেন। বিভিন্ন ভাবে তাদের হুমকি দিয়ে আসছে রিয়াদ বাহিনীর সদস্যরা।